স্মরণ : মশিউর রহমান যাদু মিয়া
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
শুক্রবার, মার্চ ১১, ২০২২ ৯:৪৭ পূর্বাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
শুক্রবার, মার্চ ১১, ২০২২ ৯:৪৭ পূর্বাহ্ণ
আজ মশিউর রহমান যাদু মিয়ার মৃত্যু দিবস। ১৯২৪ সালের ৯ জুলাই নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার খগাখড়িবাড়ী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছাত্রজীবনেই গণমানুষের কল্যাণে রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় তিনি বার্মা গিয়ে যুদ্ধাহতদের সেবায় আত্মনিয়োগ করেন। তেতাল্লিশের মহাদুর্ভিক্ষের সময় রংপুরের চরাঞ্চলে প্লেগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে জনগণের সেবায় আত্মনিয়োগ করেন। এর স্বীকৃতিস্বরূপ তার নামানুসারে একটি চরের নাম হয় ‘যাদুর চর’। ১৯৪৬ সালে দাঙ্গার সময় হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির লক্ষ্যে হত্যাযজ্ঞের বীভৎসতার ছবি তুলে বিশেষ বুলেটিন প্রকাশ করেছিলেন। ফলে ব্রিটিশ সরকার তাকে গ্রেফতার করে। দিল্লিতে তার বিচার অনুষ্ঠিত হয়। তার যুক্তির কাছে সরকার পরাজিত হয়ে বিশেষ স্কোয়াড দিয়ে বাড়ি পৌঁছে দেয়। তার প্রচেষ্টায়ই সেই অঞ্চলে দাঙ্গা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। পঞ্চাশের দশকের শেষ দিকে জেলা বোর্ডের কনিষ্ঠতম চেয়ারম্যান হিসেবে পরপর দু’বার নির্বাচিত হন। ১৯৫৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান যুবলীগের যুব উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। একই সালে মওলানা ভাসানীর আহ্বানে কাগমারী সম্মেলনে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। ১৯৬২ সালে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং পার্লামেন্টে বিরোধী দলের উপনেতা ছিলেন। ১৯৬৩ সালে সরকারবিরোধী আন্দোলনের জন্য গ্রেফতার হন। ষাটের দশকের শেষ দিকে ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক হন এবং আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে সোচ্চার দাবি উপস্থাপন করেন। ভাসানীর আহ্বানে জাতীয় পরিষদের সদস্যপদ ত্যাগ করেন। ১৯৬৯ সালে পশ্চিম পাকিস্তানের টোবাটেকসিংয়ে কৃষক সম্মেলনে ইয়াহিয়া খানকে গাদ্দার বলার কারণে তাকে গ্রেফতার করে সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ পল্টন ময়দানে মওলানা ভাসানীর আহ্বানে অনুষ্ঠিত জনসভায় ন্যাপের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ এবং প্রতীকী পতাকা উত্তোলন করেন। ১৯৭৪ সালে গ্রেফতার ও ১৯৭৫ সালের নভেম্বরে তিনি কারামুক্ত হন। গণতন্ত্রে উত্তরণের লক্ষ্যে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করতে তিনি জিয়াউর রহমানের পাশে এসে দাঁড়ান।
১৯৭৬ সালে ভাসানীর নেতৃত্বে ঐতিহাসিক ফারাক্কা লং মার্চের প্রস্তুতি ও সাংগঠনিক কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। ভাসানীর মৃত্যুর পর ন্যাপের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তখন তিনি জিয়ার অনুরোধে প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদায় সিনিয়র মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৭ সালে প্রথমে জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট এবং পরে ন্যাপের কার্যক্রম স্থগিত করে বিএনপি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।