• আজ সকাল ৭:১১, বুধবার, ২২শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি
  • shadinkhobor24@gmail.com
  • ঢাকা, বাংলাদেশ

১৮১৮ জন কাউন্সিলার, সিলেট বিএনপিতে আসল লড়াই শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ: বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৪, ২০২২ ৬:৫১ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ: বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৪, ২০২২ ৬:৫১ অপরাহ্ণ

 

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে

সিলেট বিএনপি’র কাউন্সিলর তালিকা নিয়ে বিতর্ক রয়েই গেছে। এ নিয়ে গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। এরই মধ্যে সম্মেলন ও কাউন্সিল আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। চলতি মাসের শেষ তিনদিনের মধ্যে যেকোনো একদিন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থী সংখ্যা কমে এসেছে। এখন শুরু আসল লড়াই। এ লড়াই নিয়ে আছে শঙ্কা। মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নিজে থেকে সরে গেছেন।

 

 

কাউন্সিলের কড়াকড়ি নিয়মে বাদ পড়েছেন অনেকেই। দলীয় স্বার্থে তারা আইনি লড়াইয়ে নামছেন না। হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন। তবে কাউন্সিলর তালিকা নিয়ে আর সম্মেলনের আগে কোনো কাটছাঁট হচ্ছে না। নতুন কমিটি এসে সবকিছু রিভিউ করবে। তদন্ত কমিটির প্রধান বিএনপি’র কেন্দ্রীয়সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন গতকাল বিকালে মানবজমিনকে জানিয়েছেন, ‘আমাদের কাজ হচ্ছে সব কিছু খতিয়ে দেখা। এরপর আমরা ২৭ তারিখ কেন্দ্রের কাছে রিপোর্ট দেবো। কেন্দ্র থেকে যে সিদ্ধান্ত দেয়া হবে সেটি করা হবে। তবে যে তালিকা হয়েছে সেটি দিয়েই কাউন্সিল সম্পন্ন হবে। নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত এসে সার্বিক বিষয় দেখভাল করবেন।’ সিলেট বিএনপি’র ২১শে মার্চের সম্মেলন ও কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে ১৮টি ইউনিটের মধ্যে ৪-৫টি কমিটি শেষ দিকে এসে তড়িঘড়ি করে পূর্ণাঙ্গ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে বালাগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, জকিগঞ্জ। বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে ভোট বাড়ানোর প্রতিযোগিতা করা হয়েছে। এ কারণে ক্ষোভ বিক্ষোভ কমছে না। তারা বলেন, এবার সিলেট জেলা বিএনপি’র কমিটি নিয়ে নানা ঘটনা ঘটেছে। উত্তাপ ও উত্তেজনার কমতি ছিল না। সম্মেলন ও কাউন্সিলের তারিখ চূড়ান্ত হলে ফের সেই উত্তেজনা ফিরে আসতে পারে। সিলেট জেলা বিএনপি’র কাউন্সিলে সভাপতি তালিকা ছোটো হয়ে এসেছে। মূল লড়াইয়ে মুখোমুখি সাবেক সভাপতি আবুল কাহের শামীম ও আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী। কাউন্সিলররা জানিয়েছেন- সভাপতি পদ নিয়ে এখন সিলেট জেলা বিএনপি দুই ভাগে বিভক্ত। আবুল কাহের শামীম দলীয় রাজনীতিতে শক্তিশালী।

 

সিলেটের রাজনীতির হিসেবী মানুষ। ফলে তার প্রতি আস্থা রয়েছে কাউন্সিলরদের। তবে সামাজিক নেতা হিসেবে এরই মধ্যে সিলেটের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি ও এম সাইফুর রহমানের ঘনিষ্ঠজন আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী। সাইফুর রহমানের জমানায় সিলেট বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল কাইয়ূম চৌধুরীর। সাইফুর রহমানের মৃত্যুর পর তিনি সিলেটের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন। এবারের কাউন্সিলে কাইয়ূম চৌধুরীও শক্তিশালী প্রার্থী। নিজেকে প্রমাণ করতে কাইয়ূম চৌধুরী এবারের কাউন্সিলকে টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে বেঁচে নিয়েছেন। জেলার সাধারণ সম্পাদক পদে এবার মূল লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী। আলী আহমদ সাবেক সাধারণ সম্পাদক হওয়ার কারণে পূর্বে থেকেই তিনি শক্তিশালী অবস্থানে। এ ছাড়া সম্মেলনের মাধ্যমে তার ভোটব্যাংক বেড়েছে। লন্ডনে ছিলেন। সম্মেলনের আগে এসে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন। তার পক্ষে বিএনপি’র একাংশের নেতারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নেমেছেন। অন্যদিকে এমরান আহমদ চৌধুরী এবার শক্ত প্রতিপক্ষ হিসেবে ইতিমধ্যে জানান দিয়েছেন। সাবেক এ ছাত্রনেতা স্বচ্ছধারার রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত। কয়েকটি উপজেলার নেতারাও তার পক্ষে মাঠে ঐক্যবদ্ধ। ফলে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী এমরান আহমদ চৌধুরী। এক দফা সম্মেলন ও কাউন্সিল পেছানো হলেও এমরান মাঠ ছাড়েননি। তিনি প্রচারণায় ব্যস্ত। সাধারণ সম্পাদক পদে সিলেট জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আব্দুল মান্নান নিরব ভোটের আশা করছেন। তিনি সিনিয়র নেতা। তার পক্ষে অনেকেই নিরবে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে শেষ মুহূর্তে এসে মান্নান প্রচারণায় গতি বাড়িয়েছেন। প্রচারণায় রয়েছেন আরেক প্রার্থী সাবেক ছাত্রনেতা আফম কামালও।

 

 

সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সাবেক ছাত্রনেতা লোকমান আহমদ ও শামীম আহমদ তীব্র লড়াই চলছে। লোকমান আহমদ শুরু থেকেই মাঠে সক্রিয়। এবারের কাউন্সিলকে তিনি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন। এ কারণে জেলার প্রতিটি ইউনিটের বেশির ভাগ নেতাকর্মীর কাছাকাছি গেছেন তিনি। এজন্য জয় আশা করছেন লোকমান। তিনি ছাত্রদল থেকে সিলেটের রাজনীতিতে একজন পরিচ্ছন্ন নেতা হিসেবে পরিচিত। আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক প্রার্থী শামীম আহমদও পিছিয়ে নেই। দলের একাংশের নেতারা তার পক্ষে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। এছাড়া দক্ষিণ সুরমা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাউন্সিলরদের কাছে তার গ্রহনযোগ্যতা রয়েছে। আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক প্রার্থী এডভোকেট মুজিবুর রহমানের নিরব ভোট ব্যাংক রয়েছে। তার পক্ষেও দলের একাংশের নেতারা সক্রিয় রয়েছেন। সিলেট জেলা বিএনপির কাউন্সিলে ১৮টি ইউনিটের ১৮১৮ জন কাউন্সিলের গোপন ভোটের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্ধারিত হবে। এর আগে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের কাউন্সিলে ভোটের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব বেরিয়ে এসেছিল। তখন অবশ্য প্রতিটি ইউনিটের ৫ জন করে ভোটার ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email
 
 
স্বাধীন খবর ডটকম/আ আ
 

জনপ্রিয় সংবাদ

 

সর্বোচ্চ পঠিত সংবাদ