শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা নিয়ে উদ্বেগ আ.লীগের উপদেষ্টা পরিষদের
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
বৃহস্পতিবার, জুন ২, ২০২২ ৮:৩১ পূর্বাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
বৃহস্পতিবার, জুন ২, ২০২২ ৮:৩১ পূর্বাহ্ণ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ (ঢাবি) বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা। ঢাবি ক্যাম্পাসসহ সারাদেশে ‘প্রতিবাদের নামে’ ছাত্রলীগের ‘মারামারি’র ঘটনার সমালোচনা করে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে একাধিক সদস্য বলেছেন, কাউকে সুযোগ দেওয়া যাবে না। সামনে জাতীয় নির্বাচন, এই বিষয়কে মাথায় নিয়ে সবাইকে সতর্ক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ছাত্রলীগসহ সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীকে লাগামহীন আচরণ থেকে বিরত থাকারও পরামর্শ দেন তারা।
পরামর্শ শোনার পর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাদেরও (সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের) লাগাম টেনে ধরতে হবে। আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্ষেত্রে যেখানে বাংলাদেশের স্বার্থ সেখানেই সরকার থাকবে বলেও উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সবার আগে বাংলাদেশের স্বার্থই প্রাধান্য দেওয়া হবে।’
বুধবার (১ জুন) গণভবনে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সভার আলোচনায় এ প্রসঙ্গ উঠে আসে। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা এ তথ্য বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন।
বৈঠকে উপস্থিত নেতারা জানান, বৈঠকের আলোচনার একটা বড় অংশজুড়েই ছিল পদ্মা সেতুর উদ্বোধন, খাদ্যপণ্যের মূল্য, দলের আগামী জাতীয় সম্মেলন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গ।
সূত্র জানায়, বিশ্বব্যাপী নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি অনেক নেতা তাদের বক্তব্যে উল্লেখ করেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বের দেশে দেশে দুর্ভিক্ষ অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে— এমন আশঙ্কার কথাও উঠে আসে। আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্ষেত্রে সরকারের অবস্থান কী হবে— এসব বিষয়ে কথা বলেন নেতারা।
আওয়ামী-লীগ-বৈঠকৎ
এ প্রসঙ্গে আলোচনাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই মৌসুমে খাদ্যশস্য ও শাক-সবজির পর্যাপ্ত উৎপাদন হয়েছে। বাংলাদেশ খাদ্যে উদ্বৃত্ত অবস্থানে আছে। এরপরও বিশ্বব্যাপী বৃদ্ধির কারণে যে সব পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে, সেগুলোর বিষয়ে সরকার সতর্ক অবস্থান নিয়েছে।
সূত্র জানায়, শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৯৮ সালে সারা দেশে বন্যার সময় অনেক বিদেশি সংস্থা বহু মানুষের না খেয়ে এবং অসুখে মরার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল। কিন্তু কিছুই হয়নি। আশা করি বর্তমান পরিস্থিতিতেও কোনো সমস্যা হবে না।
আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সরকারের কাছে বাংলাদেশের স্বার্থই চূড়ান্ত। এর জন্য যেদিকে যাওয়া দরকার, সেদিকেই যাবেন।’
আগামী নির্বাচন সামনে রেখে এবং বর্তমান আর্থসামাজিক পরিস্থিতিতে দলকে শক্তিশালী করার ওপর জোর দেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘দলে নতুন নেতৃত্বকে সুযোগ করে দিতে হবে। জামায়াতের লোকজন যাতে টাকা-পয়সা দিয়ে দলে ঢুকে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’
সভায় নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে দেশের মর্যাদা বেড়ে গেছে এমনটা জানান উপদপষ্টারা। দলের সভাপতি শেখ হাসিনার সাহসিকতার জন্য উপদেষ্টা পরিষদের নেতারা তাকে ধন্যবাদ জানান। পদ্মা সেতুর বিষয়ে দলীয় প্রধান বলেন, ‘এই সেতুর না হওয়ার জন্য দেশে-বিদেশে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু সততার কারণে কোনও ষড়যন্ত্রই সফল হয়নি।’ পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন বিপুল মানুষ সেখানে জমায়েত হবে। এ জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের বিষয়ে নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।
আগামী ডিসেম্বর মাসে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলেও দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা বৈঠকে জানান। এ লক্ষ্যে তৃণমূল থেকে দলকে প্রস্তুত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মেয়াদত্তীর্ণ হয়ে যাওয়া সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মেলনও এরই মধ্যে শেষ করতে হবে বলেও জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি। বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সংগঠনকে শক্তিশালী করার কোনও বিকল্প নাই। সভা-সমাবেশ বাড়াতে হবে। জনগণের পাশে থাকতে হবে। জনগণের মন জয় করতে পারলে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়ী হবে।’ তিনি সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগে সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরারও নির্দেশনা দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশে বিরাজমান গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে অনেকেই চেষ্টা করছে, কারও ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না।’
স্বাধীন খবর ডটকম/আ আ
