চলমান আন্দোলনে কয়েক হাজার শহীদ হলেও হাসিনার অধীনে নির্বাচন নয়: আমান উল্লাহ
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
শনিবার, নভেম্বর ৫, ২০২২ ২:৫৯ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
শনিবার, নভেম্বর ৫, ২০২২ ২:৫৯ অপরাহ্ণ
চলমান আন্দোলনে কয়েক হাজার লোক শহীদ হলেও হাসিনার বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক ও চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান।
তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার সম্পর্কে শেখ হাসিনা যে কথা বলছেন তাতে মনে হচ্ছে দেশের আইন তিনি ব্যানিটি ব্যাগে মধ্যে রাখেন। এই আইন তিনি (শেখ হাসিনা) নিজেই পড়েন। নিজেই তৈরি করেন এবং নিজেই বলেন, ‘‘আমি উনাকে (বেগম খালেদা জিয়া) দয়া করে জেলখানা থেকে বের করেছি। আবার বেশি বাড়াবাড়ি করলে উনাকে জেলে পাঠাবো।’’ বাড়াবাড়ি আবার কি? আপনার অধিনে নির্বাচন করাবেন আর আমরা কথা বলতে গেলে সেটা যদি বাড়াবাড়ি হয়। তাহলে এর থেকে বেশি বাড়াবাড়ি হবে শেখ হাসিনার পতন ঘটানোর জন্য।’
শনিবার (৫ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে আবদুস সালাম হলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, সরকারের পদত্যাগ এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভাটি আয়োজন করেণ বাংলাদেশ এলডিপি।
আমান বলেন, ‘আজকে যে মিথ্যে মামলায় তিনি (শেখ হাসিনা) বেগম জিয়াকে সাজা দিয়েছেন। সেই একই ধরণের মামলায় প্রতিটি মানুষ জামিন পাচ্ছেন। কিন্তু খালেদা জিয়া পাচ্ছেন না।’
কয়েক হাজার লোক শহীদ হলেও হাসিনার বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আপনি যেভাবে চোখ রাঙ্গিয়ে কথা বলছেন, এই চোখ রাঙ্গানো বন্ধ হয়ে যাবে। জনগণ রাজপথে নেমে এসেছে৷ অনেক কথা আমরা শুনতে পাচ্ছি, গ্রেপ্তার করবেন। মামলাগুলো সচল করেছেন। কয় জনকে গ্রেফতার করবেন। যখন টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, রুপসা থেকে পাথুরিয়া সারা বাংলাদেশ বন্ধ হয়ে যাবে। কয়জনকে আটকাবেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সিভিল প্রশাসনসহ পুলিশ বাহিনীকে বলব আপনারা নিরপেক্ষ থাকুন। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে পরবর্তী সরকার নির্ধারণ হবে। এইটা কিন্তু ১৮ ও ১৪ সাল না এবার ২২ সাল ও ২৩ সাল। আমরা প্রতিশ্রুতি বদ্ধ কয়েক হাজার নেতাকর্মী শহীদ হলেও শেখ হাসিনার বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না, হবে না, হবে না।’
বর্তমান সংবিধান চলবেনা, জনগণের পক্ষের সংবিধান করতে হবে জানিয়ে আমান বলেন, ‘আপনারা দেখেন তত্বাবধায়ক সরকারের ব্যাপারে খায়রুল হক আইন কমিশনের কয় বার চেয়ারম্যান হলেন। উনাকে এতবার চুক্তি বাড়ানোর একটি কারণ তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রথা বাতিল করার জন্য। উনারা (আওয়ামী লীগ) বারবার বলেন সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। ৯০ সালের কথা মনে নাই। জনগণ আন্দোলন করে সংবিধান পরিবর্তন করেছিল।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা আগামী নির্বাচনের জন্য আপনাদের অবৈধ এমপিদের দিয়ে পার্লামেন্টে সংবিধান তৈরি করেছেন। সেই সংবিধান বাংলাদেশে চলবেনা। বাংলাদেশের জনগণ রক্ত দিয়ে হলেও এই সংবিধান পরিবর্তন করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার অধীনে নির্বাচন করাবে। এর বাইরে কোনো কথা নেই। সংবিধান তো জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। অতএব সে সংবিধানই বাংলাদেশে চলবে।’
বরিশালের বিভাগীয় সমাবেশ সফল হয়েছে উল্লেখ করে আমান উল্লাহ বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দরা যে ভাবে এক যোগে এক সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেছে। যে ভাবে সচেতন নাগরিকেরা রাস্তায় নেমেছে। তারা রাজপথ থেকে সড়ে দাঁড়াবে না। আপনারা দেখছেন না বরিশালে খোলা মাঠে ময়দানে মানুষ কিভাবে রান্না-বান্না করে খাওয়া দাওয়া করছে। জনগণ সরকার কে নামানো ছাড়া রাজপথ ছাড়বে না। আবারো শেখ হাসিনা স্বপ্ন দেখছে পূর্বের মত নির্বাচন করবেন। এটা হবে না। বাংলাদেশের জনগণ এটা হতে দেবে না।’
বিএনপির বিজয় হবেই কেউ যেন রাজপথ থেকে পিছ পা না হয় এই কথা বলে আমান উল্লাহ আমান উপস্থিত নেতাকর্মীদের প্রতিশ্রুতি বদ্ধ করান।
প্রতিবাদ সভার সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ এলডিপির সভাপতি আব্দুল করিম আব্বাসী, সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও এলডিপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।