• আজ রাত ৯:৪৭, শনিবার, ৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২রা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
  • shadinkhobor24@gmail.com
  • ঢাকা, বাংলাদেশ

দুর্নীতির দুর্লভ নীল তিমি এখন বাংলাদেশে

নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ: বৃহস্পতিবার, মার্চ ১০, ২০২২ ৪:৩৭ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ: বৃহস্পতিবার, মার্চ ১০, ২০২২ ৪:৩৭ অপরাহ্ণ

 

গোলাম মাওলা রনি

২০০১ সাল পর্যন্ত আমি বিটমানি নামক শব্দটির সাথে পরিচিত ছিলাম না। এমনকি টিআর, জিআর, কাবিখা-কাবিটা এগুলোর নাম পর্যন্ত শুনিনি। জনপ্রতিনিধিরা কিভাবে ঘুষ খেতে পারে, হাজার হাজার বিঘা খাস খতিয়ানভুক্ত জমি নিজের অথবা পরিবারের নামে দলিল করে নিতে পারে এবং নির্বাচনী এলাকায় চলমান রাষ্ট্রের উন্নয়নকর্ম থেকে মোটা অঙ্কের কমিশন হাতিয়ে নিতে পারে তা আমি এবং আমার বাবা-দাদারা পর্যন্ত জীবনে শুনিনি। জলমহাল দখল, ব্যক্তিগত জায়গাজমি দখল, অন্যের সুন্দরী বউ-কন্যাদের রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে আকর্ষিত করে অথবা জরবদস্তি করে আদিম লালসা চরিতার্থ করা এবং মুখে মধু-অন্তরে বিষ রেখে হরদম মোনাফেকি করার কৌশলের কথাও আমার অজানা ছিল। ফলে নবম সংসদের একজন নবীণ সদস্য হিসেবে দেশের প্রথাগত দুর্নীতি আমার জীবনকে কিভাবে দুর্বিষহ করে তুলেছিল সেই কাহিনীই আজ আপনাদের বলব।
মূল প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে আজকের শিরোনাম প্রসঙ্গে সংক্ষেপে কিছু বলে নিই। দেশের সব গণমাধ্যমের হালনাগাদ গরম খবর হলো ফরিদপুরে দুর্নীতির অভিযোগে বাবর নামে একজন ব্যক্তিকে হাতকড়া পরিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং আমি যা অনুমান করি তা হলো- হাতকড়া পরিহিত বাবরের নাটকীয় ছবিটি উঁচু মহলের নির্দেশে বেশ ঘটা করে এমন একটা সময়ে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হচ্ছে যখন প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় সফরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে রয়েছেন। বাবরের গ্রেফতার এবং তার হাতে হাতকড়া পরানোর ছবিকে ভাইরাল করা নিয়ে নানামুখী গল্প-কাহিনী, গুজব এবং তথ্যউপাত্ত কেবল বাংলাদেশ নয়; বরং সারা দুনিয়ায় বসবাসরত বাঙালিদের মধ্যে ব্যাপক গুঞ্জন সৃষ্টি করেছে।

আপনি যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, কে এই বাবর তবে আমি বলতে বাধ্য হবো যে, এই বাবর কিন্তু মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা মহাত্মা জহিরউদ্দিন মোহাম্মদ বাবর নন। অথবা তিনি বিএনপি জমানার প্রবল প্রতাপশালী স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরও নন। তিনি হলেন ফরিদপুরের মিস্টার ফিফটিন পার্সেন্টরূপে পরিচিত এবং স্বীকৃত খোন্দকার মোহতেশাম বাবর। তার পরিচয় সম্পর্কে পত্রপত্রিকা আমাদের এই তথ্য জানাচ্ছে যে, তিনি ফরিদপুর-৩ আসনের বর্তমান এমপি এবং সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ছোট ভাই। পত্রপত্রিকাগুলো তার বড় ভাই ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফের বিস্তারিত পরিচয় প্রকাশ না করলেও কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ এবং মারাত্মক তথ্য প্রকাশ করে পুরো জাতিকে অবাক করে দিয়েছে এবং তা হলো- বাবর একসময় বিএনপি করতেন এবং তিনি প্রয়াত বিএনপি নেতা চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন।

