ফ্রন্টলাইনে মেয়র আরিফ সিলেট বিএনপিতে নতুন মেরূকরণ
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
মঙ্গলবার, মার্চ ১, ২০২২ ৬:০৫ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
মঙ্গলবার, মার্চ ১, ২০২২ ৬:০৫ অপরাহ্ণ
ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
ফ্রন্টলাইনে মেয়র আরিফ। হঠাৎ করেই জানান দিচ্ছেন। সামনে জেলা বিএনপি’র সম্মেলন। সভাপতি প্রার্থী হতে যাচ্ছেন; এমন আভাস মিলেছে। এ কারণে সিলেট জেলা বিএনপি’র সম্মেলন ও কাউন্সিলকে ঘিরে নতুন করে আমেজ তৈরি হয়েছে। আগে থেকেই মাঠে সাবেক সভাপতি আবুল কাহের শামীম ও আহ্বায়ক কমিটির সিনিয়র সদস্য আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী। মাঝখানে এসেছে কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুর রাজ্জাকের নাম। কিন্তু মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নাম আসার পর নানা হিসাবনিকাশ চলছে সিলেট বিএনপিতে।
আরিফুল হক চৌধুরী এখন সিলেট বিএনপি’র একাংশের শীর্ষ নেতা। অন্য অংশে রয়েছেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির। ফলে দুই ধারায় বিভক্ত সিলেট বিএনপি। এই অবস্থায় জেলা বিএনপি’র সম্মেলন ও কাউন্সিলকে ঘিরে প্রকাশ্যেই মাঠে নামলেন আরিফ। হিসাবে রয়েছে জটিল সমীকরণ। সিলেট বিএনপিতে অনেকেই বঞ্চিত হচ্ছে। আর এই বঞ্চিতরা আশ্রয় নিয়েছেন আরিফের কাছে। ফলে আরিফের লড়াই নিয়ে নানা আলোচনার ডালপালা মেলতে শুরু করেছে। দলীয় নেতারা জানিয়েছেন, আরিফুল হক চৌধুরী সভাপতি পদে প্রার্থী হলে আরেক কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুর রাজ্জাক প্রার্থী নাও হতে পারেন। কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে আরিফুল হক চৌধুরীর সঙ্গে আব্দুর রাজ্জাকের বুঝাপড়া ভালো। তবে জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটি সিনিয়র সদস্য ও যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী প্রার্থী হচ্ছেনই। তিনি এরই মধ্যে জেলার ইউনিট সম্মেলনেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। আর সাবেক সভাপতি আবুল কাহের শামীম শক্তিশালী প্রার্থী। তিনি আহ্বায়ক কমিটির প্রথম সদস্য হিসেবে দল গোছানোর কাজে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়েও চলছে তুমুল লড়াই। এবারের কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রার্থী হতে যাচ্ছেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ। পারিবারিক কাজে ছিলেন লন্ডনে। ফিরে এসেছেন। এসেই দলীয় কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হয়েছেন। যেসব উপজেলায় সম্মেলনের বাকি ছিল সেগুলোও শেষ করা হচ্ছে তারই হাত ধরে। বলা হচ্ছে; আলী আহমদ শক্তিশালী প্রার্থী। পূর্বের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার কারণে তার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। কিন্তু আলী আহমদকে সহজে ছাড় দিতে চান না আরও কয়েকজন। তারাও এরই মধ্যে মাঠে সক্রিয়। এর মধ্যে রয়েছেন আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এমরান আহমদ চৌধুরী, জেলা বিএনপি নেতা কামরুল হাসান শাহীন ও আব্দুল আহাদ খান জামাল। শুরু থেকে দল গোছাতে তারা মাঠে ব্যস্ত ছিলেন। এখন তারা কাউন্সিলরদের কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন। আলী আহমদের সঙ্গে মাঠে লড়াইয়ে নামতে ইতিমধ্যে কাউন্সিলরদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখছেন জেলা বিএনপি নেতা কামরুল হাসান শাহীন। ইউনিট সম্মেলনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। এমরান আহমদ চৌধুরী জেলা বিএনপি’র সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়ার কারণে তৃণমূলে রয়েছে তার গ্রহণযোগ্যতা। আব্দুল আহাদ খান জামালও ছিলেন জেলার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। নতুনদের মধ্যে তিনিও তৃণমূলে প্রভাব বিস্তার রেখে চলেছেন। সিলেট জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার জানিয়েছেন, জেলা বিএনপি’র সম্মেলন ও কাউন্সিলের জন্য তারা প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। দু’তিনটি উপজেলার সম্মেলন ও কাউন্সিল বাকি আছে। সেগুলোও শেষ করা হচ্ছে। খুব দ্রুতই তারা জেলার সম্মেলন ও কাউন্সিল শেষ করতে চান। এ নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তিনি জানান, জেলা বিএনপি’র সম্মেলন ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কাউন্সিলের মাধ্যমেই গঠন করা হয়েছিল। এ কারণে এবারো কাউন্সিলের মাধ্যমে গঠন করা হবে। কাউন্সিলরদের ভোটে যারাই নির্বাচিত হবেন তারাই নতুন নেতৃত্বে আসবে। এখানে সর্বোচ্চ মতামত থাকছে কাউন্সিলরদের হাতেই। সিলেট জেলা বিএনপি’র বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির বয়স আড়াই বছরের উপরে। ২০১৯ সালের ৩রা অক্টোবর পূর্বের জেলা কমিটি ভেঙে নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এরপর বলা হয়েছিল দ্রুততম সময়ে সম্মেলন ও কাউন্সিল শেষ করা হবে। কিন্তু করোনা সহ নানা কারণে এই সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি। তবে জেলার নেতারা জানিয়েছেন, আহ্বায়ক কমিটি দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালনে থাকলেও তারা জেলার ভেতরে দলের তৃণমূল গোছাতে কাজ করেছে। প্রথমে ওয়ার্ড, এরপর ইউনিয়ন, উপজেলা পর্যায়ে কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে করে বিএনপি তৃণমূলে শক্তিশালী হয়েছে। এতে করে নেতারাও চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন।