জাজিরায় ইউপি নির্বাচন : দুই প্রতিদ্বন্দি প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ ,আহত-৩০
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
সোমবার, জুন ১৩, ২০২২ ২:১৭ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
সোমবার, জুন ১৩, ২০২২ ২:১৭ অপরাহ্ণ
শরীয়তপুর প্রতিনিধি ঃ শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বড় গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোট চাওয়াকে কেন্দ্র করে গতকাল রোববার রাতে প্রতিপক্ষের নির্বাচনী ক্লাব, বাড়ী-ঘর ভাংচুর, সাবেক এমপি বাড়ী হামলাসহ গুলি, বোমা বিস্ফোরন ও সংঘর্ষের অভিযোগ রয়েছে। এ সময় উভয় গ্রæপের হামলায় গুলিবৃদ্ধ সহ অন্তত ৩০ জন মারাতœক আহত হয়েছে। আহতদের জাজিরা উপজেলা হাসপাতাল, শরীয়তপুর সদর হাসপতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ নিয়ে দু গ্রæপের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে উভয় গ্রæপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এখনো পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
আহত জোনায়েত মাদবর, সাগরী বেগম ও জাজিরা থানা পুলিশ সুত্রে জানাযায়, শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার রড় গোপালপুর ইউনিয়নে আগামী ১৫ জুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে কে এম জামিল হোসেন ( মোটর সাইকেল) ও অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী, বর্তমান চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান লিটু সরদার (আনারস) প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। রোববার রাতে বড় গোপালপুর ইউনিয়নের টেকের কান্দি গ্রামে উভয় প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা ভোট চাইতে যায়। এ সময় উভয় গ্রæপের মধ্যে প্রথমে কথা কাটা কাটি হয়। পরে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় উভয় গ্রæপের সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্র.সস্ত্র রাম দা, টেটা, বল্লম ও শত শত হাত বোমা নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ২ ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষে জাকিয়া বেগম (৫০), সুর্য বেগম (৬৫), সাগরি বেগম (৩৫), রুবেল কবিরাজ (৩০), আক্কাস কবিরাজ (৪০), মিঠু মাদবর (৩০), ইমরান মাদবর (৩৬), কিনাই খালাশী (৬০), সোহাগ সরদার (৩৭), রেজা সরদার (৪০), তুহিন মুন্সি (৩৫), আবুল কালাম সরদার (৪০), জোনায়েদ মাদবর (২০),সোহাগ সরদার, রেজা সরদার, কালামিয়া সরদার,তুহিন মুন্সি, জোনায়েদ মাদবর সহ অন্তত: ৩০ জন মারাতœক আহত হয়েছে। অহতদের মধ্যে আশংকা জনক অবস্থায় গুলিবৃদ্ধ সোহাগ সরদার, রেজা সরদার ও আবুল কালাম সরদারকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকীদের জাজিরা উপজেলা হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় হামলা কারীরা সাবেক এমপি মাষ্টার মজিবুর রহমানের বাড়ী, ৩ টি নির্বাচনী ক্লাব, ১৫ টি বাড়ী ঘর ভাংচুর করেছে। এ সময় এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে উভয় গ্রæপের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। সাধারন ভোটারদের মধ্যে উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। তারা শান্তিপূর্নভাবে ভোট দিতে পারবে কি না ? তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি সুষ্টভোট নিয়ে ও শংকা রয়েছে। এ ব্যপারে বড় গোপালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী কে এম জামিল হোসেন (মোটর সাইকেল) এর সমর্থক ও সাবেক এমপি মাষ্টার মজিবুর রহমানের ভাতিজা নাহিদুল রহমান নান্নু বাদী হয়ে ৮৩ জনকে আসামীকে জাজিরা থানায় একটি দায়ের করা হয়েছে। অপর দিকে বড় গোপালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান লিটু সরদার (আনারস) বাদী হয়ে ৫১ জনকে আসামী করে জাজিরা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনা ও পাল্টাপাল্টি মামলার ঘটনায় পুরো ইউনিয়নের পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় ভোটার, আতাউর রহমান, রমিজ উদ্দিন, মিজানুর রহমান বলেন, অস্ত্র,সস্ত্র ও বোমা নিয়ে যে প্রকাশ্যে সংঘর্ষ হয়। তাতে আমরা নিবিগ্নে ভোট দিতে পারবো কিনা, তা নিয়ে শংসয় বয়েছে। আমরা আতংক।
বড় গোপালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থীকে এম জামিল হোসেন (মোটর সাইকেল) বলেন , চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহবুবুর রহমান লিটু সরদার ও বাবুল আকন ও আনারসের সমর্থকরা অন্যায় ভাবে আমার বাড়ীঘর ও নির্বাচনী ক্লাব ও সাবেক এমপি মাষ্টার মজিবুর রহমানের বাড়ী ঘরে হামলা চালীয়ে ভাংচুর করেছে। এ ঘটনায় আমার লোকজন আহত হয়েছে। হামলাকারীরা মসজিদের ভাংচুর করেছে।
মাহবুবুর রহমান লিটু সরদার (আনারস) বলেন, টেকের কান্দি এলাকায় ভোট চাইতে গেলে চেয়ারম্যান প্রার্থী জামিল হোসেন (মোটর সাইকেল) প্রতীকের প্রার্থীসহ তার সমর্থকরা আমার সমর্থকদের উপর হামলা করে। ব্যাপক বোমা ও গুলি বর্যন করে। এতে আমার ৩ জন গুলি বিদ্ধসহ ১০/১২ জন মারাতœক আহত হয়েছে।
জাজিরা থানার ভানপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বড় গোপালপুর এলাকায় দু চেয়াম্যান প্রার্থী সমর্থকদের মধ্যে মারামারি হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েত করা হয়েছে।এ ঘটনায় উভয় পক্ষ লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।