গুম, হত্যা নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগ আমলে নিন: সরকারকে এইচআরডব্লিউ
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
শুক্রবার, মার্চ ১৮, ২০২২ ৯:৩৭ পূর্বাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
শুক্রবার, মার্চ ১৮, ২০২২ ৯:৩৭ পূর্বাহ্ণ

ডেস্ক নিউজ
বাংলাদেশে চরম আকারে সংঘটিত নির্যাতন, গুম এবং বিচারবর্হিভূত হত্যাকান্ড জাতিসংঘের যে উদ্বেগ রয়েছে তাতে কার্যকর সাড়া দেয়া উচিত সরকারের।
বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ সরকারকে এই আহবান জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, “গুরুতর মানবাধিকার লংঘনের দায়ে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এর ওপর ইতিমধ্যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।র্যাবকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন থেকেও বাদ দেয়া উচিত।”
এর আগে গত ১৪ মার্চ এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবার ও মানবাধিকার কর্মীদের বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে প্রতিশোধমূলক কর্মকান্ড বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
৩ মার্চ জাতিসংঘ কার্যালয়ের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার “কনভেনশন এগেইনস্ট টর্চার” নীতির আলোকে যে সকল নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছিল তার জবাব দিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহবান জানান। অথচ বিগত ২ বছর ধরে সরকার বিষয়টিকে আমলেই নিচ্ছেনা।ঐদিনই জাতিসংঘ মহাসচিব আন্থোনিও গুতেরেসের সঙ্গে সাক্ষাতকালে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে উচ্চ পর্যায়ে যেন বাংলাদেশিদের নিয়োগ দেয়া হয় সে অনুরোধ করেন।
এইচআরডব্লিউ এর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক পরিচালক ব্রাড এডামস বলেন, “বাংলাদেশ সরকার একদিকে চাইছে জাতিসংঘে তাদের অংশগ্রহণ আরো বাড়াতে অথচ অন্যদিকে তারা আইনশৃঙ্খলাবাহিনী কর্তৃক মানবাধিকার লংঘনে জাতিসংঘ যা তদন্ত করতে চাচ্ছে তা এড়িয়ে যাচ্ছে।”
অনিয়মের এসব অভিযোগ এড়িয়ে এবং কোন ধরনের স্বচ্ছতা নিশ্চিতে ব্যর্থ হয়ে বাংলাদেশ সরকার মূলত জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে তাদের অংশগ্রহণের জায়গাটুকু বিশৃঙ্খল করে দিচ্ছে বলে উল্লেখ করেন এডামস।
জাতিসংঘের নির্যাতন বিষয়ক কমিটি ২০১৯ সালের জুলাই মাসে তাদের বাংলাদেশ বিষয়ক রিভিউয়ে মন্তব্য করে যে, “বাংলাদেশে পুলিশ এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা সুরক্ষা নিয়ে এবং কোন ধরনের জবাবদিহিতা ছাড়াই তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাবার সুযোগ পেয়েছিল।”
যেসমস্ত সদস্যরা র্যাবে দায়িত্ব পালন করেছে তাদেরকে অনবরত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে মোতায়েন করা হচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করছে মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলো।
বিবৃতিতে বাংলাদেশ সরকারের সমালোচনা করে বলা হয়, “মানবাধিকার নিয়ে জাতিসংঘের যে উদ্বেগ তা আমলে না নেবার একটা বদঅভ্যাস বাংলাদেশ সরকারের রয়েছে। ২০১৩ এবং ২০২০ সালে জাতিসংঘের গুম বিষয়ক কমিটির বাংলাদেশ সফরের বারবার অনুরোধ স্বত্তেও তাতে সাড়া দেয়নি দেশটির সরকার।”
এতে বলা হয়, বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তথ্যনুসারে ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় বসার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০০ লোক গুম হয়েছে। এদের মধ্যে কিছু লোক পরে ছেড়ে দেয়া হয় বা কয়েক সপ্তাহ কিংবা মাস গোপনে বন্দি রেখে তাদের আদালতে তোলা হয়। অন্যদেরকে বিচারবর্হিভূত হত্যার শিকার হতে হয় যেটাকে বন্দুক যুদ্ধ বলে চালিয়ে দেয়া হয়।
এরকম গুম হওয়া ৮৬ টি ঘটনার তথ্য এইচআরডব্লিউ এর কাছে রয়েছে।
এডামস বলেন, “যেসকল অফিসারদের বিপক্ষে মানবাধিকার লংঘনের বিশ্বাসযোগ্য তথ্য রয়েছে তাদেরকে শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োগ দিয়ে বাংলাদেশ সরকার মিশনপ্রক্রিয়াটিকেই ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে।”
স্বাধীন খবর ডটকম/আ আ
