জনগণের কল্যাণ এ সরকারের লক্ষ্য নয় মেগা প্রজেক্ট নিয়েই মনোযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
সোমবার, জুলাই ৪, ২০২২ ৯:৩৩ পূর্বাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
সোমবার, জুলাই ৪, ২০২২ ৯:৫৩ পূর্বাহ্ণ

সিনিয়র করেসপডেন্ট
সারাদেশে বিশেষ করে সিলেটে, ময়মনসিংহ, রংপুর বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলে বানভাসি মানুষের হাহাকারে যখন আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে, বন্যার্তদের জন্য সরকারি সাহায্য যখন নিতান্তই অপ্রতুল। এই সময় সকলকে রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে আসতে হবে। বিরোধী দলে থাকলেও জনগণের দল হিসাবে বিএনপি ইতিমধ্যে সিলেট, সুনামগঞ্জ, ফেনী, নেত্রকোনা এবং কুড়িগ্রামসহ সারাদেশে যথাসাধ্যভাবে বর্নাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে সরকারি দল বিশেষ করে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া’র নির্বাচনী আসন ফেনীর ফুলগাজীতে বিএনপির ত্রাণ বিতরণের প্রস্তুতি সভায় বিনা উস্কানিতে লাঠি সোটা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এর ফলে ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়। এদের নিকটস্থ হাসপাতালে নেওয়ার পথে ওৎ পেতে থাকা আওয়ামী সন্ত্রাসীরা পুনরায় হামলা করে। ঘটনাস্থলের পাশেই ফুলগাজি থানা থাকা সত্ত্বেও তারা সময় মতো হস্তক্ষেপ করেনি। করলে এমন ঘটনা ঘটা সম্ভব ছিল না। শনিবার সকালে ফুল গাজিতে বিএনপি ত্রাণ বিতরণের কর্মসূচি ঘোষণা করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করে। প্রশাসন এ সময় ১৪৪ ধারা জারি করে। এভাবে বিভিন্ন স্থানে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির অজুহাতে বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচি বাতিল করে প্রশাসন আগেও ১৪৪ ধারা জারি করেছে।
এটা এ সরকারের পুরাতন অভ্যাস। এছাড়া গত শনিবার গাজীপুরে বন্যার্তদের সহযোগিতায় বিএনপি’র ত্রাণ তহবিল সংগ্রহ কার্যক্রমে পুলিশ বাধা দিয়েছে। অথচ বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষ অনাহারে ভুগছেন এবং চিকিৎসার অভাবে নানা প্রকার রোগে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এ সময় সরকারি ত্রাণ দেয়া তো দূরের কথা বিএনপি’র মানুষের কাছ থেকে ত্রাণ সংগ্রহ কর্মকান্ডকে পুলিশ পন্ড করে দেয়।
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,
আসলে বর্তমান অনির্বাচিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের জনগণের প্রতি কোন দায়বদ্ধতা না থাকায় তারা সচেতনভাবেই বিএনপির ত্রাণ তৎপরতাকে বাধাগ্রস্ত করছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আশেপাশের জেলাগুলোতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ও আলোকসজ্জার জন্য প্রায় শত কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। চট্টগ্রামে কনসার্ট করে আর ঢাকায় আতশবাজি ফুটিয়ে বিপুল অর্থ নষ্ট করা হয়েছে। কিন্তু সারাদেশে বন্যার্ত ও বানভাসি মানুষ না খেয়ে বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে সেজন্য সরকারের অর্থ বরাদ্দ দিতে পারছে না। জনগণের কল্যাণ এখন আর এ সরকারের লক্ষ্য নয়। মেগা প্রজেক্ট নিয়েই তাদের যত মনোযোগ, কারণ সেখানে মধু আছে। এখন এ মেগা প্রজেক্টগুলো দুর্নীতি আর টাকা পাচারের উৎস হয়ে উঠেছে।
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,
এদিকে শতাব্দীর ভয়াবহ বন্যায় বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়ানোকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বিভিন্ন জেলায় বন্যা দুর্গতদের মধ্যে সাহায্য প্রদানের লক্ষ্যে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যবৃন্দসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে একটি জাতীয় ত্রাণ কমিটির গঠন করেছে বিএনপি। গণমানুষের দল হিসাবে বিএনপি কর্তৃক এরই মধ্যে লক্ষাধিক পরিবারকে নানাভাবে সহযোগিতা করা হয়েছে। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে কিভাবে করোনা সময়কালেও ‘হেল্পসেল’ গঠন করে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল বিএনপি।
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,
এবারও পানিবন্দী মানুষদের উদ্ধার, ত্রাণ বিতরণ, চিকিৎসা ও ঔষধ, গৃহনির্মাণ এবং কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোসহ বিভিন্নভাবে বন্যার্তদের সহযোগিতা করছে বিএনপি। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর নেতৃতে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ কয়েকটি বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করেছেন। এছাড়া ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল ও মহিলা দলসহ সকল অংগ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের উদ্যোগে বানভাসিদের মধ্যে পৃথকভাবে ত্রাণ প্রদান অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি ড্যাব ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনও রোগবালাইয়ের চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ বিতরণ, বিশুদ্ধ পানির ট্যাবলেট বিতরণ করে চলছে। বানভাসিদের মধ্যে বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং পুরনো ও ব্যবহার্য কাপড় সরবরাহের কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে।
উপস্থিত সাংবাদিকবৃন্দ,
আমরা বন্যার্ত মানুষের দুর্ভোগের এ দুঃসময়ে ক্ষমতাসীন মহলকে সকল ধরণের সংকীর্ণ রাজনৈতিক কূটকৌশল পরিহার করে আর্তমানবতার সেবায় আত্মনিয়োগের উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
স্বাধীন খবর ডটকম/আ আ
