ছাত্রলীগ-ছাত্রদল সংঘর্ষে আবারো উত্তাল ঢাবি আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তা জোরদার
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
শুক্রবার, মে ২৭, ২০২২ ৮:০২ পূর্বাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
শুক্রবার, মে ২৭, ২০২২ ৮:০২ পূর্বাহ্ণ

ঢাবি প্রতিবেদক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে লাঠি, রড, পাইপ নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মহড়া। ইনসেটে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করতে দেখা যাচ্ছে এক ব্যক্তিকে : নয়া দিগন্ত –
ছাত্রদলের বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘিরে আবারো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল। এতে সাংবাদিকসহ উভয়পক্ষের কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছে। তবে ছাত্রদলের দাবি, তাদের ৪০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তাদের সবাই রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল ও হাইকোর্ট মাজার এলাকায় এই সংঘর্ষ হয়। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি সফলের উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে দুপুরের দিকে আসে ছাত্রদল। হাইকোর্ট মোড় পার হয়ে কার্জন হল এলাকায় এলে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা ছাত্রলীগের মুখোমুখি হয় তারা। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি হয়। এ সময় দুই রাউন্ড গুলির শব্দও শুনতে পায় প্রত্যক্ষদর্শীরা। এরপর ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা পিছু হটে প্রেস ক্লাব এলাকায় চলে যায়। এ সময় আহত হন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক আক্তার হোসেন, সদস্য সচিব আমানউল্লাহ আমান, যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আরিফ, জিয়া হলের সভাপতি তারেক হাসান মামুন, বিজয় একাত্তর হলের সহসভাপতি তানভীর আজাদী, সাহবুদ্দিন আহমেদ, আবদুল কাইয়ুম, নাহিদ চৌধুরী, রাজু হাসান রাজন, শাকির আহমেদ, আবদুল্লাহ আল মাসুদ, এইচ এম আবু জাফর, নাছির উদ্দিন শাওন, শাহাদাত হোসেন, তারেক হাসান, সালেহ মো: আদনান, আতিক মোর্শেদ, শাহিনুর রহমান শাহিন, জান্নাতুল ফেরদৌস, ইজাবুল মল্লিক, আসাদুজ্জামান আসলাম, ওয়াহিদুজ্জামান তুহিন এবং রফিকুল ইসলামসহ অন্তত ২৫ জন নেতাকর্মী। তাদের মধ্যে সাতজন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালের আইসিইউতে আছেন বলে জানা যায়।
এর আগে সকাল থেকে কার্জন হল, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, টিএসসি, মধুর ক্যান্টিনসহ পুরো ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগের কর্মীরা। অবস্থানকালে সবার হাতে লাঠি, হকিস্টিক, বাঁশ ও রড দেখা যায়। ছাত্রলীগের হামলার পর পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। তারাও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।
ক্যাম্পাসের পাশাপাশি এবার সংঘর্ষ দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণেও ছড়ায়। আদালত প্রাঙ্গণে হামলার সমালোচনার শুরু হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ছাত্রলীগের হামলার মুখে ছাত্রদলের কিছু নেতাকর্মী সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে আশ্রয় নেয়। সেখানে পিছু পিছু ধাওয়া দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সেখানে নেতাকর্মীদের চাপাতি দিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে ছাত্রলীগ। দুপুর ১২টার দিকে সুপ্রিম কোর্ট অঙ্গনে প্রবেশ করে ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মীকে এলোপাতাড়ি কোপায় তারা।
প্রত্যক্ষদর্শী এক আইনজীবী জানান, ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী অতর্কিতে সুপ্রিম কোর্ট বার ভবনের সামনে ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মীর ওপর হামলা চালায়। এ সময় কয়েকজন আহত হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় একজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। এ ঘটনায় বার ভবন ও আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পরপরই ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় দুইজন আইনজীবী এগিয়ে গেলে তারাও এলোপাতাড়ি কোপের শিকার হয়। প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক মিছিল ও সমাবেশ করেন বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা। এতে নেতৃত্ব দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
