বাংলাদেশে মনুষ্যত্বহীন সকল কর্মকাণ্ডের জননী হচ্ছেন শেখ হাসিনা: রিজভী
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
রবিবার, নভেম্বর ৬, ২০২২ ২:৪৬ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
রবিবার, নভেম্বর ৬, ২০২২ ২:৪৬ অপরাহ্ণ

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘মানবতাবিরোধী এক স্বৈরশাসকের নাম শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে মনুষ্যত্বহীন সকল কর্মকাণ্ডের জননী হচ্ছেন শেখ হাসিনা।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘গতকাল বরিশাল শহরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে যোগ দিয়ে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ লঞ্চে ঢাকা সদরঘাটে পৌঁছান। পরে গাড়ীতে উঠে কিছুদুর অগ্রসর হলে র্যাব-৩ এর একটি টিম এসে গাড়ী আটক করে এবং সবাইকে র্যাবের কার্যালয়ে নিয়ে যায়। সুলতানা আহমেদ এখন র্যাব-৩ এর কার্যালয়ে। এই ঘটনা শুধু অমানবিকই নয়, একজন সম্মানিত নারী, নেত্রীর প্রতি চরম অবমাননা এবং সরকার প্রধানের ব্যক্তিগত ক্রোধ চরিতার্থ করার বর্ধিত প্রকাশ।’
রবিবার (৬ নভেম্বর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন,‘দেশে শুধু বিরোধী দলীয় পুরুষ নেতাকর্মীরাই নয়, নারী নেত্রীরাও সরকারী আক্রোশ থেকে রেহাই পাচ্ছে না। দেশে শিশু-বৃদ্ধ-নারী-পুরুষ প্রত্যেকেই ভয়ানক ভয়ের পরিবেশের মধ্যে দিন যাপন করছে। সরকারের অপকর্মের বিরুদ্ধে সত্য উচ্চারণের কারণে যে কেউ মারাত্মক সরকারী জুলুমের মধ্যে পড়তে পারে। মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ সেই জুলুমেরই শিকার হয়েছেন। অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কথা বলা মানেই বন্দুকের নিশানা হওয়া।’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘সরকার জুলুমের নানা ধরণের বৃত্ত রচনা করেছে। সুলতানা আহমেদকে তুলে নিয়ে কোন ‘আয়নাঘরের’ কয়েদখানায় রাখা হয়েছে সেটি আমরা কেউ জানিনা। দুঃশাসনের জাল আষ্টেপৃষ্ঠে চারিদিক দিয়ে বেঁধে ফেলা হচ্ছে। দেশে গণতন্ত্র যাতে ফিরে আসতে না পারে সে কারণে গভীর ভয়ের ঘেরাটোপে বাংলাদেশকে বন্দী করে রাখতে চাচ্ছে শেখ হাসিনা। সবাইকে চুপ থাকতে হবে, কেউ যাতে নড়াচড়া করতে না পারে-এটাই শেখ হাসিনার নীতি। শেখ হাসিনার পৃষ্ঠপোষক র্যাব-৩ সুলতানা আহমেদকে গ্রেফতার করে যে কলঙ্কজনক উদাহরণ সৃষ্টি করেছে তা অমানবিক ও কাপুরুষোচিত। শেখ হাসিনার ১৪ বছরের কুশাসনে সবচেয়ে বেশী লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়েছে নারীরা। ৭১ এ বাংলার মানুষকে নিধনে ইয়াহিয়া খান যে বর্বরোচিত দৃষ্টান্ত রেখেছে সেটিকে অনুসরণ করছেন শেখ হাসিনা।’
এ সময় তিনি জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির পক্ষ থেকে সুলতানা আহমেদকে আটকের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং অবিলম্বে তাকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জোর আহবান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আগামীকাল ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে কর্মসূচি ঘোষনা করেন তিনি।
কর্মসূচি মধ্যে রয়েছে-
১। ৭ নভেম্বর মহান জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আগামীকাল সকাল ৬ টায় নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে দলীয় কার্যালয়গুলোতে দলীয় প্রতাকা উত্তোলন করা হবে।
২। সকাল ১১ টায় দলের মহাসচিবসহ জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যবৃন্দ মহান স্বাধীনতার ঘোষক সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের মাজারে পুস্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন।
৩। নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বেলা ২ টায় উন্মুক্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন সমূহ স্ব-স্ব উদ্যোগে আলোচনা সভা ও অন্যান্য কর্মসূচি পালন করবে বলে জানান তিনি।
তিনি জানান, দিবসটি উপলক্ষে ইতোমধ্যে সারাদেশে জেলা ও মহানগরে পোষ্টার পাঠানো হয়েছে। বিভিন্ন জাতীয় সংবাদপত্রে ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। অনুরুপভাবে দেশব্যাপী বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে স্থানীয় সুবিধানুযায়ী দিবসটি উপলক্ষে যথাযোগ্য মর্যাদায় আলোচনা সভাসহ ও অন্যান্য কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূইয়া, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন,নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, স্বেচ্ছাসেবক দলের ডা.জাহিদুল কবির, যুবদলের মেহবুব মাসুম শান্ত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
স্বাধীন খবর ডটকম/আ আ