গ্রেফতার বাবর সম্পর্কে লিখতে গিয়ে রাজনীতির দাবার চাল-দুর্নীতির সাগরচুরি এবং মহাসাগরের অতলান্তের দুর্লভ নীল তিমিকে দুর্নীতির জালে আটকে সেটির পেটে দুর্নীতির অর্থবিত্ত-সোনাদানা ঢুকিয়ে দিয়ে কিভাবে বগল বাজানো যায় তা নিয়ে চিন্তাভাবনার চেষ্টা করছিলাম এবং ভাবছিলাম নানামুখী রাষ্ট্রীয় দুর্নীতির রুই-কাতলাদের উত্থান ও পতন নিয়ে। রাষ্ট্রীয় কর্মে জড়িত সরকারি কর্মচারী এবং রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের যে অংশটি দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন তা নিয়েও নানামুখী উঁচু মার্গের কথা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে যাদের সাথে লেখাপড়া করেছি এবং যাদেরকে দেখেছি দু’মুঠো অন্নের সংস্থান করার জন্য একটি টিউশনির খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরতে সেই তারাই যখন সরকারি কর্মচারী বা জনপ্রতিনিধিরূপে হঠাৎ করে খোলস পাল্টে ফেলেন এবং নিজেদের অতীত ভুলে রায় বাহাদুর, খান বাহাদুর, খানদানের শাহজাদারূপে হম্বিতম্বি শুরু করেন তখন নিজের বিবেকবোধ শরীর মনে নিদারুণ অস্থিরতা সৃষ্টি করেন।

আমাদের দেশে দুর্নীতি ছিল, এখনো হচ্ছে এবং অতীতের দুর্নীতির ধারাবাহিক গড় প্রবৃদ্ধি পৃথিবীর যেকোনো জ্যামিতিক সূত্রকে বোকা বানিয়ে বাংলাদেশের জনগণের ওপর যে রাহুগ্রাস সৃষ্টি করেছে তা মহাকালের দুর্নীতির ইতিহাসকে ম্লান করে দিয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে অগুরুত্বপূর্ণ ফরিদপুরের মতো একটি জেলা শহরে দুই হাজার কোটি দুর্নীতির টাকা পাচারের অভিযোগে পুলিশ বাদি হয়ে যেভাবে বাবর গংদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে তার নজির যদি ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, কক্সবাজার, কুমিল্লা প্রভৃতি জেলার মতো বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ শহরে দুর্নীতির পাণ্ডাদের অর্থপাচারের নজির খোঁজা হয় তবে ফরিদপুরের বাবরকে নবজাতক বলে মনে হতে পারে। বাবরের দুর্নীতি, তার দুর্নীতির নেপথ্যের অন্য দুর্নীতি এবং ছলচাতুরীর রাজনীতির দাবার চাল নিয়ে কথা না বাড়িয়ে এবার মূল প্রসঙ্গে আলোচনা শুরু করা যাক।

