ড. ইউনূসের প্রস্তাব: দক্ষিণ কোরিয়ায় সামাজিক ব্যবসা প্রসারে লাভবান হওয়ার সুযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক, স্বাধীন খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ:
সোমবার, নভেম্বর ৪, ২০২৪ ১০:৫৮ অপরাহ্ণ পরিবর্তনের তারিখ:
সোমবার, নভেম্বর ৪, ২০২৪ ১১:০১ অপরাহ্ণ
নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সোমবার দক্ষিণ কোরিয়াকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর এবং বিশেষ করে জাহাজ নির্মাণ শিল্পে আরও বেশি বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর মতে, এই পদক্ষেপ উভয় দেশের জন্যই লাভজনক হবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন
অধ্যাপক ইউনূস ঢাকার তেজগাঁওয়ে তাঁর কার্যালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিকের সঙ্গে বৈঠকে এই আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ইউনূস রাষ্ট্রদূতকে বলেন, ‘আমরা দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে আরও গভীর ও উন্নত সম্পর্কের প্রত্যাশায় আছি।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমরা বিদ্যমান সম্পর্ককে আরও উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই।’
রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক কোরীয় উপদ্বীপের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার সৈন্য মোতায়েন এবং সাম্প্রতিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বিষয়েও চিন্তা ব্যক্ত করেন।
এ ধরনের ঘটনা কোরীয় উপদ্বীপের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা আন্তর্জাতিক সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।
অধ্যাপক ইউনূস এই প্রেক্ষিতে কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার আহ্বান জানান।
বিনিয়োগ, সহযোগিতা ও শান্তি বজায় রাখার প্রচেষ্টা
রাষ্ট্রদূত জানান, বাংলাদেশের ব্যবসায়িক পরিবেশে সাম্প্রতিক ইতিবাচক পরিবর্তনের কারণে অনেক দক্ষিণ কোরীয় কোম্পানি এখন বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী।
তিনি উল্লেখ করেন, বিশেষ করে কোরিয়ার জাহাজ নির্মাণ খাতে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে তাঁদের বিশেষ আগ্রহ রয়েছে।
রাষ্ট্রদূত আরও জানান, অনেক দক্ষিণ কোরীয় কোম্পানি ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে পোশাক কারখানা পরিচালনা করছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ কোরিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা তহবিল (ইডিসিএফ) থেকে সর্বাধিক ঋণ প্রাপ্ত দেশ।
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ কোরিয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদারও বটে।
অধ্যাপক ইউনূসের প্রেস উইং জানায়, ইডিসিএফ থেকে বাংলাদেশের জন্য ৩ বিলিয়ন ডলারের ঋণ অনুমোদিত হয়েছে, যা ৩৪টি প্রকল্পে ব্যবহৃত হবে।
ইডিসিএফ-এর অধীনে আরও ১৪টি প্রকল্প চলমান রয়েছে, যা কোরিয়ার বিনিয়োগের পরিমাণ ৭ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করবে।
‘আমরা বিদ্যমান প্রকল্পগুলো সফলভাবে চালিয়ে যেতে পারব,’ মন্তব্য করেন দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত।
রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক বলেন, ‘মাত্র ৫০ বছর আগে, কোরিয়াও উন্নয়ন সহায়তা গ্রহীতা দেশ ছিল।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘অতএব, আমরা বাংলাদেশে চলমান চ্যালেঞ্জগুলোর ব্যাপারে ভালোভাবে অবগত।’
রাষ্ট্রদূত আরও যোগ করেন, ‘আমরা আমাদের উন্নয়নের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে একটি কার্যকর অংশীদার হিসেবে কাজ করতে পারি।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, এই অভিজ্ঞতা কোরিয়া এবং বাংলাদেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
তিনি বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে দ্রুত ইপিএ চুক্তি সম্পাদনের গুরুত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অধ্যাপক ইউনূস কোরিয়াকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অব্যাহত সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানান।
এ সময় অনুষ্ঠানে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
সঙ্গে ছিলেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী।