• আজ সন্ধ্যা ৭:৩০, রবিবার, ১৬ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি
  • shadinkhobor24@gmail.com
  • ঢাকা, বাংলাদেশ

কী ইস্যুতে ‘চটেছে’ ছাত্রদল-ছাত্রলীগ?

নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ: মঙ্গলবার, মে ২৪, ২০২২ ১২:২১ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ: মঙ্গলবার, মে ২৪, ২০২২ ১২:২৩ অপরাহ্ণ

 

ঢাবি প্রতিনিধি

হঠাৎ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠ। পদ্মাসেতু নিয়ে কথা বলার সময় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের দলীয় নেতারা মাঠ গরম করে বক্তব্য দিচ্ছেন। সরকারপ্রধানের বক্তব্যের সমালোচনা করে বিষয়টি নিয়ে কড়া বক্তব্য দেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল। তার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি করা হয়েছে দাবি করে চটেছে ছাত্রলীগ। সেজন্য ছাত্রদলের শীর্ষ নেতাকে ক্ষমা চাইতে বলেছে ছাত্রলীগ। এছাড়া ছাত্রদলকে রাজপথে মোকাবিলা করারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

ছাত্রলীগের এমন ঘোষণার পর থেকেই পরিস্থিতি অনেকটা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এরপর থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্বিঘ্নে কর্মসূচি পালন করে আসা ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। একাধিক প্রতিষ্ঠান ও জেলায় হামলার মুখেও পড়তে হয়েছে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের।

জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ হচ্ছে বলে কয়েক বছর আগে বক্তব্য বলেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, যা নিয়ে তখন আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। জোড়াতালির সেতুতে উঠলে তা ভেঙে যেতে পারে বলে বক্তব্য দিয়েছিলেন বিএনপি প্রধান।

সম্প্রতি দলীয় এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খালেদা জিয়ার সেই বক্তব্য টেনে আনেন৷ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়া বলেছিল, ‘জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানাচ্ছে, ওখানে চড়া যাবে না, চড়লে ভেঙে পড়বে।’ পদ্মা সেতুতে নিয়ে গিয়ে ওখান থেকে (খালেদা জিয়াকে) টুস করে নদীতে ফেলে দেওয়া উচিত। ‘

প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্য নিয়ে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এই বক্তব্যের প্রতিবাদে কর্মসূচিও পালন করে দলটির নেতাকর্মীরা। রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য ‘রীতিমত এটেম্ট টু মার্ডার’। প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের প্রতিবাদে গত রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে প্রতিবাদ সমাবেশ করে ছাত্রদল৷

সমাবেশে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ বলেন, ‘শেখ হাসিনা আমাদের হৃদয়ে আঘাত করেছেন৷ আমাদের আদর্শিক মাকে নিয়ে তিনি কটূক্তি করেছেন৷ তাই আমরা উত্তপ্ত৷ আমাদের আবেগ, আমাদের আদর্শিক মা খালেদা জিয়াকে নিয়ে কটূক্তি করার চেষ্টা করবেন না৷ সৎ সাহস থাকলে পারলে ছাত্রদলকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করুন৷’

ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদকের ওই বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদককে বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান। ক্ষমা না চাইলে তাকে ‘উপযুক্ত জবাব’ দেওয়ার ঘোষণা দেন তারা। এরপরই সোমবার সন্ধ্যায় টিএসসিতে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

একইদিনে সিলেট আলিয়া মাদরাসা এলাকায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে সাংবাদিকও আহত হয়েছেন। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার পটুয়াখালীতে ছাত্রদল ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে এক স্কুলছাত্র আহত হয়। আশপাশের বেশ কয়েকটি বাসা বাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়। সবশেষ ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয়ে মঙ্গলবার সকালে দুই দফায় ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ছাত্রদলের অন্তত ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

সংঘর্ষের পর এখন ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যদিও ছাত্রলীগ বলছে, এ হামলা ‘প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ’। দেশি অস্ত্র নিয়ে ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা ক্যাম্পাসে ঢোকার চেষ্টা করায় তাদের প্রতিহত করেছে ছাত্রলীগ।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আমাদের প্রিয় নেত্রীকে নিয়ে ছাত্রদলের যে বা যারা অশালীন ভাষায় বক্তব্য দিয়েছে তাদের ব্যাপারে কোনো আপস করার সুযোগ নেই। কারণ ছাত্রদল নামধারী অছাত্ররা আমাদের অনুভূতির জায়গায় আঘাত করেছে। এদের যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করা হবে।’

এদিকে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা বলছেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। যতই হামলা হোক তারা ক্যাম্পাসমুখী থাকবেন।

 
 
স্বাধীন খবর ডটকম/আ আ
 

জনপ্রিয় সংবাদ

 

সর্বোচ্চ পঠিত সংবাদ