প্রেমের টানে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ছুটে এসেছেন নেপালি মেয়ে অনুদেবী ভুজেল
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
রবিবার, মার্চ ১৩, ২০২২ ৮:১৯ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
রবিবার, মার্চ ১৩, ২০২২ ৮:১৯ অপরাহ্ণ
গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি-মাতৃভূমিকে এমন ভালোবাসার ছোঁয়ায় দুলছে বিশ্বময়। চিরসবুজ আর প্রকৃতির বিশ্বসুন্দরের লীলাভূমি সুন্দরবন আর কক্সবাজারের মতো অপরূপ সাজে সজ্জিত এ মাতৃছায়ায় প্রেমের টানে বিদেশীদের আগমন তেমনটাই জানান দিচ্ছে।
এবার প্রেমের টানে পাহাড়-পর্বত আর সমুদ্র অতিক্রম করে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ছুটে এসেছেন নেপালি মেয়ে অনুদেবী ভুজেল।
উপজেলার সহনাটী ইউনিয়নের হাতিয়ার গ্রামের প্রেমিক পুরুষ পলাশ পালের প্রেমের নৌকায় পাল তুলে উড়ছেন তিনি। রোববারও প্রেমিক-প্রেমিকা দেখার জন্য উৎসুক জনতার ভিড় যেন লেগেই আছে।
অনুদেবী ভুজেলকে নিজের মেয়ে হিসেবে বরণ করেছেন বরের কাকা রণজিত কুমার পাল ও বরের কাকিমা অনুশ্রী পাল। এ বাংলায় ভুজেল এর নতুন বাবা-মা হয়েছেন তারা। ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী কন্যাদানে মেয়ের ভাই হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বরের ভাই শিব শংকর পাল।
অপরদিকে শনিবার আনন্দ উৎসবের মধ্যে দিয়ে হিমালয় কন্যাকে বরণ করেছেন পলাশ পালের বাবা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নিতাই চন্দ্র পাল ও মা পূর্ণিমা রাণী পাল। নববধূকে পেয়ে আনন্দে ভাসছেন শাশুড়ি পূর্ণিমা রাণী পাল। তিনি জানান, আমার ঘর আলোকিত করেছে। ও আমার গৃহে শুধু বধূ নয়, আমার কন্যা।
নববধূ আর বরকে আশীর্বাদ করেন জাতীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ এমপি, আওয়ামী লীগ নেতা মোর্শেদুজ্জামান সেলিম, জেলা পরিষদ সদস্য এইচএম খায়রুল বাশার, সহনাটী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান, বরের প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, বন্ধু ও এলাকাবাসীও।
বর পলাশ পাল জানায়, কর্মের জন্যে সিঙ্গাপুরে যান তিনি। একটি বেসরকারি কোম্পানিতে তিনি চাকরি করতেন। কর্মসূত্র ধরেই অনুদেবী ভুজেলার আড়াই মিনিটের এক টিকটকের অভিনয় তার মন ছুঁয়ে যায়। সেই থেকে টক-ঝাল আর মিষ্টিময় এক সম্পর্কে জড়িয়ে যান তারা দুজন। দুজনের আকর্ষণ বাড়লেও মেয়ের পরিবারের ঘটে বিকর্ষণ।
ভিনদেশী হওয়ায় চরম বাধা হয়ে দাড়ায় তার পরিবার। তবে ভালোবাসার গল্পের কাছে হার মানে সকল বাধা। লাল-সবুজ খচিত বিমানে উড়ে ৭ মার্চ অনুদেবী প্রবেশ করেন বাংলাদেশে।
বাংলাদেশের রূপ আর বরের পরিবারের আপনজনদের আচরণে মুগ্ধ নববধূ অনুদেবী। তিনি জানান, ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করতে পেরে খুব খুশী।
তিনি আরও জানান, তার বাবা টেক বাহাদুর ভুজেল ভারতীয় ও মা সোমা দেবী ভুজেল নেপালি। বাবার বাড়ি ভারতের পশ্চিমবাংলার দার্জিলিং জেলার নকশালবাড়ি। তাদের বর্তমান নিবাস নেপালে। দুই বোনের মধ্যে তিনি ছোট। বড় বোনের বিয়ে হয়েছে নেপালেই।
অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি বলেন, পলাশ আমার ছোট ভাই। আগে আমরা চার ভাইবোন ছিলাম। আজ এ সংখ্যাটা শুধু বেড়ে গেল মাত্র। ওর পছন্দের বিষয়টি আগেই জানা ছিল। সাতপাকের মধ্যে দিয়ে নববধূকে ঘরে তুলে নেয়া হয়েছে। ওদের জন্য সবার নিকট আশীর্বাদ চাই।
তিনি আরও জানান, নববধূ তার পরিবারের সঙ্গে ভিডিওকলে কথা বলেছেন, তারাও খুশি। আমরাও খুশি। ওর কথা আর আচরণ খুব মিষ্টি। খুব ভালো লাগে। ওকে আমাদের করে নিয়েছি। ওর সঙ্গে আমরা এভাবেই মিশে গেছি ও যেন ওর পরিবারের অভাবটা কখনও অনুভব করতে না পারে।