টিকা কার্যক্রমে সরকারের প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
বৃহস্পতিবার, মার্চ ১০, ২০২২ ১:২৩ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
বৃহস্পতিবার, মার্চ ১০, ২০২২ ১:২৩ অপরাহ্ণ
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ এখন বিশ্বের রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি। তিনি বলেন, এক দিনে এক কোটির বেশি ডোজ টিকা দেয়াসহ অল্প সময়ে ২২ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দিয়ে করোনা মহামারি থেকে দেশকে রুখে দেয়ায় ব্লুমবার্গ করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশকে ৮ম অবস্থানে তুলে এনেছে। টিকা ক্রয় ও টিকা দান কার্যক্রম মিলে এগুলোর পেছনে সব মিলিয়ে সরকারের প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। দ্রুতই বুস্টার ডোজের ক্যাম্পেইন হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজী হাসপাতালের উদ্যোগে ‘বিশ্ব কিডনি দিবস-২০২২’ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, করোনায় বিশ্বের অনেক দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা যখন ভয়াবহ তখন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। জিডিপি ৬ প্লাস হয়েছে। মানুষ এখন নিশ্চিন্তে আবার ব্যাবসা-বাণিজ্যে মন দিতে পারছে। এগুলি এমনি এমনি হয়নি। এর জন্য স্বাস্থ্যখাতকে দিনরাত কাজ করতে হয়েছে।
আমরা একদিনেই ১ কোটি ২০ লাখ ডোজ টিকা দিয়েছি, যা একটি রেকর্ড। আমরা এ পর্যন্ত প্রায় ২২ কোটি ডোজ টিকা দিতে সক্ষম হয়েছি। এর মধ্যে সাড়ে ১২ কোটি ডোজ ১ম, সাড়ে ৮ কোটি ডোজ ২য় এবং ৫০ লাখ ডোজ বুস্টার ডোজ দিতে সক্ষম হয়েছি। এই টিকাদান কর্মসূচিতে লক্ষাধিক লোক কাজ করছে। এত বড় একটি কর্মযজ্ঞে তেমন কোন অনিয়ম বা ত্রুটি দেখা যায়নি। সব টিকা ক্রয় ও টিকা দান কার্যক্রম মিলে এগুলোর পেছনে সব মিলিয়ে সরকারের প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাহস করে এত বিশাল অংকের টাকার কথা না ভেবে দেশের সকলকেই টিকার আওতায় এনেছেন বলেই দেশবাসী এখন করোনায় অনেকটাই স্বস্তিতে রয়েছে, মানুষ আবার স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজে নামতে পারছে।
দ্রুতই দেশের মানুষকে আরো বেশি সংখ্যক বুস্টার ডোজের আওতায় আনা হবে জানিয়ে সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, করোনায় একদিনে যেভাবে প্রায় এক কোটি মানুষকে গণটিকা দেয়া হয়েছে, ঠিক সেভাবে দ্রুতই বুস্টার ডোজেরও ক্যাম্পেইন করা হবে। এতে করে দেশ আরো বেশি নিরাপদ থাকবে।
কিডনি রোগ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, করোনায় দিনে ২০ জন মানুষ মারা গেলে আমরা কত চিন্তায় থাকি। অথচ কিডনিতে দিনে ৭০ থেকে ৮০ জন মানুষ যাচ্ছে, ক্যান্সারে দিনে ২-৩শ মানুষ মারা যাচ্ছে সেগুলি নিয়ে আমরা খুব বেশি সচেতন থাকিনা। এই রোগগুলো নিয়ে আমাদেরকে আরো সচেতন হতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী কিডনি রোগীর সংখ্যা উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন, দেশে এখন প্রায় ২ কোটি কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি আছেন। প্রতিদিন গড়ে ২০ থেকে ৩০ হাজার মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এগুলি কারণে আমরা দেশের প্রতিটি জেলায় আলাদা করে ১০ বেডের ডায়ালাইসিস ও ১০ বেডের আইসিইউ বেড করার কাজ হাতে নিয়েছি। আট বিভাগে ৮টি আধুনিক ক্যান্সার, কিডনি চিকিৎসা হাসপাতাল নির্মাণ করতে কাজ শুরু করা হয়েছে। এগুলি হলে দেশের মানুষ নিজ নিজ এলাকাতেই এরকম জটিল ও ব্যয়বহুল চিকিৎসা বিনামূল্যে গ্রহণ করতে পারবে।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজীর পরিচালক মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব সাইফুল ইসলাম বাদল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, নেফ্রলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. নিতাই চন্দ্র বিশ্বাস প্রমুখ।