দেশের জনগণ এবং বর্তমান সরকার এখন মুখোমুখি
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
মঙ্গলবার, জুলাই ২৬, ২০২২ ৭:২২ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
মঙ্গলবার, জুলাই ২৬, ২০২২ ৭:২২ অপরাহ্ণ
নিউজ ডেস্ক
দেশের জনগণ এবং বর্তমান সরকার এখন মুখোমুখি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল।
দেশের সমসাময়িক নানা বিষয়ে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন।
দেশে চলমান রাজনীতি নিয়ে কিছু বলুন?
আজিজুল বারী হেলাল: দেশে বর্তমান এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা চলছে, জনগণের উপর নিষ্পেষণ চালাচ্ছে এই অবৈধ সরকার। আবার দেশের জনগণ, দেশের বিরাট একটি দলকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করার পাঁয়তারা করছে। আর সেই জন্য দেশের জনগণ আন্দোলন করছে। দেশের জনগণ এবং এই সরকার এখন মুখোমুখী।
আপনি কি মনে করেন, বিএনপির রাজনীতি সঠিক পথে আছে?
আজিজুল বারী হেলাল: বিএনপির রাজনীতি অবশ্যই সঠিক পথে আছে। বিএনপি’র জন্ম হয়েছে বাংলাদেশকে সঠিক পথে আনার জন্য। ’৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের যে মূলমন্ত্র ছিল সেগুলো বাদ দিয়ে ৭২ সংবিধান তৈরি করা হয়েছিল। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ’৭৮ সালে ক্ষমতায় এসে দেশের জনগণ যে জন্য যুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছিল সেই মূল মন্ত্রগুলো ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। এখন আবার দেশের গণতন্ত্র স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে আর বিএনপি সেগুলো ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছে। বিএনপি কখনো পদচ্যুত হয়নি, দলটি সঠিক পথে আছে,পদচ্যুত হয়েছে আওয়ামী লীগ। যে জন্যে দেশ স্বাধীন করা হয়েছে সেই পথ থেকে সরে দাঁড়িয়েছে আওয়ামী লীগ।
বিএনপি কেন ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না?
আজিজুল বারী হেলাল: ২০১৪ সালে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতত্বে সারাদেশে ১৫৪ টি সিটে কোন লোক নির্বাচন করে নাই। ২০১৪ সালে বেগম খালেদা জিয়া ১৫৪ টা সিটে জয়লাভ করেছে। এখানে মল্লযুদ্ধে আমন্ত্রণ করলে তো হবে না। রাষ্ট্রের একটা শক্তি আছে। যেটাকে জনগণ চ্যালেঞ্জ করতে পারে না। রাষ্ট্রের যে মূল শক্তি আছে, এছাড়া আরও বাহিরের শক্তি এই শক্তির সাথে জনগণ চ্যালেঞ্জ করতে পারে না। কারণ জনগণ ল অ্যান্ড অর্ডার মানে। আর বিএনপি সব সময় সামনের দরজা দিয়ে আসে। সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে। কেউ বলতে পারবে না বিএনপির পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসে। আর বিশেষ করে জনগণ বিএনপি’র সাথে আছে এটাই তো বিএনপি’র ঘুরে দাঁড়ানো। এখন যদি কামান-বন্দুক নিয়ে নামতে বলেন এটা তো মল্লযুদ্ধের ডাক, যেটা আমাদের সংবিধান ও মানবিকতার মধ্যে নেই। বিএনপি জনগণের জন্য কাজ করে। আর জনগণ বিএনপি’র পক্ষে আছে বলেই এ অনির্বাচিত সরকারের পক্ষে যায় না তাদের পক্ষে কথা বলে না।
বিএনপি ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে কিনা আপনি বিএনপি’র জনসমাবেশ গুলো দেখলে বুঝতে পারবেন। বিএনপি’র জনসমাবেশে মানুষের ঢল নামে সরকারের এবং পুলিশের সব বাধা অতিক্রম করে জনসমাবেশে আসে। আর সরকার এত টাকা খরচ করেও তাদের সমাবেশে লোক হয় না। এই জন্য বিএনপি’র সমাবেশকে পণ্ড করার চেষ্টা করে সরকার। পদ্মাসেতু উদ্বোধনের সময় শেখ হাসিনা বলেছিলেন ১০ লাখ লোক হবে, সেখানে ১০ হাজার লোক হয়েছিল কিনা সন্দেহ আছে। আর আমাদের যে কোন নেতা ডাক দিলেই সেখানে হাজার হাজার লোক হয়। টাকা দিয়ে জোর করেও তারা লোক আনতে পারে না।
আপনাদের দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন কারাবন্দী তার মুক্তির জন্য কার্যকর আন্দোলন কেন হচ্ছে না?
আজিজুল বারী হেলাল: কার্যকর আন্দোলন হয় নাই এটা আপনি বলতে পারেন না। ২০১৮ সালে যখন তিনি বন্দী হন তখন থেকেই আমরা কার্যকর আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। রাষ্ট্র ফরমাল-ইনফরমাল সব শক্তি ব্যবহার করছে সবকিছু সরকারের হাতে। আমাদের নেত্রীকে জোর করে আটক করে রাখা হয়েছে। এখন আমরা সরকারের মুখোমুখি যখন ভোটের মাধ্যমে সরকারকে পরাজিত করতে পারবো তখন আমাদের নেত্রী এমনিতেই বের হয়ে আসবে। বর্তমান আমাদের মূল দাবি হলো বর্তমান অনির্বাচিত অবৈধ সরকারকে পতন করা। এবং তার পতনের মাধ্যমে আমাদের নেত্রী মুক্তি পাবে।
আগামী নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে হলে আপনাদের করণীয় কি হবে?
আজিজুল বারী হেলাল: আমরা আগেও বলেছি এখনও বলছি দলীয় সরকারের অধীনে, এই হাসিনা সরকারের অধীনে আর কোন নির্বাচনে আমরা যাব না। আমরা তো যাবই না আমাদের শরিক দলরাও যাবেনা। এবং অন্যান্য দলদেরকে ও আহ্বান জানিয়েছি যাতে নির্বাচনে না যায় যে যাবে সে জাতীয় বেঈমান হবে। ’৮৬ সালে এরশাদকে যেভাবে এক ঘরোয়া করা হয়েছিল কিন্তু আওয়ামী লীগ গিয়েছিল। ফের নির্বাচনে গিয়ে তাদের কোন লাভ হয় নাই পরবর্তীকালে ফিরে এসেছিল। সামনের এই নির্বাচনে আমরা তো যাবোই না অন্য কোন দলও যাবে না। এমনকি আই হ্যাভ ডাউট আওয়ামী লীগ যে মহাজোট গঠন করেছে সেখানকার অনেক দল মনে হচ্ছে যাবে না। কারণ অলরেডি নির্বাচন কমিশন বলেছে প্রয়োজনে সে পদত্যাগ করবে। আবার সে (নির্বাচন কমিশনার) এই নির্বাচন সুষ্ঠু করতে গেলে বন্দুক ও রাইফেলের দরকার আছে। এ থেকে বোঝা যায় অঘোষিত যুদ্ধের ঘোষণার কথা বলেছে। এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না এবং জনগণ এই নির্বাচন প্রতিহত করবে।
বাংলাদেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মত হওয়ার আশঙ্কা আছে কী?
আজিজুল বারী হেলাল: বাংলাদেশের অবস্থা বাংলাদেশের মতোই হবে। যেমন কাজ করব তেমন ফল পাবে। এ সরকার শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। বিভিন্ন লুটপাট করে তাদের নেতাকর্মীদের পকেট ভারি করেছে। রাষ্ট্রের সম্পদ শূন্য হয়ে গেলে জনগণ তো ফুঁসে উঠবে। আমরা চাই না বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার মত হোক। যে দেশের জন্য শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল যে দেশ তিনি নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন, দেশ নায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা সেই রকম দেশ গড়ে তুলবো। আমরা কোনভাবেই বাংলাদেশকে শ্রীলঙ্কা হতে দেবো না।
আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আজিজুল বারী হেলাল: ধন্যবাদ।