• আজ বিকাল ৫:৪৯, শুক্রবার, ২৩শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৫শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি
  • shadinkhobor24@gmail.com
  • ঢাকা, বাংলাদেশ

শ্রীলঙ্কার দ্রুত পতনের পেছনে গোষ্ঠীতন্ত্র দায়ী : সালেহউদ্দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ: শনিবার, জুলাই ২৩, ২০২২ ১০:০৮ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ: শনিবার, জুলাই ২৩, ২০২২ ১০:০৮ অপরাহ্ণ

 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, অর্থনীতির সব সূচক ভালো অবস্থানে থাকার পরও শ্রীলঙ্কার দ্রুত পতনের পেছনে দায়ী গোষ্ঠীতন্ত্র। তারা গোষ্ঠীতন্ত্র তৈরি করেছিল। সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ নেয়নি। শ্রীলঙ্কার সফল একজন গভর্নর পদত্যাগ করেছেন। কারণ, সরকার গভর্নরের কোনো কথা শোনেনি। সেখানে যা কিছু করেছে, রাজা-বাদশাহরা করেছেন। তাঁরা যা করতে বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাই করেছে।

আজ শনিবার (২৩ জুলাই) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত ‘বর্তমান সংকট, দায় এবং সমাধান’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা শ্রীলঙ্কার কাছ থেকে শিক্ষা নেব। তারা সময়মতো সমস্যাগুলো অ্যাড্রেস করেনি। অনেক দিন থেকে তাদের সমস্যা ছিল। শ্রীলঙ্কায় অনেক বুদ্ধিমান মানুষ আছেন, অনেক বিজ্ঞ লোক আছেন। তাঁদের কথা শ্রীলঙ্কার সরকার শোনেনি।

এদিকে অর্থ পাচারকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সাবেক এই গভর্নর। তিনি বলেন, আগে খেলাপি ঋণ ২২ হাজার কোটি টাকা ছিল। এখন তা ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এটা কী করে সম্ভব? চট করে ছয় থেকে সাত গুণ খেলাপি ঋণ বেড়ে যাবে? টাকা পাচার কারা করে, সেটি নীতিনির্ধারকেরা ভালো করেই জানেন। কিন্তু অর্থ পাচার রোধে সরকার শক্ত কোনো ব্যবস্থা নেয় না।

সেমিনারে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান (মান্না) বলেন, আমাদের মূল সংকট ডলার পাচার। আপনাদের মনে থাকতে পারে, একজন মন্ত্রী সংসদে বলেছিলেন, আমাদের রাজনীতিবিদদের চেয়ে আমলাদের বেগমপাড়ায় বেশি বাড়ি আছে। সংসদে খোদ প্রধানমন্ত্রীও এ কথা বলেছিলেন। কারা বিদেশে টাকা পাচার করেন, সেটি তিনি জানেন। তখন আমিসহ অনেকে বলেছিলাম, জানেন যদি তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। কিন্তু কোনো কিছু তাঁরা করেননি। এত দিন পর যদি আমরা বলি, আপনারা টাকা পাচারকারীদের পালেন।

লিখিত বক্তব্যে মাহমুদুর রহমান বলেন, বিদ্যুতের চরম সংকটকে পুঁজি করে সরকার তার কিছু গোষ্ঠীর হাতে অকল্পনীয় পরিমাণ টাকা তুলে দিতে কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ ২ বছর থেকে ১৬ বছর বাড়িয়েছে। গত ১০ বছরে শুধু ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হয়েছে ৭০ হাজার কোটি টাকা। আর তিন বছরে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করা হয়েছে ৪২ হাজার কোটি টাকা।

তিনি বলেন, আমরা চাই বা না চাই, বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখন আন্তর্জাতিক আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। বিশ্বের আরও কয়েকটি দেশে শ্রীলঙ্কার সংকট হতে পারে বলে কয়েক দিন আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএফএফ) প্রধান ক্রিস্টালিনা জর্জিভা। এর সূত্র ধরে বিবিসি কিছু ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকা বানিয়েছে। ওই তালিকায় পাকিস্তান, লাওস, মালদ্বীপের সঙ্গে আছে বাংলাদেশও। মাহমুদুর রহমান দাবি করেন, বাংলাদেশের রিজার্ভ কাগজে-কলমে ৩২ বিলিয়ন ডলার আছে, যা বর্তমান আমদানির পরিমাণের হিসাবে মাত্র চার মাসের আমদানি ব্যয় মেটাতে পারবে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বি ডি রহমত উল্লাহ বলেন, বাংলাদেশ ছাড়া আর কোথাও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ প্রকল্প খুঁজে পাবেন না। এই সরকার ক্ষমতায় আসার আগে ২০০৫ কিংবা ২০০৬ সালে বিদ্যুতের ক্রাইসিস ছিল। সেই ক্রাইসিস পুঁজি করে এই সরকার তখন কুইক রেন্টাল প্রকল্পে যায়। যে পাওয়ার স্টেশন তিন বছরের জন্য করা হয়েছিল, সেই পাওয়ার স্টেশন বছরের পর বছর থাকছে। কিন্তু কেন? কাদের স্বার্থে এটা করা হয়েছে এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, কেবল বিদ্যুৎ খাত নয়, সব খাতে সীমাহীন দুর্নীতি ও লুটপাট হচ্ছে।

 
 
স্বাধীন খবর ডটকম/আ আ
 

জনপ্রিয় সংবাদ

 

সর্বোচ্চ পঠিত সংবাদ