“মমূর্ষ খালেদা জিয়া ও ফ্যাসিষ্টের বর্বরতা নগ্নতা”
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
রবিবার, জুন ১২, ২০২২ ৯:০০ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
সোমবার, জুন ১৩, ২০২২ ৯:২১ পূর্বাহ্ণ
বিশিষ্ট কলামিস্ট,লেখক ও জনতার আওয়াজ ডট কম নিউজ পোর্টালের উপদেষ্টা সম্পাদক সায়েক এম রহমানের লেখা “মমূর্ষ খালেদা জিয়া ও ফ্যাসিষ্টের বর্বরতা নগ্নতা”লেখাটি একটি সময় উপযোগী লেখা ।লেখাটি শীর্ষ খবর এ বিগত ৫ই জানুয়ারী ২০২২ প্রকাশিত হয়েছিল, সম্মানিত পাঠকদের অনুরোধে লেখাটি আবারো জনতার আওয়াজ ডট কমে পুনঃরায় প্রকাশিত হলো ।
সায়েক এম রহমান
এক. যার পরিবার থাকা সত্ত্বেও নেই পরিবার! যার ছেলে পুত্রবধু নাতনি থাকা সত্ত্বেও নেই ছেলে পুত্রবধু নাতনি! বাড়ী থাকা সত্ত্বেও বাড়ি থেকে বঞ্চিত ! অন্যায় ভাবে ঠিকানা করা হয়েছে বন্দী জীবন! জীবনের শেষ প্রান্তে এসে ৭৬ বৎসর বয়সে হাসপাতালের বেডে শুয়ে যাকে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়তে হচ্ছে, তবুও তাঁর উন্নত কোন চিকিৎসার ব্যবস্থা হচ্ছে না! যার আছে শুধু লাঞ্চনা ও বঞ্চনা!
পাঠক অবশ্য বুঝে গেছেন আমি কার কথা বলছি। তিনি অবশ্যই আর কেউ নন,,,””” তিনি হলেন, বাংলাদেশের সবচাইতে জনপ্রিয় নেত্রী,সাবেক তিন বারের প্রধানমন্ত্রী, নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের আপোষহীন নেত্রী, গণতন্ত্রের প্রতীক দেশমাতা বেগম খালেদা জিয়া। জ্বী, হাঁ, আজ সেই অবিসংবাদিত নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কথাই বলছি।যার স্বামী বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ঘোষক,বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি, জেড ফোর্সের অধিনায়ক বীর উত্তম ও জাতীয়তাবাদের প্রবর্তক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।
তাঁর স্বামীর মৃত্যর পর যে নেত্রী একজন গৃহবধু থেকে সময়ের সন্ধিক্ষণে আজ ৩৭ বৎসর যাবৎ বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদ, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব এবং গণতন্ত্রের জন্য প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে আসছেন। যিনি গণতন্ত্রকে বুকে ধারন করে গণতন্ত্র কে পুনরুদ্ধার করে আপোষহীন নেত্রীতে পরিণত হয়েছেন। বার বার গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করে গণতন্ত্রের প্রতীক হয়েছেন। যিনি বার বার পাঁচ পাঁচটি সংসদীয় আসনে দাঁড়িয়ে সর্বচ্চ ভোটে জয় লাভ করে রেকর্ড সৃষ্টি করে আছেন। যিনি এই মহুর্তে বাংলাদেশের সবচাইতে জনপ্রিয় নেত্রীর আসনে বসে আছেন।সেই নেত্রীকে তাঁহার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। সর্ব শ্রেণীর মানুষ ফ্যাসিষ্ট সরকারকে ছিঃ ছিঃ ধিক্কার জানাচ্ছে। হায়রে নিমর্মতা, হায়রে নিষ্ঠুরতার যেন শেষ নাই ।
আজও আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়েও ফ্যাসিষ্ট সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। দেশবাসী জানেন তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা নত করার মানুষ নন! অবিসংবাদিত নেত্রী বলে দিয়েছেন প্রয়োজনে এই নিথর দেহ ফ্যাসিষ্টের বন্দী খানা থেকে বাহির হবে তবুও গণতন্ত্র, মানবতা ও স্বাধীনতার জন্য ফ্যাসিষ্টের কাছে আপোষ করবেন না।
দুই. পাঠক আজ ভাবতে অবাক লাগে, ক্ষমতায় এসেই ফ্যাসিষ্ট সরকার প্রধান তাঁর নিজের নামের প্রায় ১৫টি মামলা গুম করে নাই করে ফেলল! আর বেগম খালেদা জিয়ার মামলাগুলি জিয়ে রেখে মিথ্যা মামলার ফাঁকে ফেলে বিশেষ আদালতে এ দেশের জনপ্রিয় নেত্রীকে আদালতে ৪/৫ ঘন্টা বসিয়ে রাখে এক কাপ চা হাতে দিয়ে জনগন দেখেছে, জনগন আরও দেখেছে এতিম নাতনির কাঁধে ভর করে হাজিরা দিতে হয়েছে বার বার ক্যাঙ্গারো কোর্টে। মাসে ৩/৪ বার করে হাজিরা দিতে হয়েছে বার্ধক্যজনিত অসংখ্য রোগসহ। তাঁহার লাঞ্চনা বঞ্চনার যেন শেষ নাই!
যে নেত্রী কারা অন্তরীন জীবনে হারিয়েছেন তাঁহার মমতাময়ী মাকে এবং তাঁহার প্রিয় ভাই-বোনকে। অবরুদ্ধ থেকে হারিয়েছেন তাঁহার নাড়িছেঁড়া ধন প্রাণাধিক পুত্র আরাফাত রহমান কোকোকে। আর বড় সন্তান তারেক রহমানকে থাকতে হচ্ছে উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলার মার পেছে দূরদেশে।
এ সবই হচ্ছে শহীদ জিয়া, খালেদা জিয়া ও জিয়া পরিবারের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষাম্বিত হয়েই জিয়া পরিবার ও দলকে নিঃশেষ করার একটা অভিপ্রায়! ইতিহাস কিন্তু বার বার বলে দিয়ে গেছে এই জাতীয় হীন চক্রান্ত কখনও সফল হয় না বরং তারাই নস্যাৎ হয়।
তিন. এদিকে আজ ইতিহাস সাক্ষী,,,, ১/১১ জরুরি সরকারের মাইনাস টু ফর্মূলায় দুই নেত্রীই ছিলেন। সেই দিন আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কে বিদেশ পাঠানোর বেলায় হাইয়েস্ট প্রলোভন দেয়া হয়েছিল। কিন্তু খালেদা জিয়া কে মানাতে পারে নাই। সেই দিন সেই প্রলোভনে পড়ে আজকের ফ্যাসিষ্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগনকে অরক্ষিত রেখে সৌখিন বিদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন।
সেদিন বেগম খালেদা জিয়া মঈন – ফখরুর চাল বুঝে দেশ না ছেড়ে, জনগণের পাশে থাকার জন্য মরণ কামড় দিয়েছিলেন। সে দিন তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল আপনার দেশ বড়, না, সন্তান বড়? আপোষহীন নেত্রী অশ্র ভেঁজা কন্ঠে বলেছিলেন, ” আমার দেশ বড়! তখন আরো দৃঢ় কন্ঠে বলেছিলেন, ” জেনে রাখ, বাংলাদেশের বাহিরে আমার কোনো ঠিকানা নেই। অতঃপর তাঁহার ছেলেদের উপর চালিয়ে ছিল পৃথিবীর বর্বরতম নির্যাতন। জরুরি সরকার খালেদা জিয়া কে বাই – ফোর্সে বিমানে তোলার চেষ্টা করে ও ব্যর্থ হয়েছিল। এ সবই আজ ইতিহাস! আপোষহীন নেত্রী, গণতন্ত্রের প্রতীক বাংলার চীর সবুজের মাটিকে আঁকড়িয়ে ধরে ছিলেন আর বলেছিলেন,” আমি আমার মায়ের কাছেই থাকবো, আমার দেশ আমি ছেড়ে চলে যাব না। আমি আমার ষোল কোটি মানুষের মাঝে বেঁচে থাকতে চাই। আমার দুই সন্তানকে মহান আল্লাহর কাছে সঁপে দিলাম।
পাঠক, আজ সেই অবিসংবাদিত নেত্রী হাসপাতালে বেডে মমূর্ষ অবস্থায় মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করছেন। যেখানে তাঁহার সব ডাক্তাররা বলছেন এই মহুর্তে বাহিরে নেয়া ছাড়া আর কোন পথ নাই। সেখানে ফ্যাসিষ্ট সরকার সেই সুযোগ না দিয়ে মমূর্ষ রোগীর সাথে খেলা খেলছে,বিশেষ করে আইনমন্ত্রী আইনি খেলায় মেতে উঠছে। আজ আইনমন্ত্রীর কাছে লক্ষ কোটি মানুষের প্রশ্ন,,, তা হলে পূর্বে কিভাবে বা কোন আইনে অসংখ্য মানুষকে জেল থেকে বিভিন্ন দেশে পাঠিয়ে চিকিৎসা করানো হল? আজ বেগম খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে এমন আচরণ কেন? কেন তাঁহাকে তাঁহার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে?
আবারও বলতে হচ্ছে, হায়রে নিষ্ঠুরতা, হায়রে প্রতিহিংসাপরায়নতা, হায়রে বর্বরতা !
পাঠক, তাদের জানা বা বুঝা উচিত,,,, অন্যায় অবিচার অত্যাচার ক্ষমতার বাহাদুরী ও প্রতিহিংসা পরায়নের দায় কিন্তু শোধ করতেই হবে এবং আপনি বা আপনারা যেই হোন, আপনাকে মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে বেশি বারা বারির জলন্ত প্রমান ডাঃ মুরাদ হাসান । সময় কিন্তু সন্নিকটে! মহান বিচারের মালিক মহান আল্লাহ। আমরা সবাই-ই জানি স্রষ্টার সৃষ্টির শ্রেষ্ট জীব হলো মানুষ। আর এই মানুষকে একদিন এই নশ্বর পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হবে। এবং প্রতিটি মানুষকে-ই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতেই হবে।
আজ বাংলাদেশ এবং বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাংলা ভাষা বাসি প্রতিটি মানুষ অবিসংবাদিত নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও নেক হায়াতির জন্য দোয়া করছে অবিরত। দেশের বেশীর ভাগ মানুষ মনে করেন,আল্লাহের মহান কুদরতে মহান আল্লাহ দেশমাতা খালেদা জিয়াকে আবার সুস্থ করবেন এবং আবার আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার হাত ধরেই এ দেশের গণতন্ত্র উদ্ধার হবে। জাতি আজ বিশ্বাস করে দেশমাতা বেগম খালেদা জিয়া ইতিহাসের পাতায় থাকবেন, “বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেত্রী, আপোষহীন নেত্রী ও গণতন্ত্রের প্রতীক হয়ে এ দেশের মানুষের অন্তর আত্মায়”।
লেখক
লেখক ও কলামিস্ট
সূত্র শীর্ষ খবর ( ০৫।০১।২২ইং)