সাকিব মেসিভক্ত কিন্তু মেসি নন!
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
শুক্রবার, নভেম্বর ৪, ২০২২ ৫:১৭ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
শুক্রবার, নভেম্বর ৪, ২০২২ ৫:১৭ অপরাহ্ণ
আকাশ-রঙা জার্সি গায়ে চাপিয়ে মাঠ মাতানো লিওনেল মেসির মনও আকাশের মতো। তার ছুটে চলায় নদীর মতো গতি আছে, তবে ভাঙন নেই। মেসি গড়ার কারিগর, মাঠে যেমন বল পায়ে নানা রূপকথার গল্প গড়েন; মাঠের বাইরে গড়েন তেমন বেঁচে থাকা ও বাঁচিয়ে রাখার নানা গল্প বলেন।
সেই গল্পে মুগ্ধ হয়েই হয়তো সাকিব আল হাসান মেসির ভক্ত বনে গেছেন নিজের অজান্তেই। মেসিকে করেছেন তার মাঠের খেলার আরাধ্য। যদিও আদর্শে দুজনার মাঝে বিস্তর ফারাক, ব্যবধান অনেক চাল আর চলনে। সাকিবের বিশ্বকাপের শেষেই মেসিদের শুরু। কাতারে ফুটবল সাগরে সাঁতার কাটবেন মেসিরা। আর সেই অকূল পাথারে মেসির হাতেই আর্জেন্টিনার হাল, শক্ত করে পাল ওড়ানোর দায়িত্বও তার।
আর সেই পাল শক্ত করে ধরতে, লড়াইটা লড়াইয়ের মতো করে করতেই চান মেসি। তিনি তার ক্লাব পিএসজির কাছে আগেভাগেই ছুটি চেয়েছেন। কারণ তিনি জানেন গরমগরম রুটি খেতে গেলে মুখ পোড়ে। তাই সময় দিতে হয় আগেভাগেই বুঝতে হয় রুটি তৈরি ও পরিবেশনের খুটিনাটি।
সেজন্যই ৭ নভেম্বর দলের সাথে যোগ দেওয়া ইচ্ছে মেসির। তিনি চেনা দলটাকে এই সময়ে আরও গুছিয়ে নিতে চান। চেনা নিজেকেই চিনতে চান, সতীর্থদের কাছে চেনাতে চান আরও বেশি।
দেশের জন্য মেসি এভাবেই উজাড় করে দিতে চান সব। ক্লাব টাকা পয়সার চেয়ে তার কাছে বড় আকাশী নীলের মায়া বড়। জাতীয় দলের প্রতি কমিটমেন্ট আর দেশপ্রেমের শুদ্ধ অনুভবেও মেসি এগিয়ে। ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে হেরে মেসির স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল। আর সেই দুঃসহ বেদনার ভার তাকে রাতের পর রাত ঘুমাতে দেয়নি। এই কথা ক’দিন আগেই জানিয়েছেন মেসির সাবেক এজেন্ট ফাবিয়ান সোলদিনি। তিনি বলেন, ‘নির্ঘুম রাত পার করতেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক (মেসি)।’
সোলদিনির ভাষায়, ‘‘১০ বছর মেসির সঙ্গে দেখা না হওয়ার পর যখন তার বাড়িতে গেলাম, সে বলল ‘ফাবি, বছর ধরে ব্রাজিলের সেই ফাইনালে হারের কষ্টে রাতে ঘুম ভেঙে যায় আমার। আমি ঘুমাতে পারি না।’ আমি বলতে পারি, এ বিষয়টা ওর মাথায় সবসময় ঘুরপাক খেত।’’
মেসির সাবেক এজেন্টের মতে,‘‘আর্জেন্টিনা ওর ভালোবাসা। জাতীয় দল ওর ভালোবাসা। এটা বার্সেলোনাও নয়, নিওয়েলসও নয়…ওর ভালোবাসা আর্জেন্টিনার জন্য। জাতীয় দলকে ও ভীষণ ভালোবাসে।”
সাকিবের পিছিয়ে যাওয়া ঠিক এখানেই। বিশ্বকাপের আগেও সাকিব অগোছালো দলটাকে একরকম জলে ফেলেই সিপিএলে খেলতে গেছেন, আবার ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম খেলাও মিস করেছেন টাকার লিগের সেই খেলার জেরেই।
এখানেই সাকিবের শেষ নয়, দলের চরম বিপর্যয়ের দিনেও তিনি গেছেন সিডনির বাণিজ্যিক ডিনারে। বিপর্যস্ত দলকে সঙ্গ দেওয়ার প্রয়োজনবোধও করেননি। তিনি হাল ছেড়েছেন, ছাড়ছেন বহুবার। কখনোই বিজ্ঞাপন বা বিদেশি লিগের মায়া ভুলে মেসির মতো দেশের জন্য কিছুই করেননি।
মেসিভক্ত সাকিব যদি মেসির আদর্শটাও নিতেন, দেশের জন্য এমন নিজেকে উজাড় করে দিতেন। তবে বদলে যেতো অনেক কিছু, বাংলাদেশকেও হয়তো এভাবেই খালি হাতে ফিরতে হতো না বৈশ্বিক আসর থেকে।