আগামীকাল থেকেই চালের দাম নিন্মমুখী দেখতে চাইঃ খাদ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
রবিবার, মার্চ ২০, ২০২২ ৫:৪৬ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
রবিবার, মার্চ ২০, ২০২২ ৫:৪৮ অপরাহ্ণ

ফকির শহিদুল ইসলাম, খুলনা
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন,দেশে পর্যাপ্ত ধান ও চাল উৎপাদন হয়। তারপরও চালের দাম বাড়ছে যা অত্যান্ত দু:খজনক। আগামীকাল থেকেই চালের দাম নিন্মমুখী দেখতে চাই। এসময় চালের বাজার নিন্মমুখী রাখতে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা চান তিনি।
রোববার (২০ মার্চ) জেলা প্রশাসনের আয়োজনে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের সম্মেলনক্ষে অবৈধ মজুতদারি রোধে করণীয় ও বাজার তদারকি সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এই মুহূর্তে দেশে চালের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। তারপরও ধাপেধাপে চালের দাম বাড়ছে, যা কাঙ্খিত নয়। এর কারণ খতিয়ে দেখতে আমরা মাঠ পর্যায়ের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। মাঠ পর্যায়ের সঠিক তথ্য আমাদের পরিকল্পনা গ্রহণে কাজে লাগবে।
দেশের বাজারে চালের অভাব নেই। কিন্তু দাম কেন বাড়ছে তা খতিয়ে দেখার নির্দেশনা দিয়ে খাদ্য কর্মকর্তাদের উদ্দেশে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, মিলের স্টক ভেরিফিকেশন করতে হবে, কতটুকু ক্র্যাসিং হল, কতটুকু সরবরাহ হল তা প্রতিদিন নিয়মিত রিপোর্ট করতে হবে।
খাদ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রমজান মাসে চালের দাম বাড়ানো যাবে না। কাল থেকে ধাপেধাপে কমাতে হবে। তাছাড়া চালের বস্তায় ধানের জাত ও উৎপাদনের তারিখ উল্লেখ করতে হবে। তার গাইড লাইন আমরা দ্রুত পাঠিয়ে দিব। কেউ অবৈধভাবে চাল মজুত করে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক জানান, নিবিড়ভাবে বাজার পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আগামীতেও নিয়মিত বাজার পর্যবেক্ষণ করা হবে। যারা অবৈধ কারসাজি ও মজুতদারির মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট তৈরি ও মূল্য বৃদ্ধি করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চালকল মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ বলেন, এখন আর চালের দাম বাড়ার কোনো সুযোগ নেই। আগামী এক মাসের মধ্যে কিছু জায়গায় ধান কাটা শুরু হয়ে যাবে। সেই ধান বাজারে আসার পরপরই চালের দাম অনেকটা কমে আসবে। এ ছাড়া আগামীকাল থেকেই চালের দাম কমানো হবে। তিনি বলেন ৫০ কেজির সরু চালের বস্তায় দাম ১০০ টাকা কমানো হবে।
এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বলেন, চাল ও ধানের পর্যাপ্ত মজুত থাকার পরও মজুতদার ও আড়তদাররা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বৃদ্ধি করে। তারা সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলার চেষ্টা করে। চালের দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। মিল মালিকদের কারসাজি ও মজুতদারির কারণে চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. সাইদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাজমানারা খানুম, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাখাওয়াত হোসেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহ জেলার জেলা প্রশাসক, খুলনা বিভাগের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ মাহবুবুর রহমান,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুষ্টিয়া সদর সার্কেল) মো. আতিকুল ইসলাম, মিলার, আড়তদার, খুলনা বিভাগের সব জেলার খাদ্য খাদ্য নিয়ন্ত্রক, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও গণমাধ্যম প্রতিনিধিগণ।
এর আগে মন্ত্রী কুষ্টিয়ার খাজানগরে ফ্রেস এগ্রো লি.,রশিদ এগ্রো ফুড লি. ও দেশ এগ্রো লি. এ আকস্মিক পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে উল্লেখিত মিলগুলোতে অবৈধ মজুত দেখতে পান। অবৈধভাবে মজুদকৃত চাল দ্রুত বাজারজাত করার জন্য মিলমালিকদের নিদর্শেনা দেন তিনি। এছাড়াও মন্ত্রী অবৈধ মজুতদারি রোধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দেন।
স্বাধীন খবর ডটকম/আ আ
