রাজধানীর মোড়ে মোড়ে পর্দার আড়ালে কী?
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
শুক্রবার, এপ্রিল ১৫, ২০২২ ৯:১৫ পূর্বাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
শুক্রবার, এপ্রিল ১৫, ২০২২ ৯:১৫ পূর্বাহ্ণ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ট্রাক চালক অলিউর রহমান। যাত্রাপথের ভোগান্তি পেরিয়ে তার সবজির গাড়িটি কারওয়ান বাজারে পৌঁছেছে ভোরে। মাল খালাস হতে হতে সূর্য পূর্ব আকাশে উঁকি দিয়েছে। দিনে রাজধানীর সড়কে মালবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকায় তাকে অপেক্ষা করতে হবে আর একটি রাতের। রমজান হওয়ায় এ দীর্ঘ সময় তারা অনেকটা অভুক্ত রয়েছেন। কারণ দিনে খাবারের হোটেলগুলো বন্ধ। সাথে রয়েছে চালকের সহকারী নাজমুস সাকিব।
পবিত্র মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা এবং কাঙিক্ষত ক্রেতা না থাকায় বন্ধ নগরীর বেশিরভাগ খাবারের দোকান। দুই একটি পর্দার আড়ালে খোলা দেখা গেলেও মেলে হালকা নাস্তা। তেমনি একটি দোকানে (কারওয়ান বাজার সংলগ্ন) এ ট্রাক চালকের সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। এসময় তার মতো আরও অনেককেই পর্দা দেওয়া দোকানে ভিড় করতে দেখা যায়।
ট্রাক চালক অলিউর জানান, কাজের চাপে অনেক সময়ই রোজা রাখতে পারি না। পবিত্রতা রক্ষায় খাবারের দোকান বন্ধ রাখেন মালিকরা। কিছুটা কষ্ট হয়ে যায়। দুই-চার জনের জন্য তো সারাদিন দোকান খুলে রাখাও অযৌক্তিক।
শুধু কারওয়ান বাজারই নয়, রাজধানীর বাংলামোটর, ফার্মগেট, গ্রীন রোড, নিউমার্কেটসহ নগরীর বেশ কিছু স্থান ঘুরে দেখা গেছে পর্দার আড়ালে দোকান খোলা রাখছেন দোকানিরা। যেখানকার অধিকাংশ ক্রেতাই শ্রমিক। ভাসমান এ সকল দোকানই একমাত্র ভরসা নিম্ন আয়ের মানুষদের।
রমজানে এভাবে দোকান খোলা রাখা নিয়ে রয়েছে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া। ক্রেতা-বিক্রেতা ছাড়াও সাধারণ পথচারীদের সঙ্গেও কথা বলেন এ প্রতিবেদক। তারা বলেছেন, পবিত্র মাসে রোজা না রাখার মতো কাজে উৎসাহিত হয়, এমন কাজ না করাই বাঞ্চনীয়। যা করতে হবে জনমানুষের আড়ালে।
বাংলামোটর এলাকার রুবেল নামে এক দোকানি জানায়, রোজার দিনে আমাদের কষ্ট বাড়ে। রোজা রেখে সারাদিন কাজ করতে পারি না। এটাই আমাদের ব্যাবসা। এমনিতেই বেচা-বিক্রি থাকে না সারাদিন। সন্ধ্যার পর কেউ কেউ আসেন। তবে রমজানের পবিত্রতা বিঘ্ন হয় এমন কাজ তিনি নিজেও চান না।
এসময় তার দোকান থেকে একজনকে পানিসহ কিছু পণ্য ক্রয় করতে দেখা যায়। কথা বলে জানা যায়, তার নাম হাসিনা। রোগী ভর্তি রয়েছে হাসপাতালে। বেশ কিছু পথ খোঁজ কারার পর এ দোকানটি পেয়েছেন।
নুরউদ্দিন জাবেদ নামে এক পথচারী বলেন, রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করা অবশ্যই জরুরি। তবে অসুস্থ কিংবা যাদের রোজা রাখার সক্ষমতা নেই তাদেরও খাবার খাওয়ার প্রয়োজন, ফলে দোকান খোলা রাখার দরকার। তবে অনেকেই অতি উৎসাহী হয়ে কিংবা নিজের অজান্তেই প্রকাশ্য খাবার গ্রহণ ছাড়াও সিগারেট নিচ্ছেন। ফলে রোজাদারদের কষ্ট পোহাতে হয়। এর জন্য ব্যক্তিগত সচেতনতার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও সচেতন থাকা দরকার বলে জানান তিনি।
স্বাধীন খবর ডটকম/আ আ
