বরিশালে বিএনপির গণসমাবেশ খলিল সরদাররা কেন সমাবেশে এলেন
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
শনিবার, নভেম্বর ৫, ২০২২ ৫:২৩ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
শনিবার, নভেম্বর ৫, ২০২২ ৫:২৩ অপরাহ্ণ
আনমনা হয়ে সমাবেশের মাঠে শুয়ে ছিলেন খলিল সরদার। সকাল ছয়টার দিকে মাঠে ঘুমানো মানুষের ছবি তুলতে গিয়ে সামনে পড়লেন তিনি। পরনে লুঙ্গি, গায়ে গরম কাপড়। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে নাম-পরিচয় জানার পর জানা গেল ট্রলারে করে গতকাল শুক্রবার মধ্যরাতে বরিশালে পৌঁছেছেন। শীতের রাতে অনেকের সঙ্গে অবস্থান নেন মাঠে। অনেক কথার পর তাঁর কাছে প্রশ্ন ছিল, এত কষ্ট করে কেন এলেন?
জবাবে খলিল সরদার বলেন, ‘এখন চাউলের কেজি ৬০ টাকা, ৭০ টাকা। চিনির কেজি কিনতে হয় ১২০ টাকা দিয়া। ডাল কিনতে হয় ১২০ টাকা দিয়া, তৈল কিনতে হয় ২০০ টাকা দিয়া। কাজ কইরা ভাত খাইতে পারতেছি না। তয় আমি কীভাবে চলব, কীভাবে খাব। এই জন্য আমি বিএনপির সাথে যোগ দিছি।’
মো. খলিল সরদার (৬০) এসেছেন বাকেরগঞ্জ উপজেলার বড় রঘুনাথপুর থেকে। তাঁরা একসঙ্গে ১০০ জন এসেছেন। খলিল পেশায় একজন কৃষক। তাঁদের এক ছেলে ও দুই মেয়ে আছে।
সমাবেশে একজন কৃষকের যোগদানে কি কোনো পরিবর্তন হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে কৃষক খলিল বলেন, ‘পরিবর্তন হইতেও পারে। আমার না হোক আমার ছেলেমেয়ের হবে। আমার মেয়েকে খুবই কষ্ট কইরা আমি পড়াইতাছি। এ বছর মাস্টার্সে ভর্তি হবে। ছেলেটাকে এ বছর বিএ পাস করাইছি। একটা মেয়ে নাইনে পড়ে। বাজারসাজার নিয়া হে গো চালাইতে আমার খুবই কষ্ট হইতেছে।’
খলিল সরদার জানান, সবকিছুর দাম বাড়তি। কাজেকর্মে, ব্যবসা-বাণিজ্যে কোথাও শান্তি নেই। সবদিকে মানুষ কষ্ট করছে। এলাকার পরিস্থিতি জানতে চাইলে খলিল সরদারের জবাব, ‘এলাকার পরিস্থিতি এ রকমই। আগে যারা ছিল ওইটা (আওয়ামী লীগ) এখন মনে করেন তারাও চলে আসছে যে আমাদের সামনে তো আরও দুর্ভাগ্য হইতে পারে, শেখ হাসিনা সাব (সাহেব) নিজের মুখেই বলছেন, সামনে আরও দুর্ভাগ্য (দুর্ভিক্ষ) হইত পারে। তই এখন আমরা সাধারণ পাবলিক দেখতাছি তো ঠিকই, আজকে দর হয় একটা, কালকে দর একটা। ঘণ্টায় ঘণ্টায় মালের দাম বাড়তি হয়।’
সরকার পরিবর্তন হলে কি দুর্ভিক্ষ কমবে? জবাবে খলিল বললেন, ‘দুর্ভাগ্য (দুর্ভিক্ষ) হয়তো কমে যাইতেও পারে। মনে করেন, এখানে দশের লগে থাইকা আগাই দেওয়ার জন্য আসছি আর কী।’