এদিকে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের সাথে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার সময় ডেইলি ক্যাম্পাসের মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিক আবির আহমেদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। এ সময় তার মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়া হয়। হাইকোর্ট মোড় এলাকায় সরাসরি সম্প্রচারের সময় তার ওপর হামলা করা হয়। আহত আবির আহমেদ বলেন, পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা আমি লাইভ দিচ্ছিলাম। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমার ওপর হামলা করেন। তারা আমার মুঠোফোন ছিনিয়ে নিয়ে যান।
সাংবাদিকের ওপর হামলার পাশাপাশি হাইকোর্ট এলাকায় ছাত্রদল ভেবে ছাত্রলীগের উপরেই হামলা করে ছাত্রলীগের অন্য একটি গ্রুপ। ছাত্রদলের সাথে সংঘর্ষ বাঁধলে ভুলবশত ছাত্রলীগের কর্মীরা নিজেদেরই অন্য একটি গ্রুপের ওপর ইট ছুড়েন। এতে অন্তত পাঁচ-ছয়জন ছাত্রলীগ কর্মী আহত হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রলীগ কর্মী জানায়, হাইকোর্ট এলাকায় ছাত্রদলকে তাড়া করার জন্য আমাদের অনেক নেতাকর্মী দৌড়ে যায়, প্রথমে অনেকেই প্রবেশ করলে পরবর্তীতে আসা নেতাকর্মীরা ছাত্রদল ভেবে আমাদের ওপরেই ইট ছুড়ে বসে। এতে আমাদের পাঁচ-ছয়জন আহত হয়।
ঘটনায় সন্দেহভাজন দুই ব্যক্তিকে হেফাজতে নিয়েছে শাহবাগ থানা পুলিশ। দুই ব্যক্তির নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানায়নি পুলিশ। দুপুরে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুদ হাওলাদার এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে সন্দেহভাজন দুইজনকে আমরা হেফাজতে নিয়েছি। তাদের থানায় নিয়ে এসেছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি। এখনো তাদের আটক বলা যাবে না। কেন তারা ঘটনাস্থলে এসেছেন, তা জানার চেষ্টা করছি।
ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ বলেন, আমাদের কর্মসূচির অংশ হিসেবে মিছিল নিয়ে দোয়েল চত্বর দিয়ে প্রবেশ করছিলাম। হঠাৎ করেই ছাত্রলীগ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। আমাদের ৪০ জনের মতো নেতাকর্মী আহত হয়েছে। পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা ছাত্রলীগের হামলার সময় নীরব দর্শকের মতো ছিল।
ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আক্তার হোসেন বলেন, আমরা পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসতে গেলে কার্জন হল এলাকায় আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলায় আমাদের অন্তত ৪০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ২২ জন। ছাত্রলীগ একটি ফ্যাসিবাদী সংগঠন। দীর্ঘ সময় ধরে তারা সবগুলো বিরোধী সংগঠনকে কোণঠাসা করে রেখেছে।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, অছাত্রদের নিয়ে গড়া ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল। স্বীকার করতে হবে বিগত বছরগুলোতে ক্যাম্পাসে কোনো বিশৃঙ্খলা নেই। এখন ক্যাম্পাসে কিন্তু টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজি হয় না। এই যে শিক্ষার্থীরা ভালো আছে, এটাই তারা দেখতে পারছে না।
সংঘর্ষে আগ্নেয়াস্ত্র : এদিকে ছাত্রলীগ-ছাত্রদল সংঘর্ষের সময় দেশীয় অস্ত্রের পাশাপাশি ব্যবহার হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র। সংঘর্ষের সময় হাইকোর্ট এলাকায় শোনা গেছে কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ। আগ্নেয়াস্ত্র ছাত্রলীগের বলে দাবি করেছে ছাত্রদল। তবে ছাত্রলীগ বলছে, এমন করার সুযোগ নেই।
ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, সন্ত্রাসের মেগা সিরিয়ালের যে সূচনা এটা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল করেছে। গতকাল ছাত্রদল আগের চেয়ে বেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে আসার চেষ্টা করেছে। ছাত্রদল অত্যাধুনিক অস্ত্র বহন ও ব্যবহার করেছে। ছাত্রদল শুধু ক্যাম্পাসকে নয় রাষ্ট্রের অত্যন্ত সংবেদনশীল জায়গা সুপ্রিম কোর্টেও অস্ত্র নিয়ে জড়ো হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের ভেতরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে স্লোগান দেয়ার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে সাদ্দাম হোসেন এড়িয়ে যান। তবে সাদ্দাম হোসেন বলেন, ক্যাম্পাস এলাকায় ছাত্রদলের কেউ প্রবেশ করতে পারেনি।
টিএসসি এলাকায় যার হাতে অস্ত্র দেখা গেছে সে ছাত্রলীগের কর্মী কি না- এ প্রশ্নের উত্তরে সাদ্দাম বলেন, ছাত্রলীগের কোনো কর্মীর এ রকম অস্ত্র ব্যবহার বা রাখার সুযোগ নেই।
পরিবেশ পরিষদের সভা দাবি ৮ সংগঠনের : এদিকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে পরিবেশ পরিষদের সভা আহ্বানের দাবি জানিয়েছে ক্যাম্পাসের ক্রিয়াশীল আটটি সংগঠন। এক যৌথ বিবৃতিতে এসব সংগঠনের নেতারা বলেন, বিভিন্ন সময় ছাত্র সংগঠন এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগের হামলা তাদেরকে বারবার সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে শিক্ষার্থীদের সামনে প্রমাণ করেছে। সবশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের ওপর তাদের নির্মম হামলা ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের জন্য এক ভীতিকর ও অনিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসজুড়ে ছাত্রলীগের এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলমান থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রলীগের পুতুলের ভূমিকা পালন করছে।
অবিলম্বে পরিবেশ পরিষদের সভা আহ্বানের দাবি জানিয়ে বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ পরিষদ অকার্যকর অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ক্যাম্পাসে একটি সন্ত্রাসমুক্ত, নিরাপদ পরিবেশ তৈরির জন্য পরিবেশ পরিষদের কাজ করার কথা থাকলেও প্রশাসনের নির্লিপ্ততায় পরিষদটির অস্তিত্বের কথা শিক্ষার্থীরা ভুলতে বসেছে। অবিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে পরিবেশ পরিষদের সভা আহ্বান করে ক্যাম্পাসে একটি নিরাপদ ও সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে।
বিবৃতিতে আট সংগঠনের পক্ষ থেকে স্বাক্ষর করেন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নজির আমিন চৌধুরী জয়, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা: জয়দীপ ভট্টাচার্য, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সোহেল, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি আরিফ মঈনুদ্দিন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ড, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি সুনয়ন চাকমা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের (একাংশ) সভাপতি মিতু সরকার এবং বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তাওফিকা প্রিয়া।
সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তা জোরদার : সুপ্রিম কোর্ট অঙ্গনে প্রবেশ করে ছাত্রলীগের হামলা-মারধরে একজন ছাত্রদল কর্মী গুরুতর আহত হয়েছে। দুপুরে ছাত্রলীগের বেধড়ক মারধরে গুরুতর জখম হয়ে তানভীর আজাদী নামের ছাত্রদল কর্মী সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে পড়ে ছিল। তার মাথা দিয়ে রক্ত ঝরছিল। এ সময় কয়েকজন আইনজীবী অ্যাম্বুলেন্সে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। গুরুতর আহত তানভীর আজাদী ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় বিজয় একাত্তর হল ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বলে নিশ্চিত করেছেন বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে হামলার শিকার হন ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফ। ঘটনার ছবি এবং ভিডিও তোলায় আইনজীবীদের ওপরও ছাত্রলীগ হামলা করে। এ সময় আইনজীবী মুজিবুর রহমান মুজিব, অ্যাডভোকেট রিজভী, অ্যাডভোকেট তারেকসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী আহত হন। এদিকে হামলার সময় অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
ঘটনার পর সুপ্রিম কোর্টে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট ইউনিট। মিছিল শেষে আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে তাৎক্ষণিক এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের যুগ্ম-আহ্বায়ক আবেদ রাজা, আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সভাপতি আবদুল জব্বার ভূূঁইয়া, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, মোহাম্মদ আলী, সুপ্রিম কোর্ট বারের ট্রেজারার কামাল হোসেন, আইনজীবী ব্যারিস্টার শফিউল আলম মাহমুদ, গাজী তৌহিদুল ইসলাম, মুজিবুর রহমান প্রমুখ। বক্তারা সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে আইনজীবীর ওপর বহিরাগতের হামলার নিন্দা জনিয়ে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তা জোরদার : সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে বহিরাগতের হামলার পর সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলসহ কর্মকর্তারা একটি বৈঠক করেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, আগামী রোববার থেকে সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। গতকাল দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে এ বৈঠক করে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। বৈঠকে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো: বজলুর রহমান, পুলিশ রমনা অঞ্চলের ডিসি, আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের পর আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান জানান, বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী রোববার থেকে সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। সুপ্রিম কোর্টের গেটগুলোতে আনাগোনা নিয়ন্ত্রণ করা হবে। বিচারপ্রার্থী, আইনজীবীরা যাতে সুপ্রিম কোর্টে নির্বিঘেœ, স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আদালত অঙ্গনে যাতে কোনো বহিরাগত ঢুকতে না পারে তা নিশ্চিত করা হবে।
স্বাধীন খবর ডটকম/আ আ