২০০৯ সালের বাংলাদেশে আমি ছিলাম উদাহরণযোগ্য একজন সফল যুবক। আমাদের সমাজে সফলতা বলতে দৃশ্যত যা বোঝায় তার প্রায় সবই আমার মধ্যে ছিল। পরিশ্রমলব্ধ এবং হালাল উপায়ে উপার্জিত অর্থকড়ি, অক্লান্ত পরিশ্রমের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা-দীক্ষা এবং পেশাগত অভিজ্ঞতার পাশাপাশি সুন্দর একখানা স্বাস্থ্য। আল্লাহ প্রদত্ত চেহারাসুরত এবং বাবা-মায়ের কাছ থেকে শেখা পারিবারিক শিক্ষা এবং নিজের রুচি-অভিরুচিসম্মত পোশাক-পরিচ্ছদের কারণে রাজনীতির অঙ্গনের অনেকে আমার দিকে কৌতূহলী দৃষ্টি নিয়ে তাকাতেন। প্রথম দিকে প্রথাগত রাজনীতিবিদরা যেমন আমার দিকে অবাক বিস্ময়ে তাকাতেন তেমনি কিছু দিন পর আমি নিজের নির্বুদ্ধিতা ও অজ্ঞানতার গভীরতা আন্দাজ করে বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে ঝানু ঝানু রাজনীতিবিদের ঢিলেঢালা পাজামা-পাঞ্জাবির দিকে তাকিয়ে ভাবতাম- ইস! ওনারা এতকিছু জানেন কিভাবে এবং রাজ্যের সব গুপ্ত ও উত্তপ্ত বিষয়াদি পাঞ্জামা-পাঞ্জাবির পকেটে ঢুকিয়ে তারা ধীরস্থির শান্ত মেজাজে খোশগল্পে মেতে ওঠেন কিভাবে। কিছু দিন পার হওয়ার পর রাজনীতির জটিলতা-দুর্নীতির কূটিলতা অর্থনীতির সর্বনাশ, আমলাতন্ত্রের পৌষমাস এবং দুর্নীতিবাজদের উদ্দাম নৃত্য দেখার পর মনে হলো- আমি নিতান্তই একজন অথর্ব-অকর্মণ্য এবং বেকুব প্রকৃতির লোক। আমার অর্জিত জ্ঞান বুদ্ধিতে মনে হলো সাধারণ মানের খেলনা পুতুলের মধ্যে যে সফটওয়্যার থাকে যার ফলে পুতুলগুলো সারাক্ষণ বকর বকর করতে থাকে সেই রকম কিছু একটা। আমার অর্থবিত্তের বড়াই সহসাই চুপসে যাওয়া বেলুনের মতো মনে হতে থাকল। নিজের সুন্দর বাড়ি-গাড়ি-শিল্প-কলকারখানা টাকাপয়সা-রাষ্ট্রকে ট্যাক্স ভ্যাট প্রদান করা, ঘন ঘন বিদেশ যাওয়া ইত্যাদি নিয়ে আমার যে পুলক ছিল এবং অন্যদের ছেঁড়া পাঞ্জাবি, গাড়ি-বাড়ি না থাকা, বিদ্যাবুদ্ধির অভাব, স্বাস্থ্য সম্পর্কে অসচেতনতা এবং সব কিছুতে গেঁয়ো ভাব, হাবাগোবা অভিব্যক্তি ইত্যাদি নিয়ে যে অভিযোগ ছিল তা মাত্র এক বছরের মাথায় পুরোপুরি রিভার্স হয়ে গেল। এর প্রধানতম কারণ ছিল প্রথাগত রাজনীতির গোপন কোড এবং দুর্নীতির টরেটক্কা সম্পর্কে আমার অনভিজ্ঞতা অনাগ্রহ এবং অপেশাদারি মনোভাব! কয়েকটি উদাহরণ দিলেই বিষয়টি আপনাদের কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে।

