বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ সড়ক অবরোধ
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
শুক্রবার, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২২ ৭:৫৯ পূর্বাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
শুক্রবার, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২২ ৭:৫৯ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) এক শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে গোপালগঞ্জ আড়াইশ’ বেড জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার চেয়ে থানা ঘেরাও ও ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রাজিউর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৭-৮ জনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করলে ৩ জনকে আটক করে পুলিশ।
জানা গেছে, বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ধর্ষণের শিকার ওই শিক্ষার্থী তার বন্ধুর সঙ্গে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নবীনবাগ এলাকার হেলিপ্যাডের সামনে থেকে হেঁটে আসছিলেন। পথিমধ্যে এক অটোরিকশা থেকে তাদের তুলে নেয়া হয়। পরবর্তীতে ৭-৮ জন মিলে তাদের গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন স্কুল ও কলেজের নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে যায়। সেখানে শিক্ষার্থীর সঙ্গে থাকা সহপাঠীকে তারা মারধর করে এবং তাকে ধর্ষণ করে।
খবর পেয়ে ধর্ষকদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বশেমুরবিপ্রবি ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষুব্ধ প্রায় হাজারখানেক শিক্ষার্থী গোপালগঞ্জ সদর থানায় অবস্থান নেন এবং ধর্ষকদের বিচার চেয়ে ৩ দফা দাবি ও আল্টিমেটাম দেয়। আল্টিমেটামে সকাল ৬টার মধ্যে অপরাধীকে শনাক্ত এবং গ্রেপ্তারের দাবি জানান বিক্ষুপ্ত শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে ধর্ষকদের গ্রেপ্তার ও উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে গতকাল সকাল সাড়ে ৬টার পর থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোপালগঞ্জের ঘোনাপাড়া নামক স্থানে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। অবরোধকারী শিক্ষার্থী বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র গোলাম রসুল বলেন, বুধবার রাত সাড়ে ৯টার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী ও তার বন্ধুকে ইজিবাইকে এসে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নির্মাণাধীন ভবনে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বন্ধুকে আটকে রেখে মারধর করা হয়। তখন ওই ছাত্রী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। ঘটনার পরে ভুক্তভোগী ছাত্রী মেসে গিয়ে বন্ধুদের ঘটনাটি জানায়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানানো হলে তারা তাকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ আড়াইশ’ বেড জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। এদিকে গতকাল ধর্ষণের ঘটনায় ৩ জনকে আটকের পর অবরোধস্থলে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তারা আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে শিক্ষার্থীদের অবরোধ তুলে নেয়ার অনুরোধ জানান। কিন্তু সন্দেহভাজন নয়, সুনির্দিষ্ট অপরাধীরা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীরা। পরবর্তিতে আটক ৩ জনকে প্রক্টরের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃরা হলেন- শহরতলীর সোনাকূড় গ্রামের পিয়াল (২২), সুইপার কলোনীর অন্তর (২২) এবং জীবন (২৩)। আটকদের মধ্যে অন্তর ও জীবন পরিচ্ছন্নতাকর্মী। তাদের আটকের ঘটনায় শহরের অন্যান্য পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা নবীনবাগে রাস্তার উপর আবর্জনা ফেলে অবরোধ করে। এ সময় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গেলে তারা অশ্লীল আচরণ করে সংবাদ সংগ্রহে বাধা দেয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রাজিউর রহমান বলেন, খবর পেয়ে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছি এবং আমি নিজে এ ঘটনায় বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেছি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ অ্যান্ড অপারেশন) নিহাদ আদনান তাহিয়ান বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে অভিযান চালানো হয়েছে। আমাদের টিম ইতিমধ্যে অভিযান শুরু করেছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা সকল অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবো।