আওয়ামী লীগ সরকারকে সরাতে হবে সরকারকে সরাতে হবে
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
শুক্রবার, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২২ ১০:৪৮ পূর্বাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
শুক্রবার, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২২ ১০:৪৮ পূর্বাহ্ণ
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
‘জনগণের আন্দোলনের মাধ্যমেই বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে সরাতে হবে। তাতে কোনো আলোচনার প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশের রিমান্ড মানে ধরে নেওয়া হয় শারীরিক নির্যাতন করা হবে ও মানসিক নিপীড়ন করা হবে। এভাবেই লেখক মুশতাককে শারীরিক-মানসিক নিপীড়ন করে মেরে ফেলা হয়েছে। এছাড়া আদালতকে একটা জবাবদিহিতার জায়গায় আনতে হবে।’
শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন আয়োজিত লেখক মুশতাক আহমেদ স্মরণে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা।
আলোচনায় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, এই সরকারকে আন্দোলনের মাধ্যমেই সরাতে হবে। অত্যাচার থেকে বাঁচতে এই সরকারকে অপসারণ করতে হবে সেটা দেশের সব মানুষ বুঝে। তবুও তারা কেন আন্দলন সংগ্রামে যাচ্ছেনা? আমরা সরকারকে সরিয়ে দিয়ে অন্তর্বতীকালীন সরকার করি কিংবা তত্বাবধায়ক সরকার বা যাই করি না কেন। এর মাধ্যমে যে নির্বাচন হয় এবং এর মাধ্যমে যে সরকার যায় তা পূর্ববর্তী পরিস্থিতি থেকে দেশকে আরো খারাপ দিকে নিয়ে যায়। এই পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতা থেকে শুধুমাত্র নির্বাচনের জন্য মানুষ নিজের জীবন দিবে বলে আমার মনে হয় না।
তিনি বলেন, ভোট যদি মানুষ দিতে পারে এবং তা গণনা হয় তাহলে দেখা যাবে এই সরকার এখন যে জায়গায় আছে তার ১০ শতাংশ আসনও তারা পাবেনা। ত্রিশটা আসন পাবে বলেও মনে হয় না। কিন্তু এর জন্য মানুষ জান দিয়ে দিবে, সেটাও তারা চায় না। মানুষ তখনই জান দিতে উদ্বুদ্ধ হবে, যখন মানুষকে তার জীবন তার ভবিষ্যৎ প্রজন্ম প্রকৃতি নিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য মুক্তির পথ দেখাতে হবে।
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, বাংলাদেশের রিমান্ড মানে ধরে নেওয়া হচ্ছে শারীরিক নির্যাতন করা হবে ও মানসিক নির্যাতন করা হবে। এভাবেই লেখক মুশতাককে শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে। শুধু মুশতাক একা নয়, এর আগেও অনেকে এভাবে হত্যা করা হয়েছে। বলা হল মুশতাকের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে কিশোরে জামিন হয়েছে। মুশতাকের মৃত্যু না হলে হয়তো কিশোরেরও এভাবে মৃত্যু হত। আপনি বলছেন, আইনের চোখে সবাই সমান। কিন্তু ৬ বার আবেদন করার পরও তাকে আপনি জামিন দিলেন না।
তিনি বলেন, আমাদের খাদ্য মন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির কারণে আমাদের কিছু করার নেই। আপনাদের কিছু করার না থাকলে কেন আপনারা এই মন্ত্রণালয় আছেন, কেন দায়িত্ব আপনি ছেড়ে দিচ্ছেন না। আজকে আমাদের বাহিনীগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে সন্ত্রাসী করছে। সরকারের পক্ষে কাজ করতে গিয়ে পুরো বাহিনীগুলোকে জনগণের বিপক্ষে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। তারা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে।
তিনি আরও বলেন, আগামী সোমবার বা রোববারে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করবেন। যেই হোক না কেন এটা আমরা জানি প্রধানমন্ত্রী দপ্তর বা তার দিক থেকে যে তালিকা ধরিয়ে দেওয়া হবে রাষ্ট্রপতি সেটাই ঘোষণা করবেন। এর বাইরে অন্য কোন কিছু যাবার কোনো সুযোগ নেই। আরেকটা হুদা মার্কা কমিশন তৈরি হবে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী বলেন, আজকের এই দিনে ২০২১ সালে মুশতাক আহমেদ কারাগারে নিহত হলেন। এটি একজন ব্যক্তির ক্ষেত্রে হলেও এটি আমাদের পুরো রাষ্ট্র তাকে উদাম করে দিয়েছে। মুশতাক আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা হল সঙ্গে আরও ১২ জনের নামে। আপনারা কার্টুনিস্ট কিশোরের কথাও জানেন। কিশোর যদি জামিন পায় তাহলে মুস্তাক কেন জামিন পেল না। আদালতকে একটা জবাবদিহিতার জায়গায় আনতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতায় একটি নির্বাচন করা সম্ভব না। তারা এখন নির্বাচন করবেন, তাদের মতো করে করবে। কখনো ১৪ সালের মতো করবেন কখনো ১৮ সালের মতো করবেন। তারা হয়তো ঠিক করবেন, আমাদের মত আমাদের সঙ্গে আসেন, একটি দুটি আসন নিয়ে যান। বাংলাদেশের অবস্থা এখন এমন যে দেশটা নাগরিকদের হবে নাকি একটি পরিবারের হবে। আমি মনে করি, আমাদের যে এক দফার আন্দোলন ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থার জন্য সরকার ফেলে দিতে হবে।
রাস্তা সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ হাসিবউদ্দিন হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক মহাসচিব নঈম জাহাঙ্গীর, জেএসডির কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, রাষ্ট্র সংস্কারের সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরানসহ অনেকে।