সকল রাজনৈতিক দলকে ঐক্যের আহ্বান মির্জা ফখরুলের
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
সোমবার, মার্চ ২১, ২০২২ ১০:০৬ পূর্বাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
সোমবার, মার্চ ২১, ২০২২ ১০:১৩ পূর্বাহ্ণ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
সকল রাজনৈতিক দলকে ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আসুন আমরা দুর্বার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মী কারো জীবনের নিরাপত্তা নেই। তাই আসুন দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষা করার জন্য স্বাধীনতার যেই আকাঙ্ক্ষা তা পূরণ করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হই। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে আরেকটি যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি।
সোমবার (২১ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমান সমস্ত রাজনৈতিক দল ও পত্র-পত্রিকাগুলোকে নিষিদ্ধ করে দিয়ে মানুষের কথা বলার ক্ষমতাকে রুদ্ধ করে তিনি একটি একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ওখানে আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা সমস্ত প্রত্যাশা ভূলুণ্ঠিত হয়ে গেছে। সেখান থেকে জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র নিয়ে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিয়ে মুক্ত সমাজ নির্মাণের আশা-আকাঙ্ক্ষা জাগিয়ে তুলেছিলেন।
তিনি বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় নিয়ে আসলো অবৈধ কেয়ারটেকার নাম করে মইনুদ্দিন ও ফখরুদ্দিনের যে সরকার এসেছিল। তাদেরও লক্ষ্য ছিল একটাই বাংলাদেশকে বিরাজনীতিকরণ করা এবং গণতন্ত্রহীন একটি রাষ্ট্র তৈরি করা; তাই তারা করেছে। ২০০৮ সাল থেকে তাদের সাথে তাদের সাথে যোগসাজশ করে চক্রান্ত করে বাংলাদেশকে রাজনৈতিকহীন করে ফেলেছে গণতন্ত্রহীন করে ফেলেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের সমস্ত মানুষের অধিকারগুলোকে কেড়ে নিয়ে একটি ছদ্দবেশী গণতন্ত্রের নাম করে তারা আবারও বাকশাল প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে। এখন দেশে কোনো জবাবদিহিতা নেই, আর জবাবদিহিতা নেই বলেই যথেষ্ট দুর্নীতি করছে, চুরি করছে, ডাকাতি করছে, মানুষের অধিকারগুলোকে কেড়ে নিচ্ছে, সম্পদ বিদেশে পাচার করছে এবং গণ-মানুষের উপর অত্যাচার করছে।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতি হচ্ছে। সাধারণ মানুষের কোন উন্নয়ন হচ্ছে না। আজকে যারা টিসিবির ট্রাকের পেছনে দাঁড়ায় ন্যায্য মূল্যে পণ্য ক্রয় করার জন্য তাদের কোনো উন্নয়ন হচ্ছে না। কৃষকের পণ্যের মূল্য বাড়েনি তার কোন উন্নতি হয়নি। শ্রমিক ভাই এর মজুরি বাড়েনি তার কোনো উন্নতি হয়নি। আজকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হকার তাদের কোনো উন্নতি হয়নি। আজকে উন্নয়ন হয়েছে যারা আওয়ামী লীগের সাথে ক্ষমতার ভাগাভাগি করে লুটপাট করছে। বাংলাদেশে এখন পুরোপুরিভাবে একটি লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। সুযোগ পেলেই লুটপাট করে। এই অবস্থার পরিবর্তন আমাদের কি করতে হবে।
বিএনপি বিদেশিদের কাছে ধরনা দিচ্ছে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিএনপি বিদেশিদের কাছে ধরনা দিয়ে ক্ষমতায় আসেনি। বিএনপি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। পরবর্তীকালে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে প্রত্যেকবার এই দল ক্ষমতায় এসেছে জনগণের ভালোবাসা নিয়ে।
আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ২০০৬ সালে ওয়ান ইলেভেনের অবৈধ সরকার প্রতিষ্ঠা হল বড় গলায় বলেছিলেন এই সরকার আমাদের আন্দোলনের ফসল। তখন আপনারা বলেছিলেন তাদের সমস্ত কাজ বৈধ-অবৈধ হোক আমরা বৈধতা দিয়ে দেব। তারা বৈধতা দিয়ে দিয়েছে।
“আজকে আমরা যে ভয়ঙ্কর একটি পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছি, এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছি। আমাদের রাষ্ট্রকে রক্ষা করতে হলে, আমাদের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হলে আমাদের এই নতজানু পররাষ্ট্রনীতি থেকে বেরিয়ে স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি এবং গণতন্ত্র যদি আমাদের প্রতিষ্ঠা করতে হয় তাহলে এই সরকারকে বিদায় করা ছাড়া আমাদের কোনো বিকল্প নেই। আজকে সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।”
তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে দীর্ঘদিন আটক করে রাখা হয়েছে। আমাদের নেতা তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে। ৩৫ লক্ষ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে আমাদের ছয়শর উপরে নেতা-কর্মীকে গুম করা হয়েছে।
বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস-চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল সালাম, গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।
স্বাধীন খবর ডটকম/আ আ