২০০৯ সালের একেবারে প্রথম দিকের ঘটনা। একটি বৈঠকে আমি নিমন্ত্রিত হলাম। উপস্থিত হওয়ার পর দেখলাম আমাদের পালের গোদা-প্রকৃতির ভদ্রলোকের বাসায় আমার মতো চারজন পদবিধারী এবং আরো দু’জন গুরুত্বপূর্ণ কর্তাসহ মোট ছয়জন উপস্থিত। আমি বৈঠকের কারণ এজেন্ডা ইত্যাদি কিছুই জানতাম না। বৈঠকের শুরুতে বিশাল ভূরিভোজ তারপর খোশ দিলে পালের গোদা বললেন, আগামী সপ্তাহে তমুকে এত টাকা বিটমানি দিয়ে যাবে। আমরা সবাই সমানভাগে ভাগ করে নেবো। বিটমানি এবং সেই বিটমানির পরিমাণ শুনে আমার চোখ কপালে ওঠার অবস্থা হলো। পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি টেন্ডারকে ম্যানিপুলেট করে কিভাবে বিটমানি সংগ্রহ করা হবে এবং কিভাবে তা ভাগ বাটোয়ারা হবে এই কথা শুনে আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়লাম। দৈনিক ১৮ ঘণ্টা পরিশ্রম করে সেই ১৯৯১ সাল থেকে ব্যবসাবাণিজ্য করে আমি যে টাকা উপার্জন করেছি সেই টাকার পরিমাণের সাথে বিটমানি অর্জনের সময় এবং বিটমানির পরিমাণের একটি তুলনার হিসাব কষতে গিয়ে আমার মাথায় চক্কর দিলো।

উল্লিখিত অবস্থায় আমার নির্বুদ্ধিতা অভদ্রতা অসৌজন্যতা পুরো বৈঠকের পরিবেশ নষ্ট করে দিলো। এত যতœ করে যারা আমাকে ভূরিভোজ করাল তাদের প্রতি কোনো কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করে আমি যা করলাম তার ফলে অচিরেই সমাজচ্যুত হয়ে পড়লাম যা পরবর্তীকালে আমার জীবনের অনেক কিছুই তছনছ করে দিলো।

দ্বিতীয় যে ঘটনাটি আপনাদের বলব সেটি হলো কমিশন-সংক্রান্ত একটি গল্প। ঘটনাটি কত সালের তা বলা যাবে না। কারণ তাহলে আপনারা হয়তো লোকটিকে চিনে ফেলবেন। তাই সন-তারিখ উল্লেখ না করে শুধু কাহিনী বর্ণনা করব। লোকটির পদ ছিল চিফ ইঞ্জিনিয়ার এবং তিনি যে সংস্থায় কর্মরত ছিলেন সেই সংস্থার চিফ ইঞ্জিনিয়ারের পেছনে আমার মতো পদ-পদবিধারীদের মধ্যে যাদের জিহ্বা লোভের তাড়নায় বের হয়ে থাকে তারা সারাক্ষণ ঘুরঘুর করে। কেউ কেউ দেখা করার জন্য দিনের পর দিন অধীর আগ্রহ নিয়ে বসে থাকে। তো সেই লোক হঠাৎ একদিন ফোন করে অত্যন্ত বিনয়ের সাথে নিবেদন জানান যে, তিনি আমার অফিসে একটু আসতে চান সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য। আমি যেন দয়া করে তাকে একটু সময় দিই এই জন্য তিনি পীড়াপীড়ি করতে থাকেন। আমি ভদ্রলোকের ফোন পেয়ে একাধারে আবেগে আপ্লুত হলাম এবং অন্য দিকে তার আসার কারণ কী হতে পারে এসব চিন্তা করে আকাশকুসুম কল্পনা করতে থাকলাম। কারণ এসব পদকে কেন্দ্র করে যে শক্তিশালী সিন্ডিকেট থাকে যারা অনেককে যেমন মন্ত্রী বানাতে পারে তেমনি অনেকের মন্ত্রিত্ব খেয়ে ফেলতে পারে। সুতরাং কৌতূহলবশত আমি ভদ্রলোককে আমার অফিসে আসার অনুমতি দিলাম।

