বিদ্যুতের লোডশেডিংকে সরকারের কূটচাল বলে মন্তব্য করেছেন টুকু
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
সোমবার, জুলাই ১৮, ২০২২ ২:৩৩ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
মঙ্গলবার, জুলাই ১৯, ২০২২ ৬:৪০ পূর্বাহ্ণ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
বিদ্যুতের লোডশেডিংকে সরকারের কূটচাল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক বিদ্যুৎমন্ত্রী ইকবাল হোসেন মাহমুদ টুকু। বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের জন্য পুরোপুরিভাবে সরকারকে দায়ী করেছেন তিনি।
সোমবার সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় অনুষ্ঠিত এক সাংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বিদ্যুতের ঘাটতি মেটাতে সরকার যে ঘোষণা দিয়েছে তার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া প্রতিক্রিয়া জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
টুকু বলেন, আজকে দেশ সত্যিকার অর্থেই অর্থনৈতিক ক্রাইসিসের মধ্যে পড়ে গেছে। এটার জন্য পুরোপুরিভাবে সরকার দায়ী। সরকার রাবিশভাবে জনগণের অর্থ ব্যয় করেছে। জনগণের অর্থ ব্যয় করার জন্য, টোটালি সরকার কিছু লোকের উপর নির্ভরশীল; যাদের লাঠির শক্তি, কলমের শক্তি দিয়ে টিকে আছে তাদের পেট মোটা করেছে। কিন্তু জনগণের পকেট কেটে নিয়েছে।
তিনি বলেন, রিজার্ভে ঘাটতি দেখা দিয়েছে এজন্য বিদেশ থেকে তেল ইমপোর্ট করতে পারছে না, গ্যাস ইমপোর্ট করতে পারছে না, এলসি করতে পারছে না। যার জন্য এখানে চাপ দেওয়া হয়েছে। যাতে কম খরচ হয় এবং কম ইমপোর্ট করতে হয়।
“এত রিজার্ভ সারাদিন ঢোল পিটিয়েছে এই আছে সেই আছে ব্যাংকক সিঙ্গাপুরকে আমরা ছাড়িয়ে গিয়েছি। তাহলে সেই রিজার্ভ গেল কোথায় হঠাৎ করে উধাও হয়ে গেল কেন। ৪৩ বিলিয়ন থেকে এখন ৩৮ নামল কেন? এটা তো সরকারি হিসাব এখন ৩৮ বিলিয়ন আছে কিনা এতেও আমাদের সন্দেহ রয়েছে।”
বিএনপির এই নীতি নির্ধারক বলেন, বিদ্যুতের লোডশেডিং এটা সরকারের ব্যর্থতা বলবো না, এটা বড় ধরনের কূটচাল।
তিনি বলেন, যখন থেকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তখন থেকে আমরা আন্দোলনে রয়েছি। এখন যে পরিস্থিতি এতে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ জানাবে এবং এই প্রতিবাদটা আরো কঠোর হবে।
বিদ্যুতের সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আগে বাংলাদেশের মানুষ লোডশেডিং দেখেছে এখন মিউজিয়ামে যাওয়া লোডশেডিং আবার ফেরত আসতেছে। আগে লোডশেডিং এর জন্য জনগণকে পরিশোধ করতে হয়নি এখন মিউজিয়াম থেকে লোডশেডিং ফেরত এনে জনগণকে পে করতে হচ্ছে। সেটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, কেন পে করতে হবে জনগণকে? লোডশেডিংও নাই, বিদ্যুতও দেওয়া যাচ্ছে না, সাশ্রয় করা হচ্ছে কিন্তু পেমেন্ট তো আমি ঠিকই করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, এই সরকার আসার পূর্বে আমাদের প্রতিষ্ঠিত যে পাওয়ার প্লান্ট ছিল যেখানে বলা ছিল বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৬৪ ভাগ সরকারি হাতে থাকবে। আর বাকি ৩৬ ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে বেসরকারি খাতে। এ সরকার তড়িঘড়ি করে এই বেস্ট প্ল্যানগুলো প্রাইভেটে দিয়ে দিল। আমি মনে করি এটা একটা খারাপ পরিকল্পনা এবং দুর্নীতিগ্রস্ত ছিল। যার ফলে বিদ্যুতের আইন জলাঞ্জলি দিয়ে পার্লামেন্টে আইন পাস করে যাকে ইচ্ছা তাকে পাওয়ারপ্লান্ট দেওয়া হয়েছে।
টুকু বলেন, আমরা দেখেছি পদ্মা সেতু নিয়ে যে নাচ গান ফূর্তি করা হলো। তেমনি শতভাগ বিদ্যুৎ বলেও হাতিরঝিলে কত রকমের রঙিন ফানুস দেখেছি নাচতে দেখেছি। আজকে এসে তারা বলছে বিদ্যুৎ দিতে পারছি না। যেটা করার দরকার ছিল সেটা তারা করেনি। বিদ্যুৎ উৎপাদনটা সরকারের হাতে রাখা দরকার ছিল। সরকার উৎপাদন করলে আজকে এই ক্যাপাসিটিতে পেমেন্ট করতে হতো না। আজকে আপনি এদের সাথে এগ্রিমেন্ট করেছেন এখন বিদ্যুৎ দিতে পারছেন না কিন্তু টাকা দিচ্ছেন; এই টাকাটা কার? তাতে কি দাঁড়ালো অন্ধকারেও থাকলাম আবার টাকাও পে করতে হলো যেটা অতীতে হয়নি।
তিনি বলেন, এই যে একটা দুর্নীতির পুষ্ট প্রকল্প করেছে। এটা করে আনন্দ করে জনগণকে দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এ সরকারের হচ্ছে প্রচার প্রসারের আজকে আমরা দুর্ভোগে পড়েছি। সরকারের কোষাগার থেকে টাকা যাবে পাওয়ার স্টেশনের মালিকদের কাছে। শতভাগ লাভ তাদের আর জনগণের শতভাগ ক্ষতি। সরকার এই যে অনিয়ম করে গেছে এটা আমাদের জাতিকে অনেকদিন বহন করতে হবে। অলরেডি ২ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ১৪ টাকা বিদ্যুতের দাম হয়ে গেছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির মিডিয়া ছেলের আহবায়ক জহির উদ্দিন স্বপন,
সদস্য সচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সদস্য ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন ও শায়রুল কবির খান।
স্বাধীন খবর ডটকম/আ আ
