আজকে দেশে অর্থনৈতিক সাম্যের পরিবর্তে বৈষম্য প্রকট : মোশাররফ
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
রবিবার, জুলাই ১৭, ২০২২ ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
রবিবার, জুলাই ১৭, ২০২২ ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রধানমন্ত্রীর উচিত স্বেচ্ছায় মিউজিয়ামে যাওয়া এমন মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী একসময় বলেছিলেন যে লোডশেডিংকে আমরা মিউজিয়ামে পাঠিয়ে দিয়েছি, তাহলে এখন আবার কেন লোডশেডিং আসছে? তাই প্রধানমন্ত্রীর স্বেচ্ছায় মিউজিয়ামে যাওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
রবিবার (১৭ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রয়াত অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মাহফিলের আয়োজন করে স্বাধীনতা ফোরাম।
মোশাররফ বলেন, আজকে দেশে অর্থনৈতিক সাম্যের পরিবর্তে বৈষম্য প্রকট। স্বাধীন অর্থনীতি নেই। দেশের অর্থনীতি আজ বিপর্যয়ের মুখে। আজকে যারা ক্ষমতায় রয়েছে তারা অবৈধভাবে এবং জনগণের ভোট ছাড়াই এসেছে। জনগণের টাকা লুটে বিদেশে পাচার করছে। আজকে বিদ্যুৎ খাতে কুইক রেন্টালের নামে অসংখ্য টাকা লুটে নিচ্ছে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। এরইমধ্যে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ পাশ করা হয়েছে। যাতে কেউ অন্যায় করলেও পার পেয়ে যায়।
তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশের অর্থনীতি শ্রীলংকার চেয়ে কোনো অংশে ভালো নয়। সরকার দেশে মেগা প্রজেক্টের নামে বড় বড় প্রকল্পে মেগা লুটপাট করছে। আজকে তারা রিজার্ভ থেকে ঋণ নিয়ে দেশ চালাচ্ছে। অথচ রিজার্ভ থেকে কোনো ভাবেই ঋণ নেয়ার নিয়ম নেই। এই প্রধানমন্ত্রী এক সময় বলেছিল লোডশেডিংকে মিউজিয়ামে পাঠিয়ে দিয়েছি, আজকে জনগণের ওপর আবারো লোডশেডিং আসলো কিভাবে প্রধানমন্ত্রীর উচিত স্বেচ্ছায় মিউজিয়ামে যাওয়া।
বিএনপি আগামীতে সরকার গঠন করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন,দেশের মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা। তবে সরকারের দ্বারা কখনোই সেটা সম্ভব না। সরকার ইভিএম ব্যবহার করে আবারো জনগণের ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় থাকতে চায়। তবে সেটা এবার সম্ভব নয়। কারণ বিএনপিই দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তণ করেছে। আজকে দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল থাকলে দেশের পরিস্থিতি এমন হতো না। পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিদেশে গিয়ে লবিং করা লাগতো না। বিএনপি গণতান্ত্রিক দল। সত্যিকারের নির্বাচন হলে বিএনপি নির্বাচনে যাবে। আওয়ামী লীগ দিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে না। এদেরকে হটিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে। আজকে বহির্বিশ্বে তাদেরকে হাইব্রিড সরকার হিসেবে পরিচিত দিয়েছে। তাদেরকে সরাতে আমাদের দরকার ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তোলা।
মোশাররফ বলেন, আজকে অনেক বুদ্ধিজীবী সত্যিকারের কথা বলতে পারেনা। দেশে শ্রীলংকার চেয়েও খারাপ অবস্থা। বাকি শুধু রাজপথে নামতে। অতীতে আইয়ুব খানের পতন হয়েছে, স্বৈরাচার এরশাদের পতন হয়েছে। ইনশাআল্লাহ সফল গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে এই স্বৈরাচার সরকারকে হটিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করবো।
তিনি বলেন, এমাজউদ্দীন কে হারিয়ে আমরা জাতীয়তাবাদী শক্তি একজন অভিভাবক হারিয়েছি। বিএনপি হারিয়েছে একজন সুপরামর্শদাতাকে। অধ্যাপক এমাজউদ্দীন শুধু শিক্ষকই ছিলেন না। তার চিন্তা ও দর্শন তিনি তার অসংখ্য বইয়ের মধ্যে রেখে গেছেন। শুধু রাষ্ট্র বিজ্ঞানের বই লেখেননি। অন্যান্য বিষয়েও তিনি লিখেছেন। তার জ্ঞানের পরিধি ছিলো বিশাল। তার পরামর্শ ছিলো অমূল্য এবং ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন। যা বিরল। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে এতো বই লিখেছেন যা আমাদের মধ্যে সচরাচর হয়না। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিকভাবে ব্যাপক ভুমিকা রেখেছেন।
তিনি বলেন, মরহুম এমাজউদ্দীন আহমদের জীবন শিক্ষা ও গবেষণার মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও জনগণের পক্ষে। তিনি দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরিতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। বিএনপি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য যত অনশন করেছে তখনই তিনি পানি খাইয়ে অনশন ভাঙাতেন। তিনি যে আদর্শ ও দর্শন নিয়ে কাজ করতেন আজ তিনি বেঁচে থাকলে সেই চেতনা তিনি সাহসের সাথে তুলে ধরতেন এবং মুখ খুলতেন।
আয়োজক সংগঠন স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে ও ইশতিয়াক আহমেদ বাবুলের পরিচালনায় সভায় বক্তব্য দেন─ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে অধ্যাপক ড. দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন, ছেলে জিয়া আহমেদ, তাঁতী দলের কাজী মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।
স্বাধীন খবর ডটকম/আ আ