ভদ্রলোক নির্ধারিত দিনে এলেন এবং তাকে কে পাঠিয়েছেন এবং কেন পাঠিয়েছেন তা ফটাফট বলে ফেললেন। তিনি যা প্রতি মাসে আমার অফিসে এসে দিয়ে যেতে চাইলেন এবং বিনিময়ে কেবল মুখ বন্ধ রাখার নিবেদন জানালেন তাতে আমি খুব দ্রুত হিসাব করে দেখলাম যে, মাত্র ১২ মাস মুখ বন্ধ রাখলে শত কোটির অঙ্ক আমার পকেটে চলে আসবে। তার কথা শোনামাত্র উত্তেজনায় আমার বুদ্ধিনাশ ঘটল। আমি বললাম- আমাকে কি আপনার দরিদ্র এবং ভিক্ষুক বলে মনে হয়? আপনি আমার মেহমান! নইলে অপমান করে বের করে দিতাম। আমার কথায় ভদ্রলোক অপমানিত বোধ করলেন না; বরং আমার শিশুসুলভ বালখিল্য দেখে মুচকি মুচকি হাসলেন এবং ধীরেসুস্থ চা-নাশতা খেয়ে নির্বিকারচিত্তে বিদায় নিলেন। উল্লিখিত ঘটনার মাসখানেক পর তিনি বিনা নোটিশে হঠাৎ উপস্থিত হলেন এবং নিজের ব্যক্তিগত কিছু বিপদের কথা বললেন এবং কথা প্রসঙ্গে জানালেন যে, মুখ বন্ধ করার প্রস্তাব নিয়ে তিনি যার কাছে গিয়েছেন কেউ তাকে নিরাশ করেননি কেবল আমি ছাড়া!

প্রথম ঘটনাটির মতো দ্বিতীয় ঘটনা আমাকে সমাজচ্যুত করেননি বা কোনো বিপত্তিতে ফেলেনি; বরং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সর্বস্তরে আমার মানমর্যাদা ও সম্মান রীতিমতো কিংবদন্তিতে পরিণত হয়। ফলে আজো যদি উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানটির যেকোনো বিভাগে ফোন করি সে ক্ষেত্রে নিম্নতন থেকে ঊর্ধ্বতন পর্যন্ত সবাই সর্বশক্তি দিয়ে আমাকে সাহায্য করার চেষ্টা করে থাকেন।

বিটমানি ও কমিশনের পর আমি যদি টিআর, কাবিখা ইত্যাদি নিয়ে আপনাদের কাহিনী বলা শুরু করি তবে নির্ঘাত একখানা আরব্য রজনীর উপন্যাস রচিত হয়ে যাবে। সুতরাং কাহিনীর পরিধি না বাড়িয়ে শিরোনাম প্রসঙ্গে হালকা-পাতলা কিছু বলে আজকের নিবন্ধ শেষ করব। বাংলাদেশের দুর্নীতি ইদানীংকালে এমন এক স্তরে পৌঁছে গেছে এবং দুর্নীতির কলাকৌশল এবং ব্যাপ্তি এতটা আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে সারা দেশের আনাচেকানাচে ছড়িয়ে পড়েছে যে, মহাবিশ্বের দুর্নীতির ইতিহাসে রীতিমতো নতুন মাইলফলক সৃষ্টি হয়ে গেছে। এ দেশের দুর্নীতির বরপুত্ররা ইতোমধ্যে বিশ্বদুর্নীতির মানসপিতারূপে পূজিত হচ্ছে এবং অনেক দুর্নীতিবাজের প্রতিমূর্তি তৈরি করে সমুদ্রের জলদস্যু, বনভূমির, মরুভূমির এবং বরফের রাজ্যের চোর-ডাকাতরা নিজেদের কর্মে সফলতা লাভের আশায় সেসব মূর্তির অর্চনা শুরু করে দিয়েছে।

লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য

Print Friendly, PDF & Email
 
 
স্বাধীন খবর ডটকম/আ আ
 

জনপ্রিয় সংবাদ

 

সর্বোচ্চ পঠিত সংবাদ

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
error: Content is protected !!
WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
error: Content is protected !!