বাধা পেয়ে সমাবেশে যোগ দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা আরও তীব্র হচ্ছে
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ৩, ২০২২ ৭:০৯ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ৩, ২০২২ ৭:০৯ অপরাহ্ণ
বরিশালে বিএনপির গণসমাবেশ আগামী শনিবার। এ গণসমাবেশকে ঘিরে এখন পুরো বিভাগের রাজনীতি সরগরম। বিএনপির লক্ষ্য বরিশালে সবচেয়ে বড় সমাবেশ করা। আর ক্ষমতাসীন দল মাঠে নেমেছে দলীয় নানা কর্মসূচি নিয়ে। হামলা, মহড়া এবং বাস, তিন চাকার যান, ভোলা-বরিশাল নৌপথের লঞ্চ ও স্পিডবোট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আবাসিক হোটেলে পুলিশের তল্লাশির ঘটনা ঘটছে। এ পরিস্থিতিতে গণসমাবেশের নানা বিষয় নিয়ে প্রথম আলো কথা বলেছে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহানের সঙ্গে।
গণসমাবেশকে ঘিরে পরিবহন, লঞ্চ বন্ধসহ নানা ঘটনা ঘটছে। সমাবেশে কী ধরনের প্রভাব পড়বে?
বিলকিস আক্তার জাহান: প্রভাব তো কিছুটা পড়বেই। আমাদের নেতা-কর্মী, সমর্থক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে এই সমাবেশে যোগ দেওয়ার যে তীব্র আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছিল, সরকারের এ ধরনের পদক্ষেপের কারণে সেটা বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। কিন্তু এতে তাদের আকাঙ্ক্ষা দমে যায়নি; বরং দুর্দমনীয় হয়েছে। সেটা ৫ নভেম্বর প্রমাণ মিলবে।
ক্ষমতাসীন দল এসব করবে; কারণ, আগের সমাবেশগুলোতেও এটা করেছে বলে বিএনপি দাবি করে আসছিল। বরিশালে কি সেগুলোর চেয়ে কোনো পার্থক্য দেখছেন?
বিলকিস আক্তার জাহান: দেখছি। চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা ও রংপুরে পরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল; কিন্তু বড় ধরনের কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। বরিশালে প্রশাসনকে ব্যবহার করে আবাসিক হোটেলে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। প্রতিটি জেলা, উপজেলা, বরিশাল নগর—সব জায়গায় ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা অবস্থান নিয়েছেন। এক সপ্তাহ আগে থেকে আমাদের প্রচার-প্রচারণায় বাধা দান, হুমকি ও মারধর শুরু করেছেন। সমাবেশের আরও দুই দিন বাকি আছে। এটা আরও বাড়বে বলে আমরা মনে করছি। ক্ষমতাসীন দল শুরু থেকেই বরিশালে বড় জমায়েত হোক, সেটা চায় না।
বরিশালে বড় জমায়েত হোক, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সেটা চায় না, এটা কেন মনে হচ্ছে আপনাদের?
বিলকিস আক্তার জাহান: এটা না চাওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ আছে। সরকার আগের চারটি গণসমাবেশ দেখেছে, সেখানে সমস্ত শক্তি দিয়ে বাধা দিয়েও জনস্রোতকে থামাতে পারেনি। সমাবেশগুলো আর বিএনপির সমাবেশ ছিল না। প্রকৃত অর্থেই গণসমাবেশে রূপ নিয়েছিল। ফলে ক্ষমতাসীন দলের ভেতরে একধরনের অস্থিরতা ও ভীতি তৈরি হয়েছে। সরকার কোনোভাবেই আর মানসিক চাপ নিতে চাইছে না। দ্বিতীয়ত, বরিশাল হচ্ছে বিএনপির শক্তিশালী ঘাঁটি। বিশেষ করে বরিশাল নগর ও জেলা। এখানে বড় ধরনের জমায়েত হলে আওয়ামী লীগের ভেতরের সেই অস্থিরতাকে আরও প্রকট করবে। এটা স্থানীয় নেতারাও মর্যাদার বিষয় হিসেবে নিয়েছেন বলে মনে হচ্ছে।
সে ক্ষেত্রে আপনাদের প্রস্তুতি কেমন?
বিলকিস আক্তার জাহান: আওয়ামী লীগ গত চারটি গণসমাবেশে যে কৌশলে বাধা দিয়েছে, সেটা থেকে আমাদের অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়েছে। সেসব অভিজ্ঞতা নিয়ে আমাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি আমরা। ভোলার সঙ্গে বরিশালের নৌ যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু ভোলার সব লোক এরই মধ্যে বরিশালে পৌঁছে গেছে। এটা আমরা বলতে পারি, বরিশালের সমাবেশ হবে সবচেয়ে বড় সমাবেশ।
বাধাবিপত্তি মোকাবিলা করে এটা কীভাবে সম্ভব?
বিলকিস আক্তার জাহান: আসলে আমাদের শক্তি হচ্ছে জনগণ। আর ক্ষমতাসীন দলের শক্তি হচ্ছে ক্ষমতা। জনগণের শক্তির কাছে ক্ষমতার বাধা কোনো বাধাই নয়। এটা বিএনপির সমাবেশ নয়, এটা গণসমাবেশ। একটি দেশে মানুষের দাবিদাওয়া নিয়ে সমাবেশ ডাকলে সেটা বন্ধ করতে এতটা তৎপরতা আমরা আর কখনো দেখিনি। এতে প্রমাণিত হয়, ক্ষমতাসীন দল ভয় পেয়েছে। তাদের পায়ের তলার মাটি সরে গেছে। ক্ষমতার বৈধতা না থাকলে জনগণকে ভয় পাবে, এটাই তো স্বাভাবিক। অবৈধ ক্ষমতা দিয়ে বৈধ শক্তিকে কখনোই দমন করা যায় না। এটা আবার প্রমাণিত হবে।