এই সরকার ‘কোটিপতিদের সরকার’ : নজুরল ইসলাম খান
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২২ ৯:১১ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২২ ৯:১১ অপরাহ্ণ

শেখ হাসিনা সরকারকে ‘কোটিপতিদের সরকার’ আখ্যা দিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘আপনি (প্রধানমন্ত্রী) খাবার দিতে পারবেন না, আপনি চাকরি দিতে পারবেন না। মানুষ তার কষ্টের প্রতিবাদ জানালে গুলি করে মেরে ফেলবেন। আর বলছেন, আমরা জনগণের সরকার। না, আপনারা জনগণের সরকার নন। আপনারা কয়েক হাজার নতুন কোটিপতিদের সরকার, আপনারা চার কোটি নতুন দরিদ্র মানুষের সরকার নন। আমরা ওই চার কোটি দরিদ্র মানুষের কথা বলছি এবং তাদেরকে সাথে নিয়েই আমরা লড়ছি।’
বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলায় এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। মহানগর উত্তর ৮ জোনের উদ্যোগে জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ সারাদেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের হত্যা ও হামলার প্রতিবাদে এই সমাবেশ হয়।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আন্দোলন করতে গিয়ে আমার ভাই নূরে আলম, আব্দুর রহিম, নারায়নগঞ্জের শাওন, গতকাল মারা গেলো মুন্সিগঞ্জের আরেক ভাই শাওন, যশোরে আন্দোলনে তাদের আক্রমণে আহত হয়ে আব্দুল আলিম গত কয়েক দিন আগে মারা গেছে।’
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘জিনিসপত্রের দাম এতোই বেড়েছে যে, বাংলাদেশে যারা হালাল উপার্জন করে তাদের আর চলার অবস্থা নাই, তাদের সন্তানদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, তাদের ছেলে-মেয়ের মুখে খাবার দিতে পারে না। রোগের চিকিৎসা করাতে পারে না। কারণ ঔষধের দামও বাড়িয়ে দিয়েছে।’
‘এর প্রতিবাদে আন্দোলন-সংগ্রামে যখন মানুষ রাস্তায় নামছে পুলিশ গুলি করছে। আমাদের সহকর্মীদের খুন করা হচ্ছে। তাতে কি বিএনপির জনসভা বা আন্দোলনে লোক কম হচ্ছে? কমে নাই। এটাই আন্দোলনের ইতিহাস। জোর-জবরদস্তি করে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না। আপনারাও পারবেন না।’
তিনি বলেন, ‘মিছিমিছি জনগণের প্রতিপক্ষ হয়ে ঘৃণিত হবেন না। একবার তো ক্ষমতাচ্যুত হয়ে একুশ বছর ধর ক্ষমতায় আসতে পারেন নাই। আজকে যে অত্যাচার-নিপীডন-নির্যাতন করতেছেন এগুলো যদি বন্ধ না করেন তাহলে এবার ক্ষমতাচ্যুত হলে আর কত ২১ বছর লাঘবে আল্লাহ-ই জানে।’
‘আমরা গণতান্ত্রিক দল হিসেবে বলতে চাই, আমরা সবাইকে নিয়ে নির্বাচন করতে চাই। জনগণ ঠিক করবে কে ভালো-কে মন্দ, কাকে দায়িত্ব দেয়া যায় আর কাকে দেয়া যায় না। আপনারা এই সুযোগটা গ্রহণ করুন। ভুল করবেন না।’
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আপনারা ভয় পেয়ে আমাদেরকে গুলি করছেন, মানুষকে গুলি করছেন। কিন্তু লাভ আছে? ’৬৯ এ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুজ্জোহা আর ক্যান্টমেন্টে সার্জেন্ট জহুরুল হককে মেরে ফেলা হয়েছিল। আইয়ুব খান টিকতে পারছে? পারে নাই। নব্বইযের গণঅভ্যুত্থানে আমান উল্লাহ আমান, খোকন, নাজিমউদ্দিন আলমরা করেছে.. এরশাদ টিকতে পারছে? পারে নাই। আপনারাও পারবেন না। এটাই ইতিহাস।’
‘আমি সকলকে আশ্বস্ত করতে চাই, আগামী দিনে যে লড়াই, সেই লড়াইয়ে অবশ্যই অবশ্যই আমরা বিজয়ী হবো, ইনশাল্লাহ! বরাবরই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে জনগণ আমাদের পাশে ছিল, এবারও থাকবে। রাজপথের আন্দেোলনের জন্য আপনারা প্রস্তুত নিন। আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন, ফয়সালা হবে রাজপথে।’
এ সময় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল বলেন, ‘সরকারকে বলি, আপনারা হামলা করে আমাদের হাড্ডি ভাঙ্গতে পারেন, আমাদের মনোবল ভাঙ্গতে পারবেন না। আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। গণতন্ত্র মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবেই।’
সমাবেশে ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতি, সদস্য সচিব আমিনুল হক ও যুগ্ম আহ্বায়ক এবিএম রাজ্জাক সঞ্চালনা করেন। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, আতাউর রহমান ঢালী, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, বিলকিস জাহান শিরিন, নাজিম উদ্দিন আলম, সেলিম রেজা হাবিব, মীর সরাফত আলী সপু, সাইফুল আলম নিরব, শামীমুর রহমান শামীম, নিলোফার চৌধুরী মনি, কাজী রওনাকুল ইসলামি টিপু, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, এসএম জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন।
আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর উত্তর শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসেইন, মহিলা দলের ফরিদা ইয়াসমিন, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, স্বেচ্ছাসেবক দলের রফিকুল ইসলাম, মহানগর উত্তরের মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, আতিকুল ইসলাম মতিন, আখতার হোসেন প্রমুখ।
স্বাধীন খবর ডটকম/আ আ
