খুলনায় কৃষি জমি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার যথার্থ বাস্তবায়নে জনউদ্যোগর সংবাদ সম্মেলনে
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
শনিবার, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২২ ৯:৫৯ পূর্বাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
শনিবার, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২২ ৯:৫৯ পূর্বাহ্ণ
ফকির শহিদুল ইসলাম,খুলনা
কৃষি জমি কোনভাবেই অকৃষি কাজে ব্যবহার করা যাবে না”-মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন ক্ষেত্রে বহুবার এ ঘোষণা প্রদান করেছেন। এতসব ঘোষণা স্বত্বেও অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, যততত্র বসতভিটা নির্মাণ, অপরিকল্পিত অবকাঠামো উন্নয়ন ক্রমাগতভাবে চলছে। আমরা চাই কৃষি জমি নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার বাস্তবায়ন। ভূমি রক্ষায় নেই রাষ্ট্রের সমন্বিত কোন পরিকল্পনা। অপরিকল্পিতভাবে চলছে জমির ব্যবহার। যেখানে সেখানে হচ্ছে বাড়ি। নির্মাণ করা হচ্ছে শিল্পপ্রতিষ্ঠান, রাস্তা, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার দোকানসহ বিভিন্ন রকমের স্থাপনা। গ্রামের কৃষি জমি দ্রুত অকৃষি খাতে যাচ্ছে। সংরক্ষিত ভূমি বলতে কিছু নেই। তবে জলাধার, বন, পাড়ার রক্ষায় আইন ও নীতিমালা থাকলেও সরকারের মনিটরিংয়ের অভাবে এর তোয়াক্কা করছেন না কেউ। ভূমিদস্যুদের কাছে এসব আইন ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা অসহায়!-জনউদ্যোগ,খুলনার সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বক্তারা এসব কথা বলেন।
আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২ ঘটিকায় জনউদ্যোগ,খুলনার উদ্যোগে কনসেন্স মিলনায়তনে“ কৃষি জমি সুরক্ষার অন্তরায় অপরিকল্পিত শিল্পায়ন ও শহরায়ণ, বাড়ছে খাদ্য সংকট ও পরিবেশের ঝুঁকি” বিষয়ক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার সমন্বয়কারি এ্যাড: মোমিনুল ইসলাম। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব এ্যাড: বাবুল হাওলাদার, খুলনা পোল্ট্রি ফিস ফিড শিল্প মালিক সমিতির মহাসচিব এস এম সোহরাব হোসেন, কনসেন্স এর নির্বাহি পরিচালক সেলিম বুলবুল, খুলনা আর্ট স্কুলের পরিচালক বিধান চন্দ্র রায়, খুলনা জনউদ্যোগ,খুলনার সদস্য সচিব মহেন্দ্রনাথ সেন, জনউদ্যোগ যুব সেলের আহবায়ক রিপন কুমার বিশ্বাস প্রমুখ।
বক্তারা লিখিত বক্তব্যে বলেন, খুলনা শহরে আশঙ্কাজনক হারে নগরায়ন হচ্ছে। ঢাকায় গড়ে প্রতি বছর ৮ শতাংশ হারে নগরায়ন হচ্ছে, যে হার খুলনায় প্রায় ৫ শতাংশ। নতুন গড়ে ওঠা এসব বসতি কেড়ে নিয়েছে কৃষি জমি ও জলাভূমি। নগরায়নের এই প্রক্রিয়ায় খুলনায় হারিয়েছে প্রায় ৪২ বর্গ কিমি কৃষি জমি ও প্রায় ৫ বর্গ কিমি জলাশয়। শহরের বাইরে অপরিকল্পিভাবে দ্রুতগতিতে নতুন বসতি গড়ে উঠছে। এখানে সুপেয় পানি, পয়ঃনিষ্কাশন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং সড়ক যোগাযোগের মতো গুরুত্ব¡পূর্ণ নাগরিক সেবার অপ্রতুলতা রয়েছে। শহরের প্রান্তিক এলাকাগুলোতে উন্নয়নের ছোঁয়া তেমন একটা লাগেনি। এর ফলে শহরের ভেতরের ইতোমধ্যে ঘনবসতিপূর্ণ প্রায় ৭০ শতাংশ মহল্লা আরও ঘিঞ্জি হয়ে উঠছে। খুলনায় অবৈধভাবে চলছে আবাসিক প্রকল্পের ব্যবসা। এতে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)। জানা যায়, বেসরকারি আবাসিক প্রকল্পের উদ্যোক্তা হিসেবে নগরীতে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করছেন ৬৫ ব্যবসায়ী। রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ অমান্য করেই এসব ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে। অথচ আইন লঙ্ঘনকারীর জন্য জেল ও জরিমানার বিধান থাকলেও খুলনায় এখনও তা দৃশ্যমান হয়নি।
লিখিত বক্তব্যে বক্তারা, দুই/তিন ফসলি জমি রক্ষা এবং জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত , অধিগ্রহণ প্রস্তাবে কৃষি জমি বিশেষভাবে ফসলি জমি অন্তভূক্ত না করা, নদী, খাল, বিল, জলাশয়, পুকুর ইত্যাদি থাকলে উহার শ্রেণী অক্ষুন্ন রাখা, জলাধার সংরক্ষণ আইন, ২০০০ যথাযথভাবে অনুসরণ করা, যদি কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আবাদী জমি ক্রয় করে আবাসনের জন্য প্লট তৈরী করে না পারে এবং কেডিএ’র করা তালিকা অনুযায়ী ৬৫টি বেসরকারি আবাসিক প্রকল্পের ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।