গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি : গোলাপগঞ্জের ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সচিব এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী মান্নান ফিরিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল রোববার (১৭ জুলাই) দুপুরে ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের সদস্যবৃন্দ ঢাকাদক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান এসএম আব্দুর রহিম ও সচিব মোস্তফিজুর রব এর বিভিন্ন অনিয়ম, অনাচার ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী মান্নানের কাছে নিয়ে গেলে তিনি ফিরিয়ে দেন বলে জানান ভোক্তভুগী ইউপি সদস্যবৃন্দ।

রোববার বিকেলে ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের ভোক্তভুগী ইউপি সদস্যবৃন্দ সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য জানান।

অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়, ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসএম আব্দুর রহিম দীর্ঘদিন যাবত ইউনিয়ন পরিষদে নানা অনিয়ম, অনাচার ও স্বেচ্ছাচারিতা করে আসছেন। বর্তমান পরিষদের নির্বাচিত সদস্যদের না জানিয়ে মাসিক সভা, সদস্যবৃন্দ ছাড়া সচিব কে নিয়া বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। সভায় উপস্থিত সদস্যগণকে না রাখায় বরাদ্দের পরিমাণ অজানা রয়ে যায়। এতে কেউ প্রতিবাদ করলে বিভিন্ন প্রকল্পের বরাদ্দ থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ। এছাড়াও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দকৃত টাকা নদী তীরবর্তী ৬নং ওয়ার্ড সুনামপুর-ইসলামপুর-আহমদপুর এলাকায় বিতরণ করা হয়নি। জন্ম নিবন্ধন আবেদন ও সংশোধনে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ইউপি সচিব মুস্তাফিজুর রব অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছেন। এছাড়াও জন্ম নিবন্ধন ভুল সংশোধনে প্রথমে অপারগতা প্রকাশ করে পরে বড় অংকের অর্থের বিনিময়ে সংশোধন করে দেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন তারা।

অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন, গরীব অসহায়দের মধ্যে বিতরণের জন্য বেশ কয়েক বস্তা ভিজিএফ’র চাল ও শুকনা খাবার চলতি মাসের ৮ তারিখ ইউনিয়নের গোদাম হইতে সচিবের রুমের পার্শ্বের রুমে রাখা হয়। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে ৫নং ওয়ার্ড সদস্য আব্দুর রহিম এ সম্পর্কে সচিব মুস্তাফিজুর রবকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি অপর ইউপি সদস্য ফখরুল ইসলামের জন্য বরাদ্দ বলে জানান। এসময় ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম অপর সদস্য ফখরুল ইসলামের কাছে মোবাইল ফোনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তাঁর কোন বরাদ্দ নেই বলে জানান ফখরুল ইসলাম। এসময় ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম রুমটি তালাবদ্ধ করে রাখেন বলে তারা অভিযোগে উল্লেখ করেন। অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর করেন ইউপি সদস্য ফখরুল ইসলাম, আব্দুর রহিম, রেজাউল করিম রাজু, মাহমুদুল হাসান বাচ্চু, রাজু আহমদ, নারী সদস্য সুফিয়া বেগম ও মিনা বেগম।

এঘটনার খবর পেয়ে ঈদের পরে বুধবার (১৩জুলাই) সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী মান্নান সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি রুমে চাল দেখতে পান। এসময় তিনি চেয়ারম্যান এস এম আব্দুর রহিমের সাথে আলোচনা করে চালগুলো বন্টনের বাকি আছে বলে বিতরণের জন্য নির্দেশনা দেন। তবে তিনি চালগুলো জব্দ না করে বিতরণের নির্দেশ দেয়ায় এলাকাজুড়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। দায়িত্বশীল অবস্থান থেকে এমন নির্দেশনা প্রদান করায় ইউএনও এর ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে বলে অভিমত সচেতন মহলের। সচেতন মহল মনে করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী মান্নান তিনি জামায়াত সমর্থিত চেয়ারম্যানের পক্ষ অবলম্বন করেন জননেত্রি শেখ হাসিনার ভিশন-৪১ কে বাধা গ্রস্থ হবে। শ্রীঘই উধ্বর্তন মহলের হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন।

এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী মান্নান ইউপি ঢাকাদক্ষিণ চেয়ারম্যান ও সচিব এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ গ্রহণ না করায় ক্ষোভ বিরাজ করছে ইউপি সদস্য সহ সচেতন মহলের মধ্যে।

ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, আমরা ইউনিয়ন পরিষদের ৭জন সদস্য অভিযোগ নিয়ে গেলে নির্বাহী কর্মকর্তা তা ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি অভিযোগ গ্রহণ করবেন না বলে আমাদের জানিয়েছেন।

এব্যাপারে গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী মান্নান মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, অভিযোগ ফিরিয়ে দেইনি। অফিসে গিয়ে তাঁর সাথে কথা বলার জন্য তিনি বলেন।