ভুলের খেসারতে লজ্জার হার সিরিজ জিতলেই র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
শনিবার, মার্চ ৫, ২০২২ ৬:১০ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
শনিবার, মার্চ ৫, ২০২২ ৬:১০ অপরাহ্ণ
জনতার আওয়াজ ডেস্ক
সিরিজ জিতলেই র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি। পেছনে ফেলার সুযোগ আফগানিস্তানকে। কিন্তু উল্টো হারে আইসিসি’র টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে এক ধাপ পিছিয়ে দশম স্থানে নেমে গেল বাংলাদেশ। আফগানদের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ম্যাচে টাইগাররা হেরেছে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে। মিরপুর শেরেবাংলা মাঠে সিরিজের প্রথম ম্যাচে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দল মাঠে আসা শতভাগ দর্শকদের উল্লাসে ভাসিয়ে ছিল। ৬১ রানের জয়ে সিরিজে এগিয়ে ছিল ১-০তে। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে সিরিজ ড্র করেছে সফরকারীরা। ম্যাচ শেষে তাই ট্রফি হাতে দুই দলের ফটোসেশন। টানা ৮ ম্যাচ হারের পর জয়ে ফিরেছিল টাইগার।
কিন্তু গতকাল আবারো খেই হারালো নিজেদের ভুলে। শুরুতে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটাররা দারুণভাবে ব্যর্থ হয়। এক উইকেট হাতে রেখেই থেমে যায় মাত্র ১১৫ রানে। নিজের সেঞ্চুরি ম্যাচে মুশফিকুর রহীমের ব্যাট থেকে আসে দলের মান বাঁচানো ৩০ রান। আর টাইগার অধিনায়ক টি-টোয়েন্টি ১১৫ ম্যাচ খেলে স্পর্শ করেছেন দুই হাজার রানের মাইলফলক। অন্যদিকে বল করতে নেমে আফগানদের বিপক্ষে ৩টি ক্যাচ ফেলে ম্যাচটাই হাত ছাড়া করেছে। শেষ পর্যন্ত লজ্জার হার নিয়েই মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ। আফগান ওপেনার হযরতউল্লাহ জাজাই ফিফটি হাঁকান। তাকে দারুণভাবে সঙ্গ দেন উসমান ঘানি ৪৭ রান করে আউট হন। করোনা মাহামারির কঠিন সময় পেরিয়ে মাঠে শতভাগ দর্শক আসার সুযোগ হয়েছে। তবে শেষ ম্যাচে টাইগারদের হারে হতাশা নিয়েই ঘরে ফিরে গেছেন ভক্ত-সমর্থকরা।
আফগানিস্তান বাংলাদেশে এসেছিল ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে। চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচের টানা দু’টিতে জিতে যায় তামিম ইকবালের দল। সামনে সুযোগ এসেছিল আফগানদের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করার। কিন্তু তা হয়নি, সফরকারীরা দারুণভাবে জয় নিয়ে ম্যাচে ফিরে। ২-১ সিরিজ জিতলেও হতাশা থেকেই যায় আইসিসি’র ওয়ানডে সুপার লীগের ১০ পয়েন্ট হারানোর। মিরপুর শেরেবাংলা মাঠেও প্রথম টি-টোয়েন্টি জয়ে দারুণভাবে ফিরে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দল। কিন্তু দল সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়। ফলে হাসি মুখেই ঘরে ফেরা নিশ্চিত করলো রশিদ খানদের দল। মিরপুরে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১১৫ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে প্রথম