ঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় মাঠে থাকবে যুবদল
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
মঙ্গলবার, মে ৩১, ২০২২ ৯:৩১ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
মঙ্গলবার, মে ৩১, ২০২২ ৯:৩১ অপরাহ্ণ
একান্ত আলাপকালে নতুন সাধারণ সম্পাদক মুন্না
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে দেশের যুবসমাজকে ঐক্যবদ্ধ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় জাতীয়তাবাদী যুবদল কাজ করবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির নতুন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না। দেয়া এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় গতকাল মঙ্গলবার তিনি এ মন্তব্য করেন। মুন্না বর্তমান সরকারকে ফ্যাসিবাদী, অনির্বাচিত এবং অবৈধ আখ্যা দিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার খুন, গুমের মাধ্যমে পুলিশ ও প্রশাসন দিয়ে জোর করে ক্ষমতায় আছে। তারা নব্য বাকশালী ও ফ্যাসিবাদী। তীব্র আন্দোলনের মাধ্যমে অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারকে পদচ্যুত করা বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা এবং তারেক রহমানকে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনাই হবে আমাদের মূল লক্ষ্য। এদিকে দীর্ঘদিন পর যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা হওয়ায় নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে পদপ্রত্যাশী ও মহানগরীর নেতাকর্মীরা প্রতিদিন জড়ো হয়ে নতুন কমিটির নেতাদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। প্রসঙ্গত গত শুক্রবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী যুবদলের আট সদস্য বিশিষ্ট আংশিক নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা দেয়া হয়। নতুন কমিটিতে সভাপতি হয়েছেন সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। আগের কমিটিতে তিনি সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এর আগে তিনি ছাত্রদলেরও সভাপতি ছিলেন। নতুন কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি হয়েছেন আগের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান, সহ-সভাপতি আগের যুগ্ম সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন আগের কমিটির সহ-সভাপতি মোনায়েম মুন্না, ১ নং যুগ্ম সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, ২ নং যুগ্ম সম্পাদক গোলাম মাওলা শাহিন, সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার ও দফতর সম্পাদক (সহ-সভাপতির পদমর্যাদা) কামরুজ্জামান দুলাল।
সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত হওয়ার পর গতকাল বিকেলে এই প্রতিবেদকের সাথে একান্ত আলাপকালে সংগঠনকে নিয়ে নিজের পরিকল্পনার কথা জানান মোনায়েম মুন্না। তিনি বলেন, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় প্রথমে মহান হাজারো শুকরিয়া আদায় করছি। সেই সাথে মাদার অব ডেমোক্র্যাসি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই। তারা যে আস্থা ও বিশ্বাস রেখে আমাকে যুবদল সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছেন আমি তাদের আস্থা অক্ষুণœ রাখা এবং প্রতিদান দিতে যা দরকার তাই করব ইনশাআল্লাহ।
মুন্না বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে যুবদলের সোনালী ঐতিহ্য রয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে জনগণের অধিকার আদায়ে গণতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছি। বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে দেশের যুবসমাজকে ঐক্যবদ্ধ করব। স্বৈরাচার এরশাদের সময়ের চেয়েও এখন কঠিন সময়। আমাদের চ্যালেঞ্জ অনেক বেশি। কিন্তু আমরা মাঠে থাকতে চাই। কিছু ভুলত্রুটি থাকতে পারে তবে আমরা নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে চাই। তিনি বলেন, সম্প্রতি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যে অকথ্য ও অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলেছেন আমরা দায়িত্ব নেয়ার পর তার প্রতিবাদে গত শনিবার ঢাকায় প্রথম সমাবেশ করেছি। এখন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪১তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে কর্মসূচি পালন করছি। আগামী ৭ জুন যুবদলের উদ্যোগে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আলোচনা সভা হবে। সব মিলিয়ে জুনের দ্বিতীয়ার্ধ্বে যুবদলের পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে মুন্না বলেন, আমরা এখন বিভিন্ন জেলা ও মহানগরের শীর্ষ নেতাদের সাথে কথা বলে খোঁজ খবর নিচ্ছি, কুশল বিনিময় করছি। দ্রুত আট সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি আলোচনা করে কার্যক্রম শুরু করব। ত্যাগী, দক্ষ, যোগ্যদের দিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হবে। যারা অতীতে আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় এবং পদবঞ্চিত তাদের মূল্যায়ন করা হবে। আমরা শিগগিরই দলের হাইকমান্ডের সাথে কথা বলে নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করব। যারা পদপ্রত্যাশী তাদের হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে যোগ্যতার ভিত্তিতে কমিটি গঠন করব। যুবদলের নেতৃত্বেই গণআন্দোলন করে ভোটারবিহীন সরকারকে উৎখাত করা সম্ভব বলে আমরা বিশ্বাস করি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যুবদলের নতুন সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্নার গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলায় হলেও জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঢাকায়। তিনি ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি এবং আবুজর গিফারী কলেজ থেকে এইচএসসি ও ডিগ্রি পাস করেছেন। ১৯৮৫ সালে আবুজর গিফারী কলেজ ছাত্রদলের সেক্রেটারি এবং মতিঝিল থানা ৩৫ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের আহ্বায়ক হওয়ার মধ্যদিয়ে রাজনীতিতে যুক্ত হন। ১৯৮৬ সালে বৃহত্তর মতিঝিল থানা ছাত্রদলের সেক্রেটারি, ১৯৮৮ সালে মতিঝিল থানা সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের আহ্বায়ক, ১৯৯০ সালে ঢাকা মহানগর ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯১ সালে আবুজর গিফারী কলেজ ছাত্র সংসদের এজিএস এবং মতিঝিল থানা ছাত্রদলের সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০৩ সালে যুবদলের বুলু-আলাল কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক, ২০১০ সালে যুবদলের বন ও পরিবেশবিষয়ক সহ-সম্পাদক, ২০১১ সালে যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ২০২০ সালে যুবদলের নীরব-টুকু কমিটির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি হয়ে বরিশাল বিভাগীয় টিমের লিডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।