• আজ রাত ৯:৪১, শনিবার, ৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২রা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
  • shadinkhobor24@gmail.com
  • ঢাকা, বাংলাদেশ

প্রেমিকের ফোনকল রেকর্ড সূত্র ধরে কাজ শুরু করে পুলিশ বিভাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ: বৃহস্পতিবার, মার্চ ১৭, ২০২২ ৯:৫৭ পূর্বাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ: বৃহস্পতিবার, মার্চ ১৭, ২০২২ ৯:৫৭ পূর্বাহ্ণ

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে নাপা সিরাপ খাওয়ার পর দুই শিশুর মৃত্যু হয়নি। তাদের মা লিমা বেগম বিষ খাইয়ে হত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। পরকীয়ার জেরে মিষ্টির সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে তাদের হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় শিশুদের বাবা ইসমাইল হোসেনের মামলায় লিমাকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে মায়ের কথিত পরকীয়া প্রেমিকের ফোনকল রেকর্ড সূত্র ধরে কাজ শুরু করে পুলিশ বিভাগ। হত্যার পরিকল্পনাকারী শ্রমিক সর্দার শফিউল্লাহকে খুঁজছে পুলিশ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন বলেন, দুই শিশুর মা লিমা বেগম চাতাল কলে কাজ করতেন। সেই সূত্রে শ্রমিক সর্দার শফিউল্লাহর সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্কে জড়ান তিনি। একপর্যায়ে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন তারা। তবে এক্ষেত্রে বাধা ছিল শিশু ইয়াসিন খান (৭) ও মুরসালিন খান (৪)। পরে লিমা এবং তার পরকীয়া প্রেমিক পরিকল্পনা করেন শিশুদের হত্যার। এর অংশ হিসেবে ঘটনার দিন মিষ্টির সঙ্গে বিষ মিশিয়ে দুই শিশুকে খাওয়ান তাদের মা। পরে ঘটনাটিকে অন্যদিকে প্রবাহিত করতে বিষ খাওয়ানোর এক ঘণ্টা পর দুই শিশুকে নাপা সিরাপ খাওয়ান লিমা। গ্রেফতারের পর ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির জন্য লিমাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে পাঠানো হয়েছে।

আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজাদ রহমান বলেন, মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও দুজনকে আসামি করা হয়েছে। বুধবার রাতেই শিশুদের মাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সুজনের স্ত্রী-লিমা যে চাল মিলে কাজ করে, ওই মিলের সরদারের কাছে তার ব্যক্তিগত একটি সিমকার্ড আছে বলে শিশুদের মামার সূত্রে জানিয়েছিলেন।

এর আগে মৃত শিশুদের পরিবার ভিন্ন-ভিন্ন বক্তব্য নিয়েও কথা উঠে। তারা একেক সময় একেক ধরনের বক্তব্য দিচ্ছিলেন। তারা জানান, জ্বরের জন্য আনা ওষুধ খাওয়ার পর বমি করে ওই দুই শিশু। প্রথমে আশুগঞ্জ ও পরে জেলা সদর হাসপাতালে তাদেরকে আনা হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পথে একজন পরে বাড়িতে আরেকজন মৃত্যু হয়।

শিশুদের মা লিমা বেগম শুরু থেকেই অভিযোগ করছিলেন, সিরাপ খাওয়ানোর পর অসুস্থ হয়ে যাওয়া দুই শিশুকে প্রথমে আশুগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরবর্তীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে শিশুদেরকে বাড়িতে নিয়ে বেশি করে তেতুলের পানি খাওয়ানোর পরামর্শ দেন। পরে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পথে এক শিশু এবং বাড়িতে নেওয়ার পর আরেক শিশুর মৃত্যু হয়।

তবে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্মরত স্বপন মিয়ার দাবি ছিল, তাদের হাসপাতালে ভর্তি ও পাকস্থলি ওয়াশের কথা বলা হলেও কি কারণে তারা চিকিৎসা না নিয়ে চলে গেলো সে বিষয় কিছু বলে যায়নি।

এদিকে ঘটনার পর থেকে সিরাপ বিক্রেতা ‘মা ফার্মেসির’ মালিক মঈন উদ্দিন পরিবারসহ পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তারা কোথায় আছেন সে বিষয়েও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তবে এখনও মঈন উদ্দিনকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে ওষুধের দোকানটি সিলগালা করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ১০ মার্চ আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের ইসমাঈল হোসেনের দুই ছেলে ইয়াছিন ও মোরসালিন নাপা সিরাপ খেয়ে মারা যায় বলে অভিযোগ তোলেন স্বজনরা। এ ঘটনায় ওষুধ প্রশাসন সিরাপের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা চালায়। কিন্তু সেই সিরাপে ক্ষতিকর কিছু পায়নি কর্তৃপক্ষ।

Print Friendly, PDF & Email
 
 
স্বাধীন খবর ডটকম/আ আ
 

জনপ্রিয় সংবাদ

 

সর্বোচ্চ পঠিত সংবাদ

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
error: Content is protected !!
WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
error: Content is protected !!