প্রধানমন্ত্রীর এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছেন নির্বাচন কমিশনার : রিজভী
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
মঙ্গলবার, মার্চ ২২, ২০২২ ১০:০৬ পূর্বাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
মঙ্গলবার, মার্চ ২২, ২০২২ ১০:০৬ পূর্বাহ্ণ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধান দিয়ে সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয় মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এজেন্ডা বাস্তবায়নে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজ করছেন।
তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞরা বলেছেন সংবিধান একটি জাতির আত্মজীবনী। কিন্তু বাংলাদেশের সংবিধান শেখ হাসিনা আত্মজীবনী।
মঙ্গলবার (২২ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে, নিরপেক্ষ নির্বাচন ও চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, মানুষকে ভয় দেখিয়ে মানুষকে নিরুদ্দেশ করে আবারও নিশিরাতের ভোট ডাকাতির আয়োজন করা হচ্ছে। এ কারণে কাছের লোকদের দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে সরকার। সে কমিশন প্রথম প্রথম বলছে সব রাজনৈতিক দল নির্বাচন করবে, আবার এখন বলছে সংবিধানের বাইরে যেতে পারবে না।
তিনি বলেন, আজকে যদি দেশে জবাবদিহিতা থাকতো তাহলে অনেক কিছুই ঘটতো না। জবাবদিহিতা না থাকায় দেশের মন্ত্রীরা কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্য রাখেন। ভোট ব্যবস্থাকে তারা কবরস্থ করেছেন। জনগণ খেলো কি বাঁচল- এতে তাদের কিছু যায়-আসে যায় না।
বিএনপির এ অন্যতম মুখপাত্র বলেন, অষ্টাদশ শতাব্দিতে যখন ফরাসি বিপ্লব চলছিল তখন সেখানকার রাজার রানি ছিলেন হাছান মাহমুদের (আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশের তথ্য মন্ত্রী) মতো। নিজে বিত্ত-বিলাসের মধ্যে থাকলেও মানুষের পেটে ক্ষুধার আগুন নিয়ে রানির কোনো ভ্রুক্ষেপ ছিল না। রানি তো আরাম-আয়েশে ঝাড়বাতির নিচে থাকেন আর পোলাও-কোর্মা-রোস্ট খান। মানুষের মিছিল দেখে রানি কর্মচারীকে জিজ্ঞেস করেছিল, এটা কিসের শব্দ। কর্মচারী বলেন- ওরা রুটি খেতে না পেয়ে মিছিল করছে। উত্তরে রানি বলেছিলেন- রুটি না খেতে পারলে কেক খেতে বলো।
রিজভী বলেন, হাছান মাহমুদও এরকমই আচরণ করছেন। দেশের পরিস্থিতি চালে-ডাল নিত্যপণ্যের দাম কত এটা উনারা জানেন না। কারণ তাদের জানার দরকার পড়ে না। তাদের তো প্রচুর টাকা।
বিএনপির এ নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমি নিশ্চিত করেছি বাড়িতে বাড়িতে আলো পৌঁছে দেওয়ার। প্রধানমন্ত্রী আপনি জানেন না চাল কিনতে না পেরে ডাল কিনতে না পেরে আলু কিনতে না পেরে ওই ক্ষুধার্ত মা যখন সন্তান বিক্রি করে তখন সে তার চোখে আলো দেখে না, গভীর অন্ধকার দেখে। আপনি সেই অন্ধকার দেখেননি, তাই আপনি গোটা জাতিকে নিয়ে মশকরা করছেন। আর বলছেন ঘরে ঘরে আপনি আলো জ্বালানোর ব্যবস্থা করেছেন, বিদ্যুৎ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে রিজভী আরও বলেন, আপনি দেখেননি- সামান্য কম দামে পণ্য কিনতে মানুষ টিসিবির ট্রাকের সামনে হুমড়ি খাচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকছে। দিনভর দাঁড়িয়ে থেকেও চাল-ডাল না পেয়ে অনেকে খালি হাতে ফিরছেন। আপনি টিসিবির লাইনে দাঁড়ানো সেই মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের হাহাকার শুনেননি। আপনি আলো জ্বালানোর কথা বলেন, কিন্তু মানুষের ক্ষুধার জ্বালা দেখেন না।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর (র্যাবের সাবেক ও বর্তমান শীর্ষ ৭ কর্মকর্তার) ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ব্যাপারে রিজভী বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় গুম খুন কমেছে। কিন্তু গতকাল একটি অনলাইনে টকশোতে দেখলাম বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে গুম-খুন আবার বেড়েছে এবং জাতীয় নির্বাচনের আগে আরও বাড়তে পারে।
বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন, তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক রিয়াজউদ্দিন ঋজু, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমসহ বিএনপি নেতাকর্মী ও বিভিন্ন জেলার শিক্ষকরা।
স্বাধীন খবর ডটকম/আ আ