ওভারেই জীবন পান হজরতউল্লাহ জাজাই। পরের ওভারে অবশ্য রহমানউল্লাহ গুরবাজকে সাজঘরে ফেরাতে সমর্থ হন শেখ মেহেদী হাসান। তবে দ্বিতীয় উইকেটে জাজাই ও উসমান ঘানি গড়েন ৯৯ রানের পার্টনারশিপ। ৪১ ও ৪৫ রানে দুই দফা জীবন পাওয়া উসমান তবু অর্ধশতক পূর্ণ করতে পারেননি। জয় থেকে একটু দূরে থাকতে- ৪৮ বলে ৪৭ রান করে তিনি বিদায় নেন রিয়াদের শিকার হয়ে। তবে এই ব্রেক থ্রু বাংলাদেশকে জেতাতে পারেনি। বাংলাদেশের ভুল ফিল্ডিং আর ৩ ক্যাচ হাতছাড়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে আফগানরা ৮ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে ১৪ বল হাতে রেখে। প্রথম ওভারে জীবন পাওয়া জাজাই ৪৫ বলে ৫৯ রান করে অপরাজিত থাকেন, হাঁকান ৩টি চার ও ৫টি ছক্কা।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে নাইম শেখের সঙ্গে প্রথম ম্যাচে অভিষিক্ত মুনিম শাহরিয়ার এদিনও ব্যর্থ। উদ্বোধনী জুটি টিকেছে কেবল ১.৪ ওভার। পাওয়ার প্লে কাজে লাগানোর মিশনে নামা মুনিম শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন। তবে আফগান পেসার ফজলহক ফারুকীর করা ইনিংসের প্রথম ওভারে পরাস্ত হয়েছেন বেশ কয়েকবার। পরে অবশ্য মোহাম্মদ নবীর করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই অবশ্য সাজঘরের পথ ধরতে হয় এই তরুণ ওপেনারকে। ১০ বলে একমাত্র বাউন্ডারিতে ৪ রানের বেশি করতে পারেননি মুনিম। আগের দিন ২ রান করে আউট হওয়া নাইম অবশ্য দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন। কিন্তু আফগান বোলারদের দারুণভাবে সামলাতে শুরু করেন। তার ব্যাটিংয়ের ধরনে মনে হচ্ছিল হয়তো ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিচ্ছেন। কিন্তু ঠিক সেই সময় বাজে এক রান আউটে নিজের উইকেট বিলিয়ে দিয়ে সাজঘরে ফিরেন তিনি। তার আগে অবশ্য বিদায় নেন প্রথম ম্যাচে ফিফটি হাঁকিয়ে ফর্মে ফেরা লিটন দাস। দু’জনের ব্যাট থেকেই আসে সমান ১৩ রান করে। সিরিজের শেষ দ্বিতীয় ম্যাচেও ব্যর্থ সাকিব আল হাসান। তিনি আউট হন মাত্র ৯ রান করে।
৪৫ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে স্বাগতিকরা। সেখান থেকে ভায়রা মাহমুদুল্লাহকে নিয়ে দলের হাল ধরেন মুশফিকুর রহীম। পঞ্চম উইকেট জুটিতে আসে ৪৩ রান। অধিনায়ক রিয়াদের ব্যাটে ছিল রান তোলার তাড়া। সেই হাতাহুড়াতেই রশিদ খানের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন। তবে আউট হওয়ার আগে তার ব্যাটে ১৪ বলে ৩ চারে দলের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ রান আসে। শততম ম্যাচ রাঙানোর দারুণ উপলক্ষ পেয়েও ব্যর্থ হন মুশফিক। তার ব্যাটে ২৫ বলে ৪ চারে সর্বোচ্চ ৩০ রান আসে। ফজলহক ফারুকীর বলে মোহাম্মদ নবীকে ক্যাচ দিলে ৬ উইকেটে ৯৯ রানে করে টাইগাররা। ততক্ষণে লড়াই করার মতো পুঁজি পাওয়াটাও কঠিন হয়ে পড়ে। এরপর দলের হাল ধরতে ব্যর্থ বাকিরা। শেখ মেহেদী হাসান ০, আফিফ হোসেন ৭ রান করে আউট হন। দলের প্রয়োজনে কেউ খেলতে পারেননি কার্যকর কোনো ইনিংস।