গোলাপগঞ্জের ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নে বিজিএফ’র চাল নিয়ে চালবাজী
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
বৃহস্পতিবার, জুলাই ১৪, ২০২২ ৭:৫৭ পূর্বাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
বৃহস্পতিবার, জুলাই ১৪, ২০২২ ৭:৫৭ পূর্বাহ্ণ
গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি: ঈদুল আজহার আগে গরীব অসহায়দের মধ্যে বিতরণের জন্য ভিজিএফ’র চাল পাওয়া গেছে ইউপি সচিবের পাশের রুমে। বিষয়টি জানাজানি হলে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন ইউএনও। তিনি ৩০/৪০ বস্তা চাল সেখানে দেখার পর চালগুলো বিতরণের নির্দেশ দিয়ে দায় সারেন। চালবাজীর চাল নিয়ে সৃষ্ট এই ঘটনার পর এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। যদিও ইউপি সদস্যরা বলছেন-সব চাল ঈদের পূর্বে সকল ওয়ার্ডে বিতরণ করা হয়েছে। তাহলে প্রশ্ন এই চালগুলো উৎস কি ? যার উত্তর পাওয়া যায় নি ঘটনায় জড়িতদের কাছ থেকে। ঘটনাটি প্রকাশ ঘটে গতকাল বুধবার (১৩ জুলাই) উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নে।
জানাগেছে, ঈদের পূর্বের দিন উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুর রহিম ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোস্তাফিজুর রবের পাশের রুমে প্রায় ৩০/৪০ রস্তা চাল দেখতে পান। সে সময় সেখান থাকা সচিব ও গ্রাম পুলিশকে চালগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে সচিব ও গ্রাম পুলিশ জানান ‘এই চালগুলো ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফখরুল ইসলাম ফখরের।’
সত্যতা জানার জন্য ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম এসময় অপর ইউপি সদস্য ফখরুল ইসলামকে ফোন দিলে তিনি তা অস্বীকার করেন। পরে ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম ওই রুমে একটি তালা মেরে দেন।
এরপর মঙ্গলবার (১২ জুলাই) রাতে খবরটি এলাকায় জানাজানি হয়ে গেলে এলাকাবাসী এই চালের ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করেন। বুধবার (১৩জুলাই) সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী মান্নান সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি রুমে চালগুলো দেখতে পান। এরপর তিনি চালগুলো কেন রাখা হলো সে বিষয়ে ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম আব্দুর রহিমের কাছে জানতে চান।
এসময় আব্দুর রহিম জানান, ‘এই চালগুলো বন্টনের বাকি ছিল। ঈদের আগে সময়ের অভাবে বন্টন করা সম্ভব হয়নি।’ এরপর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী মান্নান এগুলো বন্টনের নির্দেশ দেন।
এ ব্যাপারে ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ফখরুল ইসলাম ফখর জানান, ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে ভিজিএফ’র কিছু চাল রাখা ছিল। এ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুর রহিম চালগুলো দেখতে পেরে সেখান থাকা সচিব ও গ্রাম পুলিশকে কারণ জানতে চাইলে তারা চালগুলো আমার বলে চালিয়ে দেয়। বিষয়টা জেনে আমি হতবাক হয়েছি। আসলে আমিতো ঈদের আগে ভিজিএফের চাল বন্টন করে দিয়েছি। আমার ওয়ার্ডের অনেক লোক খালি হাতে ফিরে গেছে। আমার মনে হয় ঐ চালের পিছনে কোন কু-মতলব আছে।
ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম জানান, ভিজিএফের চাল আমরা সকল সদস্যরা ঈদের পূর্বে বিতরণ করেছি। অনেক সদস্যদের ফোন করে জানলাম কারো চাল ইউনিয়ন পরিষদে রাখা হয়ন্ িসব বিতরণ করা হয়েছে। সচিব বলেন ৬ নং ওয়ার্ড সদস্য ফখরুল ইসলাম ফখরের। অথচ তিনি জানেন না। তাই ইউনিয়ন পরিষদের চাল রাখা রুমটি তালা মেরেছিলাম। এটা আজ ইউএনও’র সরেজমিনে এসে বন্টনের নির্দেশ দিয়েছেন।
চাল গোদাম ঘরে না রেখে কেনো অন্য রুমে রাখা হলো এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম আব্দুর জানান, কিছু চাল বন্টনের বাকি ছিল। এজন্য এ চালগুলো এই রুমে রাখা হয়েছিল। সব ইউপি সদস্য চাল বন্টন করে ফেলেছে-তাহলে এগুলো কার কোথা থেকে এলো? এমন প্রশ্ন করলে তিনি এর জবাব দিতে পারেননি।
এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী মান্নান সাংবাদিকদের জানান, আমি সরেজমিনে গিয়ে একটি রুমে চাল রাখার প্রমাণ পেয়েছি। এরপর চেয়ারম্যানকে এব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। উনি চালগুলো বন্টন না হওয়ায় রাখা হয়েছে বলে জানান। এরপর আমি চালগুলো বন্টনের নির্দেশ প্রদান করি